Advertisement
E-Paper

নিয়ম মানছে না পাম্পও, পুলিশ দর্শক

‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচি চলছে রাজ্য জুড়ে। হেলমেট ছাড়া মোটরবাইক দেখলেই জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী কর্মসূচির শুরুর দিকে, হেলমেট না পরলে পাম্প থেকে পেট্রোল বা ডিজেলও মিলছিল না। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঢিলে হয়েছে নজরদারি। রাস্তায় ফের হেলমেট ছাড়াই দাপট বাড়ছে বাইকের। আজ নজরে হাওড়া জেলা।বিনা হেলমেটেই মিলছে তেল। তিন জন সওয়ারি নিয়েই বাইক ছুটছে দ্রুত গতিতে। গ্রামীণ হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় মুখ থুবড়ে পড়েছে রাজ্য সরকারের হেলমেট বিধি। মাস খানেক আগেও উলুবেড়িয়া-শ্যামপুর রোডের ধারে পারিজাত এলাকার একটি পেট্রোল পাম্পে হেলমেট ছাড়া তেল দেওয়া হচ্ছিল না।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৭ ০২:১৩
নিষেধ-উড়িয়ে: বিনা হেলমেটে বাইকে সওয়ার স্কুলছাত্রীরা ।

নিষেধ-উড়িয়ে: বিনা হেলমেটে বাইকে সওয়ার স্কুলছাত্রীরা ।

বিনা হেলমেটেই মিলছে তেল। তিন জন সওয়ারি নিয়েই বাইক ছুটছে দ্রুত গতিতে। গ্রামীণ হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় মুখ থুবড়ে পড়েছে রাজ্য সরকারের হেলমেট বিধি।

মাস খানেক আগেও উলুবেড়িয়া-শ্যামপুর রোডের ধারে পারিজাত এলাকার একটি পেট্রোল পাম্পে হেলমেট ছাড়া তেল দেওয়া হচ্ছিল না। ধীরে ধীরে সেই বাঁধন আলগা হতে শুরু করে। দিন কয়েক আগে সেখানে গিয়ে দেখা গেল, বিনা হেলমেটের বাইক আরোহীদের হাতে পাম্পের কর্মীরা হেলমেট ধরিয়ে দিচ্ছেন। তেল নেওয়ার সময়ে সেই হেলমেট মাথায় পড়ে নিচ্ছেন তাঁরা। তেল নেওয়া শেষ হলেই সেটি ফেরত দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার সেই চক্ষুলজ্জাটুকুও দেখাচ্ছেন না। বিনা হেলমেটেই তেল নিচ্ছেন। পাম্পের কর্মীদের বক্তব্য, হেলমেট নিয়ে কড়াকড়ি করলে ব্যবসা লাটে উঠবে।

উলুবেড়িয়া-শ্যামপুর রোডটি রাজ্য সড়ক। সেখানে পুলিশের খুব বেশি নজরদারি নেই। কিন্তু প্রায় একই ছবি দেখা গিয়েছে মুম্বই রোডে। উলুবেড়িয়ার নরেন্দ্র সিনেমার উল্টো দিকের একটি পাম্পে কয়েক মাস আগেও লাগানো ছিল ‘সেভ ড্রাইভ, সেফ লাইফে’র ফ্লেক্স। কিন্তু এখন সেখানে গিয়ে সেই ফ্লেক্স দেখা গেল না। সেখানও বিনা হেলমেটেই মিলছে তেল।

নির্দেশ না মেনে হেলমেট ছাড়াই মিলছে পেট্রোল। ছবি:সুব্রত জানা

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বেশ কয়েক মাস আগে সারা রাজ্যে শুরু হয়েছিল ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচি। হাওড়া জেলার গ্রামীণ এলাকায় পুলিশ, প্রশাসন, ক্লাব, সমাজসেবী সংগঠনের উদ্যোগে এই স্লোগানকে সফল করার জন্য সচেতনতা শিবির, পথ নাটক-সহ নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়। উলুবেড়িয়া রবীন্দ্র ভবন-সহ বিভিন্ন এলাকায় চলেছে সচেতনতামূলক প্রচার। কিন্তু তাতে কাজের কাজ যে সেভাবে কিছু হয়নি তার প্রমাণ উপরের ঘটনাগুলি। কোনও বাইক আরোহী বলেছেন, ‘‘দিনের বেলা হেলমেট পড়লে মাথায় ঘাম হয়।’’ আবার কারও কারও যুক্তি, ‘‘হেলমেট পরলে দেখার অসুবিধা হয়।’’

তবে যেখানে যেখানে পুলিশ ধরপাকড় চালাচ্ছে সেখানে অবশ্য কাজ হয়েছে। বাগনানের চন্দ্রপুরে এলাকায় লাইব্রেরি মোড়ে বিনা হেলমেটের মোটরবাইক আরোহীদের ধরতে অভিযান হচ্ছে। তাই ওই এলাকার বাইক আরোহীরা হেলমেট মাথায় দিয়ে বেরোচ্ছেন। হাওড়া-আমতা রোডে ডোমজুড় কলেজের সামনেও বিনা হেলমেটের বাইক আরোহীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। কিন্তু হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় পুলিশের এই সক্রিয়তার সংখ্যা খুব বেশি নয়।

হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের কর্তাদের দাবি, আইনগত দুর্বলতার কারণেই তারা বেশি সক্রিয় হতে পারছেন না। কারণ কলকাতা পুলিশের এলাকার পাম্পগুলিকে বিনা হেলমেটের আরোহীদের তেল না দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া রয়েছে। কিন্তু হাওড়া (গ্রামীণ) এলাকায় পুলিশের সেই ক্ষমতা নেই। তাঁরা এই বিষয়ে পাম্পগুলিকে অনুরোধ করতে পারে মাত্র। সেই সুবিধাই নিচ্ছেন বিনা হেলমেটের বাইক চালকেরা।

হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার সুমিতকুমার বলেন, ‘‘আমরা পাম্প মলিকদের সঙ্গে বসব। বিনা হেলমেটে কেউ এলে যাতে তেল দেওয়া না হয় সেই অনুরোধ করব।’’

Petrol Pump Helmet Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy