Advertisement
E-Paper

পুলিশ-জনতা গোলমাল, বিদ্যুতের কাজ অসমাপ্ত

মধ্য ঝোড়হাটের বাসিন্দারা আগেও কয়েকবার বিদ্যুতের দাবিতে সিইএসসি-র কাছে দরবার করেছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২০ ০৫:০৭
জনতার হাতে ঘেরাও পুলিশকর্মী। নিজস্ব চিত্র

জনতার হাতে ঘেরাও পুলিশকর্মী। নিজস্ব চিত্র

পাঁচ দিন ধরে বিদ্যুৎ ও জলসঙ্কটে ভুগছিলেন আন্দুলের মধ্য ঝোড়হাটের বাসিন্দারা। বিক্ষোভ-অবরোধের জেরে সোমবার সেই কাজ শুরু হলেও শেষ হল না। পুলিশের সঙ্গে এলাকাবাসীর গোলমালে কাজ অসমাপ্ত রেখে ফিরে যান সিইএসসি-র কর্মীরা।

মধ্য ঝোড়হাটের বাসিন্দারা আগেও কয়েকবার বিদ্যুতের দাবিতে সিইএসসি-র কাছে দরবার করেছিলেন। এ দিন বিকেলে ওই এলাকায় সিইএসসি-র দুই কর্মী এলে তাঁদের আটকে বিক্ষোভ শুরু হয়। পুলিশ ও র্যাফ এসে ওই দুই কর্মীকে উদ্ধার করতে গেলে গোলমাল বাধে। বিক্ষোভকারীদের সরাতে পুলিশ লাঠি চালায় এবং মহিলাদেরও রেয়াত করেনি বলে অভিযোগ। ঘটনার প্রতিবাদে মহিলারা পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। দু’তিন জন পুলিশকর্মীকে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ।

সন্ধে নাগাদ সিইএসসি-র লোকজন এসে বিদ্যুতের লাইন মেরামতি শুরু করেন। আলো জ্বলে কিছু বাড়িতে। কিন্তু এরপরে পুলিশ ও র্যাফ গিয়ে আটকে পড়া পুলিশকর্মীদের উদ্ধার করতে যায়। ফের বিভিন্ন বাড়িতে ঢুকে টর্চ জ্বালিয়ে পুলিশ লাঠি চালায় এবং কয়েকজনকে থানায় তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। এই গোলমালেই সিইএসসি কাজ বন্ধ করে দেয়।

লাঠি চালানোর কথা স্বীকার করে সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই এলাকায় কয়েকজন সিইএসসির কর্মী এবং পুলিশকে আটকে রাখা হয়েছিল। তাঁদের উদ্ধারে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে এলাকাবাসী ঢিল ছোড়েন। পরে পুলিশ বাহিনী নিয়ে গিয়ে ওঁদের উদ্ধার করে। পুলিশের উপরে হামলার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ এলাকাবাসী পুলিশের উপরে ঢিল ছোড়া বা পুলিশকর্মীদের আটকে রাখার অভিযোগ মানেননি। তাঁদের দাবি, পুলিশের তত্ত্বাবধানে সিইএসসি কর্মীদের কাজ শেষ করে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তা তাঁরা করেননি। কাউকে আটকে রাখা হয়নি। এতদিন ধরে যে কাজ হয়নি, বিক্ষোভের মাত্রা বাড়াতেই সে কাজ এ দিন কী ভাবে শুরু হল তা নিয়ে ঝোড়হাটের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। এক যুবক বলেন, ‘‘বাড়িতে বয়স্ক বাবা অসুস্থ। এই গরমে এতদিন ধরে কষ্ট সহ্য করছিলেন। এ দিন পুলিশকে বলেছিলাম, আপনারা দাঁড়িয়ে থেকে সিইএসসি-র কর্মীদের দিয়ে কাজ করিয়ে দিন। এর পরেই পুলিশ লাঠি চালাল। মহিলাদেরও ছাড়ল না। বিদ্যুৎ চাওয়া কি দোষের?’’ আর এক বাসিন্দার প্রশ্ন, ‘‘আমরা তো কারও গায়ে হাত তুলিনি। পুলিশ এসে হঠাৎ লাঠি চালাল কেন?’’ এলাকার বিদ্বজ্জনরা বলেন, ‘‘যেখানে কলকাতায় সেনা গাছ কেটে মানুষকে সাহায্য করছেন, সেখানে রাজ্য পুলিশ মানুষকে বিপাকে ফেলছে। পুলিশের এই ভূমিকা লজ্জার।’’

ওই এলাকাটি বানুপুর-২ পঞ্চায়েতের আওতায় পড়ে। অনেকেই জানান, তাঁরা ৫০০ টাকা করে খরচ করে প্রতিদিন এক হাজার লিটার জলের ট্যাঙ্ক ভর্তি করে দিনযাপন করেছেন। অথচ, পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে তাঁদের কোনও খোঁজ নেওয়া হয়নি বলে তাঁদের ক্ষোভ। এই ক্ষোভের কথা জানতে পেরে বিজেপি ময়দানে নেমে পড়েছে। এলাকার বিজেপি নেতা ভোলানাথ ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতাদের কারও দেখা মেলেনি। এলাকার এত মানুষ পুলিশের লাঠি খেল, পঞ্চায়েত প্রধান কোথায় ছিলেন? পঞ্চায়েত সদস্যেরা কী করলেন?’’ প্রধান রীতা দাস অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি বিধ্বস্ত সব এলাকাই পরিদর্শন করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘এখানে বিশাল বিশাল গাছ পড়ে বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে। তার ছিঁড়ে গিয়েছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকেই কাজ চলছে। তবে সব জায়গায় এক সঙ্গে কাজ করা যাচ্ছে না। মানুষ একটু উত্তেজিত হয়ে পড়েছেন। সিইএসসি-কে বলেছি, যত দ্রুত সম্ভব ওই এলাকায় কাজ করে দিতে।’’

Coronavirus Lockdown Cyclone Amphan Cyclone
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy