ফাঁকা: খদ্দেরের অপেক্ষা। উলুবেড়িয়ায়। ছবি: সুব্রত জানা
দোকানের শো-কেস ভর্তি রকমারি ফ্যাশন দুরস্ত পোশাক। এ দিকে পুজোর আর দিন পনেরো বাকি। অথচ দোকানে খদ্দের নেই। কর্মচারীরা নিজেদের মধ্যে গল্প করেই সময় কাটাচ্ছেন। এমনই হাল
উলুবেড়িয়া বাজারের।
সন্ধ্যায় ফাঁকা দোকানে বসেছিলেন মালিক আসানুল হক। সব ধরনের রেডিমেড পোশাক বিক্রি করেন তিনি। তাঁ দোকানেও দেখা মিলল না খদ্দের। আসানুল বলেন, ‘‘শনি, রবিবার ভিড় হয়। বাকি দিনগুলি ফাঁকা থাকে। পুজোর আর খুব বেশিদিন নেই। এখনও যদি খদ্দের না আসেন কবে আর আসবেন?’’
একই ছবি দেখা গেল কালীবাড়ি যাওয়ার রাস্তার ধারের দোকানগুলিতে। একটি বাতানুকুল দোকানে ঢুকে দেখা গেল প্রায় ফাঁকা। মালিক এবং কর্মচারীদের মধ্যে ব্যস্ততা নেই। দোকান মালিক রফিকুল ইসলাম বললেন, ‘‘এত বছর ব্যবসা করছি। পুজোর মুখে এইরকম খারাপ বাজার এর আগে দেখিনি।’’
এই রাস্তার উপরেই কিছুটা এগিয়ে দেখা গেল একটি দোকানে বেশ ভিড়। তবে তাতে খুশি নন দোকান মালিক দেবাশিস বেজ। কারণ তাঁর দাবি, ‘‘অন্য বছরে এই সময় খদ্দেরদের লাইন দোকান ছাড়িয়ে বাইরের রাস্তায় গিয়ে পড়ত। সেই ভিড় কোথায়?’’
ওটি রোড এবং কালীবাড়ি যাওয়ার রাস্তার দুই ধারে রয়েছে অসংখ্য কাপড়ের দোকান। খদ্দেরের ভিড় প্রায় নেই বললেই চলে।গত বছর পুজোর আগেও এইসময়ে বাজার ছিল জমজমাট। এই পরিস্থিতিতে আশঙ্কায় ভুগছেন ব্যবসায়ীরা। আসানুল সাহেব যেমন জানালেন, তিনি কম পণ্য তুলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘চারিদিকে মন্দা পরিস্থিতি। জিনিসই তুলেছি কম। ফলে লাভ হয়তো কম হবে। কিন্তু বেশি পণ্য তুলে বিক্রি না হলে ক্ষতির মুখে তো আর পড়তে হবে না।’’ আবার দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘যে হারে বিক্রি হচ্ছে তা যদি চলতে থাকে তাহলে মহাজনদের পাওনা মেটাতে পারব কি না সন্দেহ।’’
ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, এই এলাকার কেনাবেচা অনেকটা নির্ভর করে চটকলের উপরে। কিন্তু ফুলেশ্বরের কানোরিয়া জুটমিল অনেকদিন হল বন্ধ। চেঙ্গাইলের ল্যাডলো জুটমিলে বোনাস নিয়ে গোলমাল দেখা দিয়েছে। চটকলের এই টালমাটাল অবস্থায় মার খাচ্ছে অন্য ব্যবসা। সেইসব ব্যবসায়ীদের হাতেও টাকা নেই।
বিপাকে পড়েছেন প্যাকেট সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরাও। আনন্দ ধানুকা নামে এক সরবরাহকারী বললেন, ‘‘গত বছরের তুলনায় এ বার অর্ধেকও দিতে পারিনি।’’ তবে সকলের আশা, সুসময় আসবে।
অপেক্ষা তারই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy