Advertisement
০৫ মে ২০২৪
গত এক বছরে ৯টি মন্দিরে চুরির অভিযোগ

চোরের দাপট মন্দিরে, ক্ষুব্ধ গোঘাটবাসী

গোঘাটের বিভিন্ন গ্রামে অনেক শতাব্দী প্রাচীন মন্দির আছে। সেই সব মন্দির রয়েছে দামি জিনিসপত্রও। চলতি মাসের ১ তারিখে ইন্দিরা গ্রামে দেড়শো বছরের প্রাচীন চারটি মন্দিরের তালা ভেঙে চুরি হয়। বিগ্রহগুলি থেকে প্রায় ৫ ভরি সোনার গয়না এবং কিছু আসবাবপত্রও খোয়া যায় বলে সেবাইত পরিবারগুলির পক্ষে প্রশান্ত সেনগুপ্তের অভিযোগ।

অসুরক্ষিত: দরজার এমনই হাল কামারপুকুরের শ্রীপুরের একটি বিষ্ণু মন্দিরের। ছবি: মোহন দাস

অসুরক্ষিত: দরজার এমনই হাল কামারপুকুরের শ্রীপুরের একটি বিষ্ণু মন্দিরের। ছবি: মোহন দাস

পীযূষ নন্দী
গোঘাট শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৭ ০১:৩৫
Share: Save:

কোনও মন্দিরে নিরাপত্তা বলতে একটি তালা। কোথাও দু’টি।

দিনের পর দিন গোঘাটের নানা মন্দির থেকে কখনও বিগ্রহের গয়না, কখনও জিনিসপত্র চুরি যাচ্ছে। কিন্তু না বেড়েছে নিরাপত্তা, না ধরা পড়ছে দুষ্কৃতী। এতে ক্ষোভ বাড়ছে গ্রামবাসীর। তদন্তে পুলিশ উদাসীন, এমন অভিযোগও তুলছেন তাঁরা।

পুলিশের দাবি, গোঘাটের কোথায় কোন মন্দির আছে বা সেখানে কী সম্পত্তি রয়েছে, তা নিয়ে থানায় জানাতে বলা হলেও সেবাইতরা জানাননি। ফলে, উপযুক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। বহু মন্দিরের শরিকরাও এ ব্যাপারে সজাগ নন।

এসডিপিও (আরামবাগ) হরেকৃষ্ণ পাই অবশ্য দাবি করেছেন, লিখিত অভিযোগ পেলে প্রতি ক্ষেত্রেই যথাযোগ্য তদন্ত হয়। মন্দিরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়ে গ্রামবাসীদেরও সচেতন করা হচ্ছে।

গোঘাটের বিভিন্ন গ্রামে অনেক শতাব্দী প্রাচীন মন্দির আছে। সেই সব মন্দির রয়েছে দামি জিনিসপত্রও। চলতি মাসের ১ তারিখে ইন্দিরা গ্রামে দেড়শো বছরের প্রাচীন চারটি মন্দিরের তালা ভেঙে চুরি হয়। বিগ্রহগুলি থেকে প্রায় ৫ ভরি সোনার গয়না এবং কিছু আসবাবপত্রও খোয়া যায় বলে সেবাইত পরিবারগুলির পক্ষে প্রশান্ত সেনগুপ্তের অভিযোগ। এর পরে ১৭ তারিখে কুলতলা গ্রামের প্রাচীন শিবমন্দিরের তালা ভেঙে প্রায় ৫০ হাজার টাকার সোনার গয়না চুরি হয় বলে অভিযোগ।

চলতি মাসে এই দু’টি চুরির ঘটনা সামনে এলেও আগে যত চুরি হয়েছে, তার কোনওটির কিনারা হয়নি বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। তাঁরা জানান, গত দু’বছরে কখনও দৌলতপুরের রাজবল্লভী মন্দির থেকে সোনা এবং রুপোর সিংহাসন চুরি হয়েছে, কখনও দুষ্কৃতীরা ফাঁকা করে দিয়েছে ছোটডোঙ্গল গ্রামের রক্ষাকালী মন্দিরের জিনিসপত্র। এ ছাড়াও চুরি হয়েছে তারাহাটের শিব মন্দিরে, আমবেলিয়া গ্রামের ঝুমাকালী মন্দিরে, হাজিপুরের শীতলা মন্দির-সহ কয়েকটি মন্দিরে। তবে, হাজিপুরের শীতলা মন্দিরে চুরির ঘটনায় স্থানীয় মানুষই এক জন ধরে খোয়া যাওয়া জিনিসপত্র উদ্ধার করেন। অভিযুক্তকে কে পুলিশ দেওয়া হয়।

অধিকাংশ সেবাইত পরিবারের অভিযোগ, মন্দিরে চুরির ক্ষেত্রে পুলিশের তদন্তে অগ্রগতি নেই। কোনও ক্ষেত্রেই উদ্ধার হয়নি খোওয়া যাওয়া গয়না। গ্রেফতারের ঘটনাও শোনা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে কিছু মন্দিরের শরিকরা বিগ্রহের সোনার গয়না খুলে নিজেদের হেফাজতে রাখছেন। বিশেষ অনুষ্ঠানে গয়না দিয়ে বিগ্রহ সাজিয়ে ফের খুলে নেওয়া হয়। বালি গ্রামের শীতলা মন্দিরে সেবাইত দেবীপ্রসাদ গুঁই বলেন, “যে ভাবে চুরি বাড়ছে, তাতে আমরা বিগ্রহে কোনও সোনার গয়না বা মন্দিরে কোনও আসবাবপত্র রাখছি না।’’ শ্রীপুরের বিষ্ণু মন্দিরেও কোনও গয়না রাখা হয়নি বলে জানান সেবাইতরা। এমন উদাহরণ আরও রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Temple safety issue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE