Advertisement
E-Paper

প্লাস্টিক নিষেধ নদীঘেঁষা পঞ্চায়েতে

প্রশাসন সূত্রের খবর, বলা হয়েছে, নদী সংলগ্ন পঞ্চায়েতগুলিতে কোনও ভাবেই ৫০ মাইক্রনের কম পুরু প্লাস্টিক ব্যবহার করা যাবে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৬:০৫
বদ্ধ: উলুবেড়িয়ার মেদিনীপুর খাল ভরেছে কচুরিপানায়। নিজস্ব চিত্র

বদ্ধ: উলুবেড়িয়ার মেদিনীপুর খাল ভরেছে কচুরিপানায়। নিজস্ব চিত্র

শুধু গঙ্গাই নয়, অন্যান্য নদনদীর দূষণ বন্ধ করতেও তৎপর জাতীয় পরিবেশ আদালত। আর সে জন্য রাজ্যের নদী সংলগ্ন পঞ্চায়েতগুলিতে পাতলা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ, বর্জ্য ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা তৈরি করা-সহ কয়েকটি নির্দেশও দিয়েছে আদালত। তার ভিত্তিতে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর জেলা প্রশাসনগুলিকে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে। হাওড়া জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ওই নির্দেশের সঙ্গে কোনও ভাবে আপস করা হবে না।

নির্দেশটি ঠিক কী?

প্রশাসন সূত্রের খবর, বলা হয়েছে, নদী সংলগ্ন পঞ্চায়েতগুলিতে কোনও ভাবেই ৫০ মাইক্রনের কম পুরু প্লাস্টিক ব্যবহার করা যাবে না। নদীদূষণ রুখতে নদীর ধারে বৃক্ষরোপণ করতে হবে, খাল সংস্কার করতে হবে, নদীর পাড়ে ভেটিভার ঘাস লাগাতে হবে, বর্জ্য ফেলার জন্য জায়গাও তৈরি করতে হবে।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিডিওদের বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতগুলিকে নিয়ে তাঁরা যেন নিয়মিত বৈঠক করে ওই নির্দেশ প্রয়োগ করার ব্যাপারে তৎপর হন। রাতারাতি মানুষের অভ্যাসের পরিবর্তন করা যাবে না। তাই সবাইকে প্রথমে প্লাস্টিক ব্যবহার না-করার জন্য বোঝানো হচ্ছে। তাতে কাজ না-হলে জরিমানা আদায়ের ব্যবস্থা হবে।’’

হাওড়ায় মূল তিনটি নদনদী হল— গঙ্গা, রূপনারায়ণ ও দামোদর। তাদের সঙ্গে আছে অসংখ্য শাখা খাল। খালেই মূলত প্লাস্টিক ফেলা হয়। তা নদীতে গিয়ে পড়ে দূষণ সৃষ্টি করে। তিনটি নদনদীর কাছে রয়েছে জেলার বেশ কিছু পঞ্চায়েত। যেমন, সাঁকরাইল ব্লকে ১০টি, উলুবেড়িয়া-১ ব্লকে ৩টি, উলুবেড়িয়া-২ ব্লকে ৩টি, বাগনান-১ ব্লকে ২টি, বাগনান-২ ব্লকে ৫টি, শ্যামপুর-১ ব্লকে ৫টি এবং শ্যামপুর- ২ ব্লকে ৪টি। ব্লক এবং পঞ্চায়েতের সংখ্যা উল্লেখ করেও এই জেলায় প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নির্দেশের কথা জানার পরে প্রতিটি পঞ্চায়েতকে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বৃক্ষরোপণ, নদীর পাড়ে ভেটিভার ঘাস লাগানো, খাল সংস্কার প্রভৃতি বিষয়ে পরিকল্পনা করে পাঠাতে বলা হয়েছে। অধিকাংশ পঞ্চায়েত তা করেও ফেলেছে। কয়েকটি পঞ্চায়েতে ইতিমধ্যেই বর্জ্য ফেলার জায়গাও তৈরি হয়েছে। এ জন্য এক-একটি পঞ্চায়েতে ৪০ লক্ষ টাকা ধার্য হয়েছে।

রূপনারায়ণের ধারে বাগনান-১ ব্লকের কল্যাণপুরে তেমনই একটি নবনির্মিত বর্জ্য ফেলার জায়গা আগামী ২ অক্টোবর উদ্বোধন হবে। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অধীনে গঠিত ‘নদী পুনরুজ্জীবন কমিটি’কেও দূষণ রোধের কাজ নিয়ে প্রতি সপ্তাহে রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে। উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের বিডিও কার্তিক রায় বলেন, ‘‘আমরা পঞ্চায়েতগুলির সঙ্গে প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে একাধিক বৈঠক করেছি। বাজার কমিটিগুলির সঙ্গেও বসছি।’’ শ্যামপুর-২ ব্লকে ইতিমধ্যেই এ নিয়ে প্রচার শুরু হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জুলফিকার মোল্লা জানান, এখানকার চারটি পঞ্চায়েতেই বর্জ্য ফেলার জন্য জমি নির্দিষ্ট করা হয়েছে।

জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন উলুবেড়িয়ার বীরশিবপুরের বাসিন্দা তপন সেন। তপনবাবু তাঁর ক্লাবের সদস্যদের নিয়ে গ্রামে প্লাস্টিক ব্যবহারের বিপদ নিয়ে সচেতন করার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে এবং রাস্তার ধারে প্লাস্টিক ফেলার পাত্রও বসিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘খালগুলি থেকেই নদীর দূষণ হয়। খালে যে ভাবে প্লাস্টিক ফেলা হয় তা অমার্জনীয় অপরাধ। জাতীয় পরিবেশ আদালতের রায়ে প্রশাসন প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করার ক্ষেত্রে তৎপর হবে বলে আশা করি। এই দাবি আমাদের বহুদিনের।’’

National Green Tribunal River Plastic
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy