Advertisement
০২ মে ২০২৪

গাফিলতিতে ‘মৃত্যু’, তুলকালাম নার্সিংহোমে

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে মৃত প্রিয়া ভগত (১৮) রিষড়ার চম্পা রোডের বাসিন্দা।  তাঁর পরিবারের দাবি, ডেঙ্গির লক্ষণ ছিল ওই তরুণীর।

বিক্ষোভ: হাসপাতালে পুলিশ বাহিনী।

বিক্ষোভ: হাসপাতালে পুলিশ বাহিনী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রিষড়া শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৭ ০১:১৯
Share: Save:

চিকিৎসায় গাফিলতিতে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ তুলে রিষড়ার একটি নার্সিংহোমে ভাঙচুর চলল। বৃহস্পতিবার দুপুরের এই ঘটনার পর পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে মৃত প্রিয়া ভগত (১৮) রিষড়ার চম্পা রোডের বাসিন্দা। তাঁর পরিবারের দাবি, ডেঙ্গির লক্ষণ ছিল ওই তরুণীর। তবে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি, হৃদরোগে (কার্ডিও রেসপিরেটরি ফেলিওর) আক্রান্ত হয়ে ওই ঘটনা। পুলিশ বা পুর-কর্তৃপক্ষের কাছে চিকিৎসকরা জানিয়েছে, ডায়ারিয়ার উপসর্গ নিয়ে মেয়েটিকে ভর্তি করানো হয়েছিল‌। পরে ওই মেয়েটির জ্বর আসে।

মৃতার পরিবার সূত্রে খবর, দিন কয়েক ধরে জ্বরে ভুগছিলেন প্রিয়া। প্রথমে তাঁকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। ডেঙ্গির উপসর্গ দেখে চিকিৎসক তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। তাঁর বমি হচ্ছিল। সেই মতো বুধবার সকালে রিষড়ার বাঙ্গুর পার্ক এলাকায় পিটি লাহা স্ট্রিটের ওই নার্সিংহোমে তাঁকে আনা হয়।

প্রিয়ার মৃতদেহ দেখে কান্না পরিজনের। নিজস্ব চিত্র

প্রিয়ার আত্মীয় গণেশ সাউয়ের অভিযোগ, নার্সিংহোমের তরফে প্রথমে বলা হয়েছিল, ‘বড় ডাক্তার’ নেই। ‘বড় ডাক্তার’ দেখাতে হলে দ্বিগুণ টাকা লাগবে। উপযুক্ত চিকিৎসার কথা ভেবে তাঁরা তাতেই রাজি হন। কিন্তু তাতেও চিকিৎসা ঠিকমতো হয়নি।

অভিযোগ, ভর্তির পরেই প্রিয়ার রক্ত পরীক্ষা করানো হয়। কিন্তু বুধবার রাতে রিপোর্ট দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। বৃহস্পতিবার সকালে নার্সিংহোমের তরফে বলা হয়, মেয়েটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে যেন কলকাতার কোনও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বাড়ির লোক দ্রুত তাকে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু নার্সিংহোম থেকে বের করার সময় দেখা যায়, মারা গিয়েছেন প্রিয়া। পরিজনদের অভিযোগ, আগেই প্রিয়া মারা গিয়েছেন। চিকিৎসায় নিজেদের গাফিলতি জেনেবুঝেই অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়।

ওই খবর চাউর হতেই উত্তেজনা ছড়ায়। শুরু হয় বিক্ষোভ। নার্সিংহোমের জানলার কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে রিষড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রথমে বেগ পেতে হয় পুলিশকে। চন্দননগর কমিশনারেটের এসিপি কামনাশিস সেন আরও বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। সংশ্লিষ্ট দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন পুলিশ আধিকারিকেরা। এর পরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। মৃতের পরিবারের তরফ থেকে থানায় লিখিত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি পুলিশ জানায়।

রিষড়ার পুরপ্রধান বিজয়সাগর মিশ্র বলেন, ‘‘মেয়েটির ডায়ারিয়ার উপসর্গ ছিল বলে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ আমাদের জানান। ওর বাড়ির লোকজনও ডেঙ্গির উপসর্গের কথা বলেননি।’’ চেষ্টা করেও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nursing home Death Unrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE