Advertisement
E-Paper

গত বারের থেকেও বেশি বাজি ফেটেছে, অভিযোগ হাওড়ায় 

গত বছরের তুলনায় এ বছর পুজোর আগে থেকেই নিষিদ্ধ শব্দবাজি আমদানি ও তৈরির ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই কড়া পদক্ষেপ করেছিল হাওড়া সিটি পুলিশ।

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৪৯
 বাজি পোড়ানোর জেরে ধোঁয়ায় ঢেকেছে চারপাশ। রবিবার রাতে, বালিতে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

বাজি পোড়ানোর জেরে ধোঁয়ায় ঢেকেছে চারপাশ। রবিবার রাতে, বালিতে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

হাওড়া শহর জুড়ে নিষিদ্ধ শব্দবাজির বিরুদ্ধে প্রচার, পদযাত্রা ও ধরপাকড় করেও শব্দদানবকে আটকাতে পুলিশ যে ব্যর্থ, রবিবার কালীপুজোর রাতেই তা প্রমাণ হয়ে গেল। আর এই ব্যর্থতাকে কার্যত মেনেও নিয়েছে হাওড়া সিটি পুলিশ। কালীপুজোর সন্ধ্যা থেকেই শব্দবাজি ফাটতে শুরু করলেও সেই দৌরাত্ম্য দ্বিগুণ হয়ে যায় রাত ৯টার পরে। যা চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। কিছু এলাকায় বাজি ফাটানোর আওয়াজে কান পাতাই দায় হয়ে ওঠে।

হাওড়ার পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা বলেন, ‘‘শব্দবাজির বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার চালিয়েছি আমরা। রাতে তল্লাশি অভিযানও চলেছে। প্রচুর শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে স্থানীয় মানুষ বলছেন, আগের বারের থেকে কম ফেটেছে। পুরোটা বন্ধ করতে পারিনি। এটা আমাদের ব্যর্থতাই বলা যায়।’’

গত বছরের তুলনায় এ বছর পুজোর আগে থেকেই নিষিদ্ধ শব্দবাজি আমদানি ও তৈরির ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই কড়া পদক্ষেপ করেছিল হাওড়া সিটি পুলিশ। গত ১০ দিনে শহরের বিভিন্ন জায়গায় হানা দিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে ২০ হাজার কেজিরও বেশি নিষিদ্ধ শব্দবাজি।

দাশনগর থানা এলাকার একটি বাড়ি থেকে এত পরিমাণ শব্দবাজি উদ্ধার হয় যে, কোনও ভাবে সেখানে আগুন লাগলে গোটা এলাকা উড়ে গিয়ে কয়েক হাজার মানুষের প্রাণ চলে যেত। একই ভাবে শিবপুরের নস্করপাড়ায় খোদ বাজি বাজার কমিটির সভাপতির বাড়ি থেকে দেড় হাজার কেজিরও বেশি নিষিদ্ধ শব্দবাজি উদ্ধার করা হয়।

কিন্তু এত শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত হওয়ার পরেও হাওড়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এ বারের মতো এত রাত পর্যন্ত শব্দবাজির দাপট গত বছরও দেখা যায়নি। হাওড়ার পঞ্চাননতলা রোডের বাসিন্দা, পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘পুলিশ যে দাবি করছে আগের বারের তুলনায় কম ফেটেছে, তা সম্পূর্ণ ভুল তথ্য। এই প্রথম দেখলাম, রাত যত গভীর হয়েছে, শব্দবাজির তাণ্ডব তত বেড়েছে। কানে বালিশ চাপা দিয়েও রক্ষা হয়নি।’’

হাওড়ার ক্রিমিনাল কোর্ট বার লাইব্রেরির সভাপতি সমীর বসুরায়চৌধুরী বলেন, ‘‘গত বারের তুলনায় অনেক বেশি শব্দবাজি ফেটেছে এ বার। এত রাত পর্যন্ত কান ফাটানো শব্দবাজি আগে ফেটেছে বলে মনে পড়ে না।’’ হাওড়ার একটি স্কুলের শিক্ষিকা মৌমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকেন মধ্য হাওড়ায়। তিনি বলেন, ‘‘গত বারের মতোই এ বার শব্দবাজির তাণ্ডব হয়েছে আমাদের এলাকায়। কিছুই কমেনি।’’

হাওড়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিভিন্ন বহুতল বাড়ির পাশাপাশি এ বার রাস্তাতেও শব্দবাজি ফাটানো হয়েছে অবাধে। মন্দিরতলার বাসিন্দা সংবাদপত্রের এক কর্মীর অভিযোগ, রবিবার রাত তিনটে নাগাদ তিনি যখন মন্দিরতলায় আসেন, তখন শিবপুর রোডের উপরে কিছু যুবককে অবাধে গাছে বোমা ফাটাতে দেখেন তিনি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তায় পুলিশ ছিল ঠিকই, কিন্তু দর্শকের ভূমিকায়।

হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিটি থানার পুলিশ সন্ধ্যা থেকে এলাকায় ঘুরেছে। শব্দবাজি ফাটানোর জন্য ২০০ জনকে ধরেছি। ৫০০ কেজি বাজি উদ্ধার হয়েছে।’’

Kali Puja 2019 Firecracker Howrah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy