শিক্ষকদের সঙ্গে পরিচালন সমিতির বিরোধের জেরে পড়াশোনা লাটে উঠেছে রিষড়ার অঞ্জুমান উচ্চ বিদ্যালয়ে। মহকুমাশাসক (শ্রীরামপুর) রজত নন্দা জানান, আজ বুধবার সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। পুলিশ এবং স্কুলশিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরাও বৈঠকে থাকবেন। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘ওই বৈঠকেই সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, রিষড়ার ওই উর্দু মাধ্যম স্কুলে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১৩০০। দু’বছর আগে স্কুলটি সরকারি অনুমোদন পায়। ২০১৫ সালে পরিচালন সমিতি গঠিত হয়। সভাপতি হন উপপুরপ্রধান জাহিদ খানের দাদা মহম্মদ হাসান খান। কিন্তু শুরু থেকেই তাঁর সঙ্গে শিক্ষকদের একাংশের বনিবনা হচ্ছিল না। শিক্ষকদের অভিযোগ, সভাপতি নিজের ইচ্ছে মতো স্কুল চালনোর চেষ্টা করন। কোনও বিষয়ে শিক্ষকদের কথা শোনা হয় না। তাঁদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়। এক শিক্ষকের অভিযোগ, ‘‘বৈঠকে আমাদের কাজ শুধু সভাপতির নির্দেশ এবং সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া। কোনও কথা আমাদের শোনা হয় না। প্রতিবাদ করলে গালিগালাজ শুনতে হয়।’’
দিন কয়েক আগে স্কুলে সিসি ক্যামেরা বসানো নিয়ে দু’পক্ষের বিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসে। অভিযোগ, শাসকদলের নেতাদের একাংশের মদতে বহু লোকজন স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখান। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হেনস্থা করা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। ওই ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ শিক্ষকদের একাংশ সোমবার স্কুলে আসেননি। পরে জেলা স্কুল পরিদর্শক শুক্লা গঙ্গোপাধ্যায় এবং মহকুমাশাসকের (শ্রীরামপুর) সঙ্গে দেখা করেন তাঁরা।
এই ডামাডোলের জেরে স্কুলে পড়াশোনা হচ্ছে না বললেই চলে। এক শিক্ষক জানান, এখন শুধু একাদশ শ্রেণির ক্লাস চলছে। আজ বুধবার স্কুলের বার্ষিক ফল প্রকাশও হবে। পরিচালন সমিতির সভাপতি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘গত শনিবার পুরসভাতেই মিটমাট হয়ে গিয়েছিল। সোমবার সব শিক্ষকদের স্কুলে আসার কথা ছিল। কিন্তু ওঁরা এলেন না। ক্লাস না নিয়ে অকারণে পুলিশ-প্রশাসন করছেন।’’