Advertisement
E-Paper

‘দুয়ারে সরকারে’ করোনা পরীক্ষায় মিলছে না সাড়া

বৃহস্পতিবার বাগনানের গোপালপুর প্রাথমিক স্কুলে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির শিবির বসেছিল।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:০৯
বাগনানে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে করোনা পরীক্ষা চলছে।

বাগনানে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে করোনা পরীক্ষা চলছে।

রথ দেখার পাশাপাশি কলা বেচার সুযোগও দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু তাতে সাড়া মিলছে না খুব একটা।

‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে সরকারি প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করাতে আসা মানুষকে করোনা-পরীক্ষা করিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে বাগনান ১ ব্লক প্রশাসন। দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে এক মাত্র বাগনান-১ ব্লক প্রশাসনই করোনা-পরীক্ষা করাতে উদ্যোগী হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। কিন্তু সরকারি আধিকারিকদের একাংশের আক্ষেপ, এই উদ্যোগে মানুষের তেমন সাড়া মিলছে না।

বৃহস্পতিবার বাগনানের গোপালপুর প্রাথমিক স্কুলে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির শিবির বসেছিল। সেখানে গিয়ে দেখা গেল, স্বাস্থ্যসাথী-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা নিতে নাম লেখানোর জন্য বিভিন্ন কাউন্টারে পড়েছে লম্বা লাইন। মাইকে ভেসে আসছে ঘোষণা, ‘যাঁরা দুয়ারে কর্মসূচিতে এসেছেন তাঁরা করোনা-পরীক্ষা করিয়ে নিন।’

স্কুল ভবনের এক দিকে খোলা জায়গায় পরীক্ষার সরঞ্জাম সাজিয়ে বসেছিলেন জনাচারেক স্বাস্থ্যকর্মী। তাঁদের পরণে ছিল পিপিই কিট। তবে শিবিরে হাজির লোকজনের মধ্যে স্বাস্থ্যসাথী, খাদ্যসাথী, কৃষকবন্ধুর মতো সরকারি প্রকল্পে নাম লেখানোর জন্য যতটা আগ্রহ ছিল, তার তিলমাত্র দেখা যায়নি করোনা পরীক্ষা করানোর জন্য।

এ দিন শিবির শুরু হয় সকাল ১০টায়। বেলা ১টা নাগাদ দেখা গেল মাত্র ৩২ জন করোনা পরীক্ষা করিয়েছেন। ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা বার বার এসে খোঁজ নিচ্ছিলেন, কতজন করোনা পরীক্ষা করিয়েছেন। কিন্তু পরীক্ষার হার দেখে হতাশ হয়ে তাঁরা নির্দেশ দিলেন, মাইকে প্রচার আরও বাড়াতে হবে। তবে তাতেও খুব একটা কাজ হয়নি।

শিবিরে ছিলেন বাগনান থানার বেশ কয়েকজন পুলিশ আধিকারিক। তাঁরা এসেছিলেন ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে। ছিলেন সিভিক ভলান্টিয়ারও। ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা শিবিরে আসা মানুষজনকে করোনা-পরীক্ষা করানোর আর্জি জানানোর জন্য নির্দেশ দেন পুলিশকে। যদিও পুলিশ তাতে আমল দেয়নি। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘করোনা-পরীক্ষার জন্য কাউকে ধরে আনা আমাদের কাজ নয়। জোর করলে আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা দেখা দিতে পারে।’’

যাঁরা করোনা পরীক্ষা করিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ষাটোর্ধ এক বৃদ্ধা বললেন, ‘‘আমি স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে আবেদন জমা দিতে এসেছিলাম। করোনা-পরীক্ষাও করিয়ে নিলাম। ভালই হয়েছে।’’

শুধু এই শিবিরেই নয়, বাগনান ১ নম্বর ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েতেই প্রথম ও দ্বিতীয় দফার শিবিরে করোনা-পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে ব্লক প্রশাসন। প্রতিটি শিবিরে ১২০ জনের করোনা-পরীক্ষা করানোর লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, শিবিরের বাইরেও বিভিন্ন পঞ্চায়েতে নিয়মিত করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। প্রতিটি পঞ্চায়েতে করোনা-পরীক্ষা করানোর নির্দিষ্ট কোটা আছে। সেই কোটা যাতে পূরণ হয়, তার জন্য শিবিরগুলিতে করোনা-পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

বাগনান ১ ব্লক বাদ দিলে জেলার বাকি ১৩টি ব্লকে দুয়ারে সরকার কর্মসূচির শিবিরে করোনা পরীক্ষা হচ্ছে না। কেন? বিডিও (পাঁচলা) এষা ঘোষ বলেন, ‘‘দুয়ারে সরকার কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগে থেকেই আমাদের ব্ল‌কের প্রতিটি পঞ্চায়েতে নিয়মিত করোনা-পরীক্ষা করানো হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা পঞ্চায়েতের সহায়তায় সরাসরি গ্রামে গিয়ে শিবির করছেন। সেটাও তো এক ধরনের দুয়ারে সরকার কর্মসূচি।’’

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বাগনান ১ ব্লকের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে স্বাস্থ্য বিষয়ক কাউন্টার করার কথা বলা হয়েছে। সেই নির্দেশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে যদি কোথাও করোনা-পরীক্ষা করানো হয়, তাতে ক্ষতি কী?’’

জেলায় এখন দ্রুত করোনা সংক্রমণ কমছে। এখন সংক্রমণের হার কমে দেড় শতাংশের আশেপাশে দাঁড়িয়েছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। সেই প্রসঙ্গ তুলে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘দুয়ারে সরকার কর্মসূচির শিবিরে বহু মানুষ আসছেন। তাঁদের মধ্যে র্যা পিড পরীক্ষা করানো হলে সংক্রমণের আরও নিখুঁত চিত্র পাওয়া যাবে। তাতে উপকারই হবে।’’

Duare sarkar coronavirus Covid-19
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy