Advertisement
E-Paper

এ বার সন্দীপের বাড়িতে হামলা

কারা হামলা করেছে, সে ব্যাপারে অবশ্য ধন্দে সন্দীপের বাড়ির লোকজন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৯ ০১:৫১
আক্রান্ত: আরামবাগ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সন্দীপের বাবা নিমাইচন্দ্র বর। নিজস্ব চিত্র

আক্রান্ত: আরামবাগ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সন্দীপের বাবা নিমাইচন্দ্র বর। নিজস্ব চিত্র

সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া তৃণমূল নেতা তথা কিশোরপুর ১ পঞ্চায়েতের প্রধান সন্দীপ বরের পৈতৃক বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠল। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে খানাকুলের ময়াল গ্রামে। অভিযোগ, বাড়ি, মোটর সাইকেল ভাঙচুরের পাশাপাশি লোহার রড দিয়ে মেরে ভেঙে দেওয়া হয়েছে সন্দীপের বৃদ্ধ বাবা নিমাই চন্দ্র বরের বাঁ পা। আহত অবস্থায় তাঁকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।

কারা হামলা করেছে, সে ব্যাপারে অবশ্য ধন্দে সন্দীপের বাড়ির লোকজন। আহত নিমাই চন্দ্র বর বলেন, ‘‘এর আগে একাধিকবার দুর্নীতির প্রতিবাদ করে ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের হাতে মার খেয়েছি। কিন্তু এবার কারা মারল জানি না। যারা এসেছিল, তারা কোনও দলের লোক নয়। এমনকী যে আমাদের ট্রাক্টার চালায়, সেও ওই দলে ছিল।’’

মঙ্গলবার মুকুল রায়ের নেতৃত্বে খানাকুলের দুই যুব নেতা তথা খানাকুল ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি নইমুল হক এবং কিশোরপুর ১ প্রধান সন্দীপ বর দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে গিয়ে দলে যোগ দেন। বিকেল নাগাদ সেই খবর পাওয়ার পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে খানাকুল। অভিযোগ, ওই নেতারা এলাকায় দুর্নীতি, তোলা আদায়, সন্ত্রাস সৃষ্টি ইত্যাদি নানান অভিযোগে অভিযুক্ত। গ্রামের মানুষের ক্ষোভের খবর পেয়ে ওই নেতারা অবশ্য গ্রামে ফেরেনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল ৯টা নাগাদ নিমাইবাবু বাড়ির কাছেই তাঁর দোকান খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেই সময় গ্রামের এবং সংলগ্ন এলাকার জনা কুড়ি লোক হামলা চালায়। সন্দীপ বরের স্ত্রী মোনালিসা বরের অভিযোগ, “আমরা এই গ্রামেই আলাদা বাড়িতে থাকি। কিন্তু গতকাল বিকেল থেকেই গ্রামের অনেকে হুমকি দিতে শুরু করায় এই বাড়িতে চলে আসি। সকাল ৯টা নাগাদ প্রায় জনা ২০ লোক কাঁধে গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে ঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ঘরে ঢোকার চেষ্টা করে। শ্বশুর মশাই বাধা দিলে লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয়। মোটর সাইকেল এবং ঘরের আসবাবপত্রও ভাঙচুর করেছে। সন্দীপ গ্রামে ফিরলে তাকে পিটিয়ে মারার হুমকি দিয়ে চলে যায়।’’

সন্দীপের উপর কেন এত রাগ? সন্দীপের মা বন্দনা বর বলেন, “দল পাল্টেছে বলেই ওর উপর রাগ।’’ তবে কি তার পুরোনো দল তৃণমূলের ছেলেরাই মারতে চাইছে? নিশ্চিত নন সন্দীপের পরিবারের লোকজন।

দুষ্কৃতীদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে পরিবারের লোকেদের ধোঁয়াশা থাকলেও সন্দীপ বলেন, “মূলত আমাদের গোষ্টীদ্বন্দ্বের জেরে যারা বসে গিয়েছিল তারাই এই কাজ করছে। ২০১১ সালের পর সিপিএমের যারা ঘর ছাড়া হয়েছিল এবং পরে বাড়ি ফিরে চুপচাপ বসে ছিল তারাও এর সঙ্গে যুক্ত।’’ কিন্তু কেন এই আক্রমণ? সন্দীপের কথায়, “ওরা ভেবেছিল আমি তৃণমূলেই থাকব। বিজেপির লোকেরাই আমাকে মারবে। এখন যখন দেখছে আমি বিজেপিতে চলে গিয়েছি, তখন ব্যক্তিগত রাগ থেকে এই হামলা করছে বলেই আমার বিশ্বাস। তবে যা বলার আমার দলই বলবে।’’ সন্দীপ আরও বলেন, “আমার শুধু একটাই কথা, বাবার সঙ্গে তো প্রায় বছর কুড়ি রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। আমি বাবার সঙ্গেও থাকি না। তারপরেও বাবার উপরে এই হামলা কেন? এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়।’’ ঘটনাটি নিয়ে সন্দীপ বরের নতুন দল বিজেপির আরামবাগ জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, “আপাতত পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি আমরা।’’

যাদের বিরুদ্ধে এদিন সন্দীপের বাড়ির লোকজন হামলার অভিযোগ তোলে, সেই ভোলা মালিক, বিকাশ মালিক, হারু সামন্ত, সুশান্ত সামন্তদের অনেকেই বলেন, “গত আট বছর ধরে এলাকায় সন্দীপ ও অন্য তৃণমূল নেতাদের তোলা আদায়, বালি এবং বেআইনিভাবে মাটি বিক্রি-সহ নানান দুর্নীতি এবং অত্যাচার চলছে। বিজেপির উত্থানে এর থেকে মুক্তির পথ দেখেছিলাম আমরা। আশা ছিল বিজেপি ওদের উপযুক্ত শাস্তি দেবে। কিন্তু তারাই আবার বিজেপিতে গেলে পরিস্থিতি তো একই থাকবে।’’

Political violence BJP TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy