প্রতি দিন সকালবেলার মতো খবর কাগজ বিক্রেতা ফ্ল্যাটের দরজায় দাঁড়িয়ে কলিং বেল বাজিয়েছিলেন। কিন্তু বুধবার আর দরজা খোলেনি। অন্যান্য দিন বেল বাজানো মাত্র দরজা খুলতেন ফ্ল্যাটের মালিক অমল চক্রবর্তী। একা থাকেন। অসুখ-বিসুখ করল না তো? চিন্তাভাবনা করে ওই কাগজ বিক্রেতা আবাসনের অন্যান্য লোকজনকে ডেকেছিলেন। তাঁদের সকলের ডাকেও দরজা খোলেনি। শেষমেশ পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখল বিছানায় অচৈতন্য হয়ে পড়ে রয়েছেন বৃদ্ধ। মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরোচ্ছিল। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় অমলকে। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হুগলির চুঁচুড়া পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, চুঁচুড়ার ১৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় একটি আবাসনে একাই থাকতেন ৭৫ বছর বয়সি অমল। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীর স্ত্রী প্রয়াত হয়েছেন কয়েক বছর আগে। তার পর থেকে ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন নিঃসন্তান ওই বৃদ্ধ। চুঁচুড়াতে অবশ্য কয়েক জন আত্মীয় থাকেন। তাঁরা খোঁজখবরও রাখেন। বুধবার সকালে অমলের ফ্ল্যাটে আসেন খবরের কাগজ বিক্রেতা। তিনি জানান, বেশ কয়েক বার কলিং বেল বাজিয়েছেন। কিন্তু সাড়া পাননি। তাই পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের ডেকেছিলেন।
সকলে মিলে ডাকাডাকি করেও ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে সাড়া পাননি। শেষমেশ তাঁরা পুলিশে খবর দেন। অমলের একমাত্র ভাইপো থাকেন ওই এলাকায়। তাঁকেও ফোন করে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। কিছু ক্ষণের মধ্যে ফ্ল্যাটে আসে চুঁচুড়া থানার পুলিশ। ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে পুলিশকর্মীরা দেখেন বিছানায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন বৃদ্ধ। চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ঠিক কী ভাবে অমলের মৃত্যু হয়েছে, তা পরিষ্কার নয়। সে জন্য তাঁর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। তদন্তের প্রয়োজনে ফ্ল্যাটেও যান তদন্তকারীরা।