বিকিকিনি: পাড়ার দোকানে পতাকা কেনা। নিজস্ব চিত্র
আমতার বাজারে বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন স্থানীয় তরুণ পাল। বছর পঁচিশের যুবক খুঁজছেন ৫০টি জাতীয় পতাকা আর হাজার খানেক মোমবাতি। পাননি। তরুণ বলেন, ‘‘এমন হতে পারে ভাবিনি। সন্ধ্যায় নিহত জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানিয়ে মোমবাতি মিছিল করব ভেবেছি। কিন্তু পতাকা, মোমবাতি কিছুই পেলাম না।’’
পাওয়া যাবে কী করে! উলুবেড়িয়া, বাউড়িয়ার বাজারে জাতীয় পতাকা, মোমবাতির টান পড়েছে। গত বৃহস্পতিবার কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় নিহত হন ৪৯ জন ভারতীয় জওয়ান। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বাউড়িয়ার চককাশীর বাসিন্দা বাবলু সাঁতরাও। শুক্রবার বাবলুর মৃত্যু সংবাদ এলাকায় পৌঁছতেই ভিড় করতে শুরু করেন সাধারণ মানুষ। শনিবার দুপুরে যখন বাবলুর দেহ এসে পৌঁছয় তাঁর বাড়িতে তখন ভিড় উপচে পড়েছে। প্রায় সকলের হাতেই ছোট বড় নানা মাপের জাতীয় পতাকা। বাবলুর বাড়িতেই টাঙিয়ে দেওয়া হয় বড় পতাকা।
বাবলু-সহ নিহত সিআরপি জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পাড়ায় পাড়ায় বের হয় মোমবাতি মিছিল। ক্লাবগুলিতে এমনকি বাড়িতে বাড়িতেও লাগানো হয় জাতীয় পতাকা। বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়া, শিক্ষকরাও আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার নিন্দা করে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মোমবাতি নিয়ে মিছিল করেন। ফলে এলাকার বাজারগুলিতে মোমবাতির টান পড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
উলুবেড়িয়া বাজারের ব্যবসায়ী টুটুল দাস জানান, সাধারণত ২৬ জানুয়ারি, ১৫ অগস্ট সব থেকে বেশি বিক্রি হয় জাতীয় পতাকা। মাঝে মধ্যে ক্রিকেট খেলা হলেও জাতীয় পতাকার বিক্রি বাড়ে। কিন্তু এমন অসময়ে এমন বিক্রি হয়নি কখনও। টুটুল বলেন, ‘‘গত ২৫ বছর ধরে পতাকা বিক্রি করি। এ ভাবে পতাকা, মোমবাতি বিক্রি হতে দেখিনি কখনও।’’ টুটুল মানছেন, মানুষের মধ্যে আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার একটা বড় প্রভাব পড়েছে।
যদিও অনেকেই মনে করছেন, সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতেই বেড়েছে মোমবাতি মিছিল, পতাকা নিয়ে ছবি তোলার হিড়িক। সে যাই হোক, তরুণ ও তাঁর সঙ্গীরা সোমবার বিকেলে মিছিল করেছেন। সকলের হাতে পতাকা তুলে দিতে পারেননি। তরুণ বলেন, ‘‘প্রজাতন্ত্র দিবসে যে পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল, সেটাই ক্লাবে রয়েছে। তা নিয়েই বেরিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy