Advertisement
E-Paper

প্রেমে ফাঁসিয়ে ব্যবসায়ীকে খুন, গ্রেফতার যুবতী-সহ ৪

প্রেমিকাকে দেওয়া ট্রাঙ্কের ভিতরেই মিলল এক ব্যবসায়ীর দেহ। পুলিশের দাবি, ওই ব্যবসায়ীকে বাড়িতে ডেকে পাঠিয়েছিল তার প্রেমিকা। তারপর প্রেমিকা ও তার স্বামী মিলে ব্যবসায়ীকে খুন করে মৃতদেহ ট্রাঙ্কে ঢুকিয়ে তারই বাড়িতে রেখে এসেছিল। খুনের পরে একের পর এক ঠিকানা বদলও করেছিল ওই দম্পতি। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৪ ০১:৫৮

প্রেমিকাকে দেওয়া ট্রাঙ্কের ভিতরেই মিলল এক ব্যবসায়ীর দেহ। পুলিশের দাবি, ওই ব্যবসায়ীকে বাড়িতে ডেকে পাঠিয়েছিল তার প্রেমিকা। তারপর প্রেমিকা ও তার স্বামী মিলে ব্যবসায়ীকে খুন করে মৃতদেহ ট্রাঙ্কে ঢুকিয়ে তারই বাড়িতে রেখে এসেছিল। খুনের পরে একের পর এক ঠিকানা বদলও করেছিল ওই দম্পতি। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। পুরনো ভাড়া বাড়িতে রেখে যাওয়া মালপত্র নিতে এসে শুক্রবার পুলিশের হাতে ধরা পড়ল ওই দম্পতি। গ্রেফতার করা হয়েছে ওই দম্পতির ছেলে-সহ আরও দু’জনকে। ধৃতেরা জেরায় খুনের কথা পুলিশের কাছে কবুল করেছে।

হাবরার জয়গাছির বাসিন্দা মধুসূদন পাল (৪৬) নামে ওই চাল ব্যবসায়ীর পচাগলা দেহ উদ্ধার হয় ১৩ জুলাই। তাঁর তালাবন্ধ বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। পুলিশ এসে তালা ভেঙে ঘরে একটি ট্রাঙ্ক পায়। তার মধ্যেই মেলে মধুসূদনবাবুর দেহ। তদন্তে জানা যায় ১১ জুলাই গভীর রাতে একটি গাড়ি থেকে ট্রাঙ্ক নামাতে দেখা গিয়েছে এক মহিলা সহ কয়েক জনকে।

এরপরই তদন্তে প্রেমিকার চক্রান্তের কথা জানতে পারে পুলিশ। উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় শনিবার জানান, কল্পনা গুপ্ত নামে ওই মহিলা ও তাঁর স্বামী বিট্টু গুপ্ত ছাড়াও তাঁদের ছেলে দীপ এবং সত্যম দাস নামে বিট্টুর এক বন্ধুকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে ওই দম্পতির ৭ দিন পুলিশ হেফাজত হয়েছে। বাকি দু’জনকে আজ, রবিবার বারাসত আদালতে হাজির করা হবে।

পুলিশ সূত্রের খবর, স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক না থাকায় হাবরার বাড়িতে একাই থাকতেন মধুসূদনবাবু। চাল আনা-নেওয়ার সূত্রে তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় গাড়ি চালক বিট্টুর। বিরাটিতে ৩ কাঠা জমি রয়েছে ওই চাল ব্যবসায়ীর। পুলিশ তদন্তে জেনেছে, মধুসূদনবাবুর সেই জমি ও সম্পত্তি হাতানোর ছক কষেন বিট্টু ও তাঁর বছর ছত্রিশের স্ত্রী কল্পনা। সেই মতো মধুসূদনবাবুর সঙ্গে কল্পনা ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলেন। পুলিশের দাবি, কিছু দিন আগে মধুসূদনবাবুর সঙ্গে আর এক মহিলার সম্পর্কের কথা জানতে পারেন কল্পনা। সম্পত্তি হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় তখনই মধুসূদনবাবুকে খুনের ছক কষে কল্পনা ও বিট্টু। দিন পনেরো আগে মধুসূদনবাবুকে নিয়ে কল্পনা তারাপীঠে যান। তাঁরা একটি লজে ওঠেন। সেই লজেই অন্যে ঘরে উঠেছিলেন বিট্টু। কিন্তু সেখানে খুনের সুযোগ মেলেনি।

পুলিশের দাবি জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, খুনের ঘটনাটি ঘটে গত ৯ জুলাই। ওই দিন মধুসূদনবাবুকে বারাসতের নেতাজি পল্লির বাড়িতে ডেকে পাঠান কল্পনা। ঘরেই খাটের নীচে ঘাপটি মেরেছিলেন বিট্টু। মধুসূদনবাবু ঢুকতেই বিট্টু তাঁর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন। গলার নলি কেটে ওই ব্যবসায়ীকে খুন করা হয়। ওই দম্পতি মধুসূদনবাবুর মুখ ও শরীরের অন্য অংশ ক্ষতবিক্ষত করে। দিন কয়েক আগে মধুসূদনবাবুকে বুঝিয়েসুঝিয়ে একটি বড় ট্রাঙ্ক জোগাড় করেছিলেন কল্পনা। তাতেই ঢোকানো হয় দেহ। তারপর ঘরের রক্ত মুছে দেন দম্পতি।

পুলিশ সূত্রের খবর জেরায় ওই দম্পতি জানিয়েছেন, খুনের পরে তাঁরা ছেলে দীপকে মানিকতলা থেকে ডেকে আনেন। বিট্টু রিষড়া থেকে ডাকেন তাঁর বন্ধু সত্যমকে। ১১ জুলাই চার জন ট্রাঙ্কবন্দি দেহটি মধুসূদনবাবুর হাবরার বাড়িতে রেখে আসে। মধুসূদনবাবুর পকেট চাবি থাকায় দরজা খুলতে অসুবিধা হয়নি তাদের।

এরপর থেকে ওই দম্পতি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। নেতাজিপল্লির ভাড়া বাড়ি ছেড়ে বারাসতের অশ্বিনীপল্লিতে ঘর ভাড়া নেন তাঁরা। আগের বাড়িতে পুলিশ হানা দিয়েছে জেনে অশ্বিনীপল্লির বাড়িও ছাড়েন। কিন্তু সেখানে কিছু মালপত্র থেকে যায়। পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “যারা সম্পত্তির জন্য এত বড় ঘটনা ঘটাতে পারে, তারা যে মালপত্রের আশা ছাড়বে না আমরা বুঝেছিলাম। তাই ওই ঘরে লুকিয়ে ছিল পুলিশ।”

love case arrest lover southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy