Advertisement
E-Paper

‘ক্ষতিগ্রস্ত’ বিজেপি নেতা, আত্মীয়েরাও!

সমিতি অবশ্য ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় বা চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করে জেলাশাসককে জমা দিয়েছে।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২০ ০৬:৩১
ছবি এএফপি।

ছবি এএফপি।

আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা নিয়ে বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির।

প্রথম তালিকায় ক্ষতিপূরণ-প্রাপকদের মধ্যে ‘ক্ষতিগ্রস্ত’ নন, সমিতির এমন বহু তৃণমূল সদস্য এবং একাধিক কর্মাধ্যক্ষের নাম থাকার অভিযোগ আগেই উঠেছিল। এ বার ওই তালিকায় ‘ক্ষতিগ্রস্ত’ নন, সমিতির বিরোধী দলনেতা-সহ বিজেপির কয়েকজন সদস্য এবং তাঁদের আত্মীয়দের নামও আছে বলে অভিযোগ তুলল কংগ্রেস।

সমিতি অবশ্য ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় বা চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করে জেলাশাসককে জমা দিয়েছে। কিন্তু তাতেও ‘জল’ রয়েছে বলে কংগ্রেসের অভিযোগ। দ্বিতীয় তালিকা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে শাসকদলের অন্দরেও।

তৃণমূল শাসিত ঝোড়হাট পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রূপম সাধুখাঁরই ক্ষোভ, ‘‘প্রথম তালিকা যেমন ঘরে বসে তৈরি হয়েছিল, দ্বিতীয় তালিকাও সে ভাবেই করা হয়েছে মনে হচ্ছে। প্রথম তালিকায় যাঁদের নামে আপত্তি উঠেছে, তেমন নাম হয়তো বাদ পড়েছে। কিন্তু যে সব নামের ক্ষেত্রে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি, সেই সব নাম তো থেকেই যাবে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা বঞ্চিতই থাকবেন। দ্বিতীয় বারেও আমাদের সঙ্গে নিয়ে গ্রামে ঘুরে তদন্ত করে দেখা হল না কেন?’’ কংগ্রেস মনে করছে, যা চলছে তা মিলিত ভাবে তৃণমূল-বিজেপির সরকারি টাকা আত্মসাতের অপচেষ্টা।

কংগ্রেস নেতা অলোক কোলে বলেন, ‘‘তৃণমূল এবং বিজেপি— দুই দলের যোগসাজশেই যে ক্ষতিপূরণের টাকার ভাগ-বাটোয়ারা চলছে তা তালিকা দেখলেই বোঝা যাবে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তেরা বেশিরভাগই বঞ্চিত হলেন। আমরা এর তদন্ত চেয়ে ব্লক অফিসে স্মারকলিপি দিয়েছি।’’

আমপানে ‘ক্ষতিপূরণ-প্রাপক’দের প্রথম তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই বিতর্ক দেখা দিয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশই পঞ্চায়েত সমিতির দলীয় সদস্য, কর্মাধ্যক্ষ থেকে শুরু করে যাঁদের বাড়ির কোনও ক্ষতি হয়নি, এমন বহু নাম তালিকায় থাকার অভিযোগ তোলেন। জেলা তৃণমূল (সদর) সভাপতি অরূপ রায় জেলাশাসককে তদন্তের নির্দেশ দেন। এ বার বিজেপি নেতাদের নামও প্রকাশ্যে আসায় বিতর্ক নতুন রূপ নিয়েছে।

এই পঞ্চায়েত সমিতিতে বিজেপির সদস্যসংখ্যা ১০। বিরোধী দলনেতা মহেন্দ্র চৌধুরী বিজেপি শাসিত মানিকপুর পঞ্চায়েত থেকে নির্বাচিত। বাড়ির কোনও ক্ষতি না-হলেও মহেন্দ্রর নাম এবং তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর কী করে ‘ক্ষতিপূরণ প্রাপক’দের তালিকায় এল?

পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জয়ন্ত ঘোষের সাফাই, ‘‘কথা মতো ক্ষতিপূরণ-প্রাপকদের নামের তালিকা দেয় পঞ্চায়েতগুলি। পরে ক্ষতিগ্রস্তেরা নিজেরাও অনেকে ব্লক অফিসে এসে দরখাস্ত জমা দেন। সব কিছু মিলিয়েই তালিকা তৈরি হয়।’’

মানিকপুর পঞ্চায়েত অবশ্য দাবি করেছে, তারা মহেন্দ্রর নাম পাঠায়নি। মহেন্দ্র বলেন, ‘‘আমিও কোথাও কোনও আবেদন করিনি। জানতামই না যে আমার নাম তালিকায় আছে। পরে কানাঘুষোয় জানতে পারি। আমি ব্লক অফিসে গিয়ে বলি ঘরে বসে তালিকা করা হয়েছে। এটা ঠিক নয়। সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের নামই তালিকায় রাখা উচিত।’’

‘ত্রুটিপূর্ণ’ প্রথম তালিকাকে এখন আর গুরুত্ব দিতে চাইছে না পঞ্চায়েত সমিতি। সমিতির সভাপতির দাবি, ‘‘যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে তাতে বহু অভিযোগ উঠেছে। ঝাড়াই-বাছাই করে ফের নতুন তালিকা তৈরি করে জেলাশাসকের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। সেটাই চূড়ান্ত তালিকা।’’

Cyclone Amphan Cyclone BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy