Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

সচেতনতা সামান্য,পুকুর দূষণ চলছেই

হরিপালের কানানদী, যাদববাটী, চোয়ালপাড়া, নালিকুল, ধনেখালি, সিঙ্গুর, মশাটের বিভিন্ন পুকুরে এখনও পড়ে রয়েছে কাঠামো-সহ পুজোর সামগ্রী।

বিসর্জনের পরে পান্ডুয়ার অরবিন্দ পুকুরের এমনই দশা। ছবি: সুশান্ত সরকার

বিসর্জনের পরে পান্ডুয়ার অরবিন্দ পুকুরের এমনই দশা। ছবি: সুশান্ত সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৪০
Share: Save:

বিচ্ছিন্ন কিছু সচেতনতার নজির মিলছে ঠিকই। কিন্তু সার্বিক ভাবে হুগলির গ্রামাঞ্চলে প্রতিমা বিসর্জনকে ঘিরে পুকুর দূষণ অব্যাহত।

হরিপালের কানানদী, যাদববাটী, চোয়ালপাড়া, নালিকুল, ধনেখালি, সিঙ্গুর, মশাটের বিভিন্ন পুকুরে এখনও পড়ে রয়েছে কাঠামো-সহ পুজোর সামগ্রী। তারকেশ্বরের পদ্মপুকুর, বুড়িমাতলা, সাহাপুরেও একই অবস্থা। কাঠামো ওঠেনি রনের খাল থেকেও। হরিপাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বাবলু গায়েন বলেন, ‘‘প্রশাসনের তরফে সব কাঠামো জল থেকে তুলে ফেলা হবে। কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয় লোকজন কাঠামো তুলে নিয়েছেন।’’

চণ্ডীতলার নৈটিতে সরস্বতী নদীতে এখনও মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে প্রতিমার কাঠামো। ভাসান পর্ব মিটে গেলেও পান্ডুয়া ব্লকের বহু পুকুরেই প্রতিমার কাঠামো ভাসতে দেখা যাচ্ছে। তিন দিনে কয়েকশো প্রতিমা পুকুরে ভাসান দেওয়া হয়েছে। বহু জায়গাতেই জলেই পচছে ফুলমালা, কলাগাছ বা পুজোর অন্যান্য উপকরণ। পঞ্চায়েত বা প্রশাসনের এ ব্যাপারে কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। খন্যান, নিয়ালা, পান্ডুয়া পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন পুকুরে দেখা গিয়েছে, প্রতিমার কাঠামো পড়ে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর ফলে পুকুর এতটাই অপরিচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে যে, ওই জল ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের বক্তব্য, জল থেকে কাঠামো তুলে পুকুর পরিষ্কার করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের। পান্ডুয়া পঞ্চায়েতের প্রধান সুভাষচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘সব পুকুরই পরিষ্কার করে দেওয়া হবে।’’ ইটাচুনা-খন্যান পঞ্চায়েতের প্রধান তরুণকুমার চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘পঞ্চায়েতের তরফে সব পুকুর অবশ্যই পরিষ্কার করে দেওয়া হবে। তবে, পুজো কমিটিগুলি একটু সজাগ থাকলে ভাল হত। বিসর্জনের আগে ফুলমালা-সহ অন্য উপকরণ পুকুর পাড়ে রাখা যেতে পারে। কিন্তু তাঁরা তা করেন না।’’

আরামবাগ শহরের ছবিটা অবশ্য ব্যতিক্রমী। বিসর্জনের পরের সকালেই পুকুর সাফ হয়ে গিয়েছে। সৌজন্যে পুরসভা। আরামবাগ শহরে গোটা চল্লিশ দুর্গাপুজো হয়। চারটি পুকুরে অধিকাংশ প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। শহরবাসীর অভিজ্ঞতা, বিসর্জন-পর্ব মিটে গেলেও প্রতিমার কাঠামো, শোলার অলঙ্কার, খড়, ফুলমালা পুকুরেই পড়ে থাকত এত দিন। এ বার ভাসানের পরেই পুরকর্মীরা দ্রুত পুকুর পরিষ্কার করে দিয়েছেন। কাঠামো তুলে পাড়ে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে কাঠামো সরিয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে পুজো উদ্যোক্তাদের। পুরপ্রধান স্বপন নন্দী বলেন, “পুকুরে দূষণ রোখার চেষ্টা করছি আমরা। মশা এবং ডেঙ্গির আশঙ্কায় মানুষও সচেতন হচ্ছেন।” পোলবা-দাদপুর, চুঁচুড়া-মগরা ব্লকের কিছু পুকুর থেকেও কাঠামো তুলে ফেলা হয়েছে।

হাওড়ার বাগনানের কয়েকটি পুকুরে গিয়ে দেখা গিয়েছে, কাঠামো দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পুজো উদ্যোক্তারাই এগুলি জল থেকে তুলেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Immersion Pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE