আমপানে উপড়ে পড়া গাছের গুঁড়িতে গড়ে উঠছে শিল্প। ছবি: দীপঙ্কর দে
ঘূর্ণিঝড় আমপানে উত্তরপাড়া শহরে উপড়ে যাওয়া বেস কিছু পরিণত বা প্রাচীন গাছকে পুনঃস্থাপিত করা হয়েছে পুরসভার উদ্যোগে। কিন্তু যে সব গাছকে কোনও ভাবেই রক্ষা যায়নি, তার গুঁড়ি দিয়ে শিল্পকর্ম সংরক্ষণে উদ্যোগী হয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় শিল্পী বিকাশচন্দ্র হালদার ওই সব গুঁড়িতে গড়ে তুলেছেন অনন্য সব শিল্পকর্ম। কোনওটিতে ‘নারী ও প্রকৃতি’, কোনওটিতে ‘গৌতম বুদ্ধ’ বা ‘মা-সন্তান’।
পুরসভার এই ভাবনার তারিফ করেছেন অনেকেই। শিল্পী বিকাশবাবু বলেন, ‘‘পুর-কর্তৃপক্ষের এই ভাবনা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। তাই ওঁরা যোগাযোগ করতেই রাজি হয়ে যাই। ভবিষ্যতেও এমন উদ্যোগে শামিল হব।’’
নির্দিষ্ট মাপের চারটে গুঁড়ি দিয়ে কাজ শুরু বিকাশবাবু। তিনি বলেন, ‘‘দু’টো গুঁড়ি সাড়ে পাঁচ ফুট লম্বা করে এবং অপর দু’টি আড়াই ফুট করে কাটতে বলি।’’ সেগুলিতে ছেনি-হাতুড়ি ঠুকে তিন মাসের পরিশ্রমে তাঁর হাতের জাদুতে ফুটে উঠেছে নানা অবয়ব। পুর-প্রশাসক দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘উপড়ে যাওয়া বেশ কিছু গাছ প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে আমরা ফের বসিয়েছি। যেগুলো পারা যায়নি, সেই সব গাছের গুঁড়ি চিরস্থায়ী ভাবে রাখতে চাইছিলাম। সেই কারণেই প্রতীক হিসেবে সংরক্ষণের জন্য এই ভাবনা।’’
আমপানে এই জেলার অন্যত্র হাজার হাজার গাছ উপড়ে যায়। সেই সব গাছ কোথায় গেল, তার কোনও হিসেব বন দফতর বা জেলা প্রশাসনের কাছে নেই। উত্তরপাড়ায় এই উদ্যোগের কথা শুনে অনেকেই বলছেন, ওই সমস্ত গাছ বেহাত হয়ে যাওয়ায় সরকারের প্রচুর রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। নিয়মমাফিক যখন ওই সব গাছ বিক্রি করা গেল না, তখন বিভিন্ন পুরসভা বা পঞ্চায়েতকে দিয়ে উত্তরপাড়ার মতো ভাবনাচিন্তা করা হলেও তার সদ্ব্যবহার হত। তা বিভিন্ন সরকারি দফতর বা রাস্তাঘাটে বা পর্যটনস্থলে শোভা বাড়ানোর কাজে লাগত।
উত্তরপাড়া পুর-কর্তৃপক্ষ ঠিক করেছেন, ওই সব শিল্পকর্ম পুরভবনে সংরক্ষণ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy