Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

শ্রীরামপুরে অভিযুক্তের বাড়ি ভাঙচুর, অবরোধ

বৃহস্পতিবার ভোরে ছোটু শ্রীরামপুর থানায় গিয়ে জানায়, স্ত্রী সানাকে খুন করে দেহ পিচবোর্ডের বাক্সে ভরে গঙ্গার ধারে জঙ্গলে ফেলে এসেছে সে। পুলিশ সানার দেহ উদ্ধার করে। ছোটুকে গ্রেফতার করা হয়।

অবরোধ: শুক্রবার শ্রীরামপুর মহিলা থানার সামনে। ছবি: প্রকাশ পাল।

অবরোধ: শুক্রবার শ্রীরামপুর মহিলা থানার সামনে। ছবি: প্রকাশ পাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৭ ০২:৪৩
Share: Save:

স্ত্রী সানা খাতুনকে খুনের অভিযোগে শ্রীরামপুরের শীলবাগান এলাকার পার্সি লেনের বাসিন্দা মহম্মদ ছোটুকে আগেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। নিহতের বাপেরবাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করা হয় ছোটুর বাবা মহম্মদ নিজামুদ্দিনকে। কিন্তু তার পরেও কেন সানার শ্বশুরবাড়ির সকলকে পুলিশ গ্রেফতার করল না, এলাকার বাসিন্দাদের এই ক্ষোভে শুক্রবার সকাল থেকে তেতে ওঠে শীলবাগান। ছোটুদের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। দু’দফায় প্রায় দু’ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ হয়। ভাঙচুরের ঘটনায় দু’জনকে আটক করে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার ভোরে ছোটু শ্রীরামপুর থানায় গিয়ে জানায়, স্ত্রী সানাকে খুন করে দেহ পিচবোর্ডের বাক্সে ভরে গঙ্গার ধারে জঙ্গলে ফেলে এসেছে সে। পুলিশ সানার দেহ উদ্ধার করে। ছোটুকে গ্রেফতার করা হয়। ছোটুর দাবি ছিল, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল তার স্ত্রীর। তা ছাড়া, স্ত্রী তাকে মারধর করতেন। সেই রাগেই সে খুন করে। তবে, এফআইআরে নিহতের মামা ইজাজ খানের অভিযোগ, অতিরিক্ত পণের দাবিতে সানাকে খুন করেছে তাঁর স্বামী এবং শ্বশুর।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অবশ্য অভিযোগ, ঘটনার পিছনে ছোটুর পরিবারের সকলেই দায়ী। ধৃত নিজামুদ্দিনকে শুক্রবার শ্রীরামপুর আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে ১৩ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। সেই সময় আদালত চত্বরে বিক্ষোভ দেখান শীলবাগান এলাকার বাসিন্দারা। তার পরে কয়েকশো লোক মহিলা থানার সামন‌ে অবরোধ করেন। তাঁদের দাবি, ওই পরিবারের সবাইকেই ধরতে হবে।

পুলিশ জানায়, এফআইআরে নাম থাকা দু’জনকেই ধরা হয়েছে। আরও কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে ধরা হবে। বিক্ষোভকারীরা অবশ্য তা শুনতে চাননি। তাঁদের আরও অভিযোগ, ছোটুর সঙ্গে এক তরুণীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। সানাকে সরিয়ে দেওয়ার সেটাও একটা কারণ। শেষে চন্দননগর কমিশনারেটের এসিপি কামনাশিস সেন ঘটনাস্থলে এসে নিহতের মা নাসিমা বেগম-সহ অন্যদের সঙ্গে কথা বলেন।

নাসিমা জানান, জামাইকে নগদে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। এর পরেও তিন লক্ষ টাকা এবং একটি গাড়ি চাইছিল। নাসিমা বলেন, ‘‘মেয়ে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। জামাইয়ের চরম শাস্তি আর ওর বাবার যাবজ্জীবন সাজা হোক।’’ পুলিশকর্তারা উপযুক্ত তদন্তের আশ্বাস দিলে বেলা সওয়া তিনটে নাগাদ অবরোধ ওঠে।

কিন্তু এর মধ্যেই জনতা ছোটুদের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। আসবাবপত্র বাইরে ফেলে দেওয়া হয়। ওই বাড়িতে অবশ্য তখন কেউ ছিলেন না। তাঁরা পালিয়ে যান। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। ঘণ্টাখানেক বাদে এলাকায় ফের অবরোধ হয়। এলাকার সিপিএম কাউন্সিলর সুমঙ্গল সিংহ বলেন, ‘‘মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ হয়েছে। আইন হাতে তুলে না-নিতে আমরা তাঁদের অনুরোধ করেছি। পণ এবং যুবকটির বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই খুন বলে মনে হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE