Advertisement
E-Paper

কিশোরী নিখোঁজ, দুই থানার ডায়েরি নিতে সপ্তাহ পার

দুই থানার ঠেলাঠেলিতে এক কিশোরীর নিখোঁজ সংক্রান্ত ডায়েরি নিতেই সাত দিন কাবার করে দিল পুলিশ। গত চার মাস ধরে মেয়ের খোঁজে হন্যে হয়ে তাঁর অভিভাবকেরা ঘুরছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন হদিশ দিতে পারল না জেলা সদর চুঁচুড়া থানার পুলিশ। যদিও জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৬ ০১:২৭

দুই থানার ঠেলাঠেলিতে এক কিশোরীর নিখোঁজ সংক্রান্ত ডায়েরি নিতেই সাত দিন কাবার করে দিল পুলিশ। গত চার মাস ধরে মেয়ের খোঁজে হন্যে হয়ে তাঁর অভিভাবকেরা ঘুরছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন হদিশ দিতে পারল না জেলা সদর চুঁচুড়া থানার পুলিশ। যদিও জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চুঁচুড়ার অরবিন্দ পল্লির বাসিন্দা বিশ্বজিৎ রায়ের বছর চোদ্দোর মেয়ে জয়ন্তী গত ৬ এপ্রিল পান্ডুয়ার বৈঁচিতে পিসিমার বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল। দু’দিন পর চুঁচড়ায় নিজের বাড়ি ফেরার কথা ছিল তার। ওই দিন কথা মতো সে পিসিমার বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু রাত পর্যন্ত জয়ন্তী বাড়ি ফেরেনি। এরপর মেয়ে না ফেরায় উদ্বিগ্ন বাবা-মা পিসিমার বাড়িতে খোঁজ নেন। কিন্তু তাঁরা জানতে পারেন, মেয়ে বহুক্ষণ বাড়ির পথে রওনা দিয়েছে। রাত বেড়ে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা চারিদিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। মেয়ের বন্ধু বান্ধব আর আত্মীয়স্বজনের বাড়িতেও ওই রাতেই খোঁজ করেন তাঁরা। কিন্তু মেয়েকে না পেয়ে শেষ পর্যন্ত নিখোঁজ সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে তাঁরা চুঁচুড়া থানায় যান।

কিন্তু চুঁচুড়া থানার পুলিশ নিখোঁজ কিশোরীর অভিভাবকদের স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, যে এলাকা থেকে সে নিখোঁজ হয়েছে সেই থানায় অভিযোগ জানাতে হবে। এরপর সেইমত নিখোঁজ কিশোরীর বাবা মা বৈঁচীর আওতায় পান্ডুয়া থানার দ্বারস্থ হন মেয়ের খোঁজে। কিন্তু সেখানেও ডায়েরি নেওয়া হয়নি। তাঁদের চুঁচুড়া থানার মত একইভাবে এবার জানানো হয়, নিখোঁজ সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে গেলে কিশোরী যেখানের বাসিন্দা সেই থানায় যেতে হবে।

দুই থানার এই ঠেলাঠেলিতে অসহায় হয়ে পড়েন নিখোঁজ ওই কিশোরীর বাবা মা। শেষ পর্যন্ত থানা পুলিশের উপর ভরসা ছেড়ে হারিয়ে যাওয়া একমাত্র মেয়েকে খুঁজে পেতে নিজেরাই বেরিয়ে পড়েন। কিন্তু না পেয়ে আবারও পুলিশের দ্বারস্থ হন তাঁরা। কিন্তু এর মাঝে দুই থানায় যাতায়াত করতে করতেই অন্তত প্রায় এক সপ্তাহ কেটে যায়। অবশেষে ১৫ই এপ্রিল চুঁচুড়া থানায় নিখোঁজ কিশোরীর মা কল্পনা রায়ের ডায়েরি নেওয়া হয়। রায় পরিবারের আর্থিক অবস্থা বিশেষ ভাল নয়। তার ফলে নিজেদের উদ্যোগে মেয়ের খোঁজে তাঁরা অবশ্য দূরে কোথাও যেতে পারেননি। জয়ন্তীর বাবা বিশ্বজিৎবাবু পেশায় বাসের কন্ডাক্টরি করেন। তাঁর স্ত্রী কিছু করেন না।

একমাত্র মেয়ের হারিয়ে যাওয়ায় আতঙ্কের দিন কাটছে থাকে রায় পরিবারের। বিশ্বজিৎবাবু বলেন,‘‘থানায় যোগাযোগ করা হলে জানানো হচ্ছে, কোন খবর পেলেই আপনাদের ফোনে জানানো হবে। কিন্তু এই রকম আশ্বাস বাণী শুনতে শুনতে প্রায় চার মাস কেটে গেল।’’ নিখোঁজ কিশোরী জয়ন্তী চুঁচুড়ার দেশবন্ধু বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর ছাত্রী। চার মাস মেয়ের কোন খোঁজ না পেয়ে অগত্যা অসহায় মা বাবা জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের যাওয়ার মনস্থির করেন। মঙ্গলবার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কাছে যান তাঁরা।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও জানান,‘‘ সমস্ত ব্যাপারটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিশোরীর খোঁজে সব রকম ব্যবস্থা অবলম্বন করা হচ্ছে।’’

police Missing girl
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy