Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ঐতিহ্যের শহর চায় উন্নত পরিষেবা

চাই পুরসভা

চণ্ডীতল‌া শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৫ ০১:১৩
Share: Save:

চাই পুরসভা

গরলগাছা, জনাই, বাকসা, বেগমপুর, চণ্ডীতলা ও বরিজহাটী এলাকার ঐতিহ্য বহু প্রাচীন। গরলগাছা গ্রামের সিদ্ধেশ্বর মুখোপাধ্যায় ছিলেন বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের ছাত্র। বেগমপুরের তাঁতের শাড়ি ও জনাইয়ের মনোহরা বিখ্যাত। চণ্ডীতলার হাট এখনও জনপ্রিয়। অন্যান্য এলাকা থেকেও ক্রেতারা এখানে আসেন। কিন্তু হাটের পরিকাঠামো ভাল নয়। চণ্ডীতলা যদি পুরসভার মর্যাদা পায়, তা হলে স্থানীয় বাসিন্দারা উন্নত পরিষেবা পাবেন। তাই আমরা চাই, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে যত দ্রুত সম্ভব চণ্ডীতলা ১ ও ২ নম্বর ব্লককে মিলিয়ে দিয়ে একটি পুরসভা তৈরি করা হোক।

সুদেব দাস, গরলগাছা

তিমিরেই পরিষেবা

পাশেই ডানকুনি জনপদ পুরসভা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বারবার দাবি ওঠা সত্ত্বেও চণ্ডীতলা এখনও ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থাতেই আটকে রয়েছে। ফলে ন্যূনতম নাগরিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি আমরা। এই দাবি আদায়ে দল নির্বিশেষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আরও সচেতন হতে হবে। না হলে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও ক্রমশ পিছিয়েই পড়বে চণ্ডীতলাবাসী।

সমরনাথ ঘোষ, জনাই

আজও গঞ্জ এলাকায় বাস

চণ্ডীমন্দির। — নিজস্ব চিত্র।

বাকসা, গরলগাছা এবং জনাই—এই তিনটি বর্ধিষ্ণু জনপদের মিলিত রূপ হল আজকের চণ্ডীতলা। ব্রিটিশ আমলেও এই তিন গ্রামের খ্যাতি ছিল। গরলগাছা গ্রামের বাসিন্দা মন্মথ মুখোপাধ্যায়ের নামে কলকাতায় রাস্তা রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে অনেক গুণী ব্যক্তি এই জনপদে জন্ম নিয়েছেন। কথিত রয়েছে, শ্রীমন্ত সওদাগর এখানে বাণিজ্য করতে এসে চণ্ডীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই থেকেই এই এলাকার নাম হয় চণ্ডীতলা। জনশ্রুতি অনুযায়ী, রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব গরলগাছা গ্রামের জমিদার বাড়িতে এসেছিলেন। জনাই স্কুলের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বিদ্যাসাগর। তবে দুঃখের বিষয়, এত কিছুর পরেও চণ্ডীতলা আজও গঞ্জ এলাকা হয়েই থেকে গেল। এই এলাকায় ‘নেই’ তালিকা বেশ দীর্ঘ। অনেক জায়গায় নিকাশি নালা নেই, পথবাতি নেই, আধুনিক পরিকাঠামোর হাসপাতাল নেই। কয়েকটি জায়গায় রাস্তার অবস্থাও খারাপ। চণ্ডীতলাবাসীর দাবি হল, বহু মহাপুরুষের স্মৃতিধন্য এই জনপদে উন্নত পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।

প্রবীণ ঘোষ, চণ্ডীতলা

স্থায়ী বাসস্ট্যান্ডের অভাব

স্মৃতির রেলপথ। এখানেই এক সময় ছিল পুরোদস্তুর মার্টিন রেল স্টেশন। ছবি: দীপঙ্কর দে।

চণ্ডীতলা ১ ব্লকে স্থায়ী বাসস্ট্যান্ডের দাবি দীর্ঘদিনের। তবে তা এখনও পূরণ হয়নি। ইতিমধ্যে মশাট থেকে হাওড়াগামী এম-৯ রুটের বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সরাসরি সল্টলেকগামী কোনও বাস নেই। এক সময় এই এলাকায় মার্টিন কোম্পানীর রেলগাড়ি চলত। পরে বন্ধ হয়ে যায়। তার কিছু চিহ্ন এখনও রয়ে গিয়েছে। তার পর থেকে রেল যোগাযোগ গড়ে ওঠেনি। চণ্ডীতলা ও সংলগ্ন এলাকার মানুষ সংস্কৃতি সচেতন। কিন্তু এলাকায় কোনও কমিউনিটি হল না থাকায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে সমস্যা হয়।

জহরলাল দাস, মশাট

বন্ধ হোক গাছ নিধন

চণ্ডীতলা এলাকায় গত কয়েক বছরে শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। কয়েকটি স্কুলের পরিকাঠামো ভালো হয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে থেকে গিয়েছে সমস্যা। কয়েকটি বড় জলাশয় বোজানোর অভিযোগ উঠেছে। কাটা হচ্ছে গাছ। নষ্ট হচ্ছে বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য। এ ছাড়াও যানজট এই এলাকার মানুষের কাছে অন্যতম মাথা ব্যাথার কারণ। বড় রাস্তা থেকে গ্রামের সংযোগকারী অনেক রাস্তার অবস্থা বেহাল। অনিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ব্যাহত হয় চাষের কাজ। সেচের খালগুলিতে সঠিক সময়ে ডিভিসির জল না আসার কারণেও চাষিরা সমস্যায় পড়েন। এই অনিয়মগুলি মেটাতে প্রশাসনকে আরও সক্রিয় হতে হবে।

প্রশান্তকুমার কোলে, মশাট

হাসপাতাল উন্নত নয়

মফস্্সলের তকমা ছেড়ে চণ্ডীতলা এখন প্রায় শহর। কিন্তু তার পরিষেবা রয়েছে সেই তিমিরেই। এই এলাকার প্রধান কয়েকটি সমস্যা হল: ১) রাস্তার পাশে ডাঁই করে জমে থাকে আবর্জনা। সেগুলি নিয়মিত সাফাই হয় না। প্লাস্টিক ও অন্যান্য আর্বজনা দিয়ে ভরাট হচ্ছে ছোট-বড় জলাশয়। ২) নিকাশি নালাগুলির অবস্থা বেহাল। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় জল জমে যায়। ৩) বেশ কিছু বড় রাস্তার ধারে পথবাতি খারাপ হয়ে পড়ে আছে। অনেক রাস্তায় পথ বাতিই নেই। ফলে রাতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। ৪) চণ্ডীতলা হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নত নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগীকে কলকাতায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় এই সমস্যাগুলির স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। তাই দরকার পুরসভা গঠন।

ঋত্বিকা দাস, গরলগাছা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

chanditala chanditala hoogly gorolgachha janai
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE