Advertisement
E-Paper

ভয় আরও জাঁকিয়ে বসল সেই পাড়ায়

রবিবার রাতে শেওড়াফুলির প্রৌঢ়ের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবরের পর থেকেই আতঙ্কে দরজায় খিল এঁটেছিল তাঁর পাড়া। এ বার ওই পরিবারের আরও দু’জন আক্রান্ত হওয়ায় ভয় আরও জাঁকিয়ে বসল।

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২০ ০৬:০৪
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

সকলের বাড়ির দরজা বন্ধ।

জানলার পাল্লাটুকুও কেউ খুলছেন না। লকডাউন ঘোষণার পরেও যে এখানে ইতিউতি আড্ডা জমছিল, কে বলবে!

রবিবার রাতে শেওড়াফুলির প্রৌঢ়ের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবরের পর থেকেই আতঙ্কে দরজায় খিল এঁটেছিল তাঁর পাড়া। এ বার ওই পরিবারের আরও দু’জন আক্রান্ত হওয়ায় ভয় আরও জাঁকিয়ে বসল। শুধু যে পাড়ার লোকেরা বাইরে বেরোচ্ছে‌ন না, এমন নয়। বাইরের লোকজনও ঢুকতে সাহস পাচ্ছেন না। এলাকাবাসীর একাংশ বলছেন, করোনা-ত্রাসে তাঁরা এখন কার্যত ‘একঘরে’ হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। সকলেই স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি।

ওই পরিবারের পড়শি নিলয় দে লকডাউনের পরেও নানা প্রয়োজনে বাইরে বেরোচ্ছিলেন। এখন আর তাঁকে দেখা যাচ্ছে না। তাঁর কথায়, ‘‘রবিবার রাত থেকেই আমরা সবাই ঘরে সিঁটিয়ে রয়েছি। দরজা-জা‌নলা খুলতেও ভয় করছে। সংবাদপত্রের হকার, গোয়ালা সকলেই জানিয়ে দিয়েছেন আপাতত এমুখো হবেন না। ভ্যানে করে আনাজ নিয়ে বিক্রেতাও পাড়ায় ঘেঁষছেন না। আরও দু’জন আক্রান্ত হওয়ায় ভয়টা অনেকে বেড়ে গিয়েছে।’’

নিলয়ের মতো অবস্থা প্রায় সকলেরই। অনেকেই ঠিক করেছেন, নেহাত প্রয়োজন না পড়লে দরজার বাইরে পা রাখবেন না। ঘরে যা আছে, তা দিয়েই আপাতত কয়েকটা দি‌ন চা‌লিয়ে নেবেন।

আক্রান্ত প্রৌঢ়ের ভাই কলকাতায় একটি বেসরকারি সংস্থায় সেলস্‌ বিভাগে কাজ করেন। ছেলে কলকাতার একটি কলেজে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রৌঢ়ের ছেলেকে নিয়ে তাঁরা বিশেষ ভাবিত নন। তিনি পাড়ায় তেমন মেশেন না। গত কয়েক দিনে তাঁকে বাড়ির বাইরে বিশেষ দেখাও যায়নি। তবে, প্রৌঢ়ের ভাই অনেকের সঙ্গেই মেলামেশা করেছেন। আড্ডা দিয়েছেন।

নিলয়ের ভাই নীলাদ্রি বলেন, ‘‘ওই ভদ্রলোককে (প্রৌঢ়ের ভাই) গত কয়েক দিন আড্ডা দিতে দেখেছি। করোনার যা প্রকৃতি শুনছি, তাতে আর কারও শরীরে না ঢুকলেই বাঁচি। উনি যাঁদের সঙ্গে মিশেছেন, তাঁদের প্রত্যেককে চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’ আর এক যুবক বলেন, ‘‘কৌতূহলের বশে আজ অনেককেই ফোনে জিজ্ঞাসা করেছি জ্বর, সর্দিকাশি হয়েছে কিনা!তাঁদের মধ্যে অবশ্য তেমন লক্ষণ নেই বলে শুনেছি। গিন্নিকে বলেছি, বাড়িতে যা আছে, তা দিয়েই ক’টা দিন চালিয়ে নিতে। ছেলের দুধ আনতে না হলে বেরোবই না।’’

পাড়ায় তিনটি মুদিখানা আছে। সোমবার থেকে তিনটিই বন্ধ। স্থানীয় এক প্রৌঢ়ের কথায়, ‘‘এখানে আদর্শ লকডাউন চলছে।’’

আপাতত মানুষের উৎকণ্ঠা কাটানোই তাঁদের প্রধান লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। পুরপ্রধান অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘আমরা মাইকে প্রচার করছি। মানুষের কাছে আবেদন করা হচ্ছে, তাঁরা যাতে আতঙ্কিত না হন। লকডাউনের সমস্ত বিধিনিষেধ যেন মেনে চলেন।’’

সোম এবং মঙ্গলবার দমকলের তরফে করোনা-আক্রান্তদের বাড়ি এবং আশপাশে জীবাণুনাশক ছড়ানো হয়। স্থানীয় কাউন্সিলর প্রবীর পাল জানান, যাঁরা আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসেছিলেন, প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী তাঁরা যাতে চলেন, সেই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

Coronavirus Health
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy