লোকাভাবে ভুগছে হাওড়া গ্রামীণের দমকল বিভাগ।
হাওড়া গ্রামীণের ১৪টি ব্লক, ১২টি থানা, একটি পুরসভার জন্য রয়েছে মাত্র দুটি দমকলকেন্দ্র—উলুবেড়িয়া আর আলমপুরে। সেই দুটিতেও আবার যথেষ্ট কর্মী নেই। ফলে বড় আগুন লাগলে হাওড়া ডিভিশন এবং কলকাতার উপরেই ভরসা করতে হয় গ্রামীণ এলাকার মানুষকে। দুটি দমকলকেন্দ্রেই পর্যাপ্ত কর্মী নেই। ফলে আগুন নেভানোর কাজ তো বটেই, ব্যাহত হচ্ছে পরিদর্শনের কাজও।
দমকল কেন্দ্রের নিয়ম অনুযায়ী, একটি গাড়ির জন্য এক শিফটে ৬জন কর্মী লাগে। আর একটি দমকলকেন্দ্রে চলে তিনটি করে শিফট। ফলে সারাদিনে এক একটি গাড়ির জন্য ১৮ জন করে কর্মী লাগে। উলুবেড়িয়ায় যে দুটি গাড়ি চলে তার জন্য প্রয়োজন ৩৬ জন কর্মী। কিন্তু বাস্তবে আছেন মাত্র ২৪ জন। আলমপুরে একটি গাড়ির জন্য রয়েছেন মাত্র ১৭ জন। এছাড়া প্রশাসনিক কাজকর্ম চালানোর জন্য উলুবেড়িয়ায় আধিকারিকের সংখ্যাও কম। যেখানে ৫জন আধিকারিক দরকার সেখানে দু’জন রয়েছেন। দুটি দমকল কেন্দ্রেই ফায়ার সার্ভিস অপারেটর তথা চালকের ঘাটতি রয়েছে। আলমপুরে এই পদে ৬ জনের বদলে রয়েছে মাত্র ৪ জন। উলুবেড়িয়ায় ৯ জনের জায়গায় রয়েছেন ৬ জন।
এই ঘাটতি পূরণ করতে বাকি কর্মীদের অতিরিক্ত সময় কাজ করতে হয়। কিন্তু কর্মীদের অভিযোগ, অতিরিক্ত কাজ করলেও তার জন্য অতিরিক্ত টাকা মেলে না। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক দমকল কর্মীর কথায়, ‘‘যেহেতু এটা জরুরি পরিষেবা তাই অতিরিক্ত কাজেও টাকা মেলে না। আমাদের কিছুটা সমস্যা হয় তো বটেই।’’
২০০৭ সালে তৈরি হয়েছিল উলুবেড়িয়া দমকলকেন্দ্র। আর মূলত শিল্পাঞ্চলের কথা ভেবে আলমপুরের দমকলকেন্দ্রটি গড়া হয় ২০১৩ সালে। কিন্তু মাত্র দুটি দমকলকেন্দ্র দিয়ে শ্যামপুর, উদয়নারায়ণপুর, জগৎবল্লভপুর প্রভৃতি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় আগুন নেভানোর কাজ সামলাতে হয়। অনেক সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই সব ভস্মীভূত হয়ে যায় বলে অভিযোগ জানাচ্ছেন দমকল কর্মীরাই।
কর্মীদের দাবি, আগুন নেভানোর আধুনিক যন্ত্রপাতি দু’টি দমকলকেন্দ্রেই আছে। কিন্তু আলমপুরে ফোমের অভাব আছে। অথচ এটি শিল্পাঞ্চল হওয়ায় কারখানাগুলিতে প্রায়ই আগুন লাগে। তখন আগুন নেভাতে প্রয়োজন হয় ওই ফোমেরই। সেটি মজুত না থাকায় সমস্যাও হয় কাজে।
উলুবেড়িয়া দমকলের অধীনে কয়েকশো কারখানা, বহু নার্সিংহোম, একাধিক হাসপাতাল এবং হিমঘর রয়েছে। অথচ আধিকারিক কম থাকায় পরিদর্শন হয় না বললেই চলে। দমকলের হাওড়া ডিভিশনের এক পদস্থ কর্তা জানান, নিয়মিত পরিদর্শনের ফলে আগুন লাগার সম্ভাবনা অনেকটা কমানো যায়। কিন্তু সেই পরিদর্শনেই ঘাটতি থেকে গিয়েছে। আলমপুরে সেই নজরদারি চলে বলে দাবি দমকল কর্মীদের।
হাওড়া জেলা দমকল সূত্রর খবর, নিয়মিত পরিদর্শনের ফলে ডোমজুড়, সাঁকরাইল প্রভৃতি এলাকায় কারখানায় আগুন লাগার সংখ্যা আগের থেকে অনেক কমেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy