Advertisement
E-Paper

রাস্তায় হামলা হবে না তো? আতঙ্ক

চুঁচুড়ার হুগলি আইটিআই-তে কারিগরি শিক্ষা নিতে এসে যে এমন অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হবে তা কল্পনাও করতে পারছেন না ‘ইলেকট্রিক্যাল’ বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা।

তাপস ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৭ ০২:০৩
ভয়: হামলার পরে হুগলি আইটিআইতে ছাত্রছাত্রীরা। —নিজস্ব চিত্র।

ভয়: হামলার পরে হুগলি আইটিআইতে ছাত্রছাত্রীরা। —নিজস্ব চিত্র।

ওঁদের চোখেমুখে তখনও একরাশ আতঙ্ক।

কারও প্রশ্ন, ‘‘এর পরে কী হবে?’’ কারও চিন্তা, ‘‘রাস্তাঘাটে বিপদে পড়ব না তো!’’

মঙ্গলবার দুপুর ২টা। আধ ঘণ্টা আগেই জনা পনেরো সশস্ত্র দুষ্কৃতীর চড়-থাপ্পড় খেতে হয়েছে তাঁদের। শুনতে হয়েছে হুমকি। আর তাঁদের ‘স্যার’ অমিয় কুমার সেই দুষ্কৃতীদের উৎসাহ দিয়ে গিয়েছেন!

চুঁচুড়ার হুগলি আইটিআই-তে কারিগরি শিক্ষা নিতে এসে যে এমন অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হবে তা কল্পনাও করতে পারছেন না ‘ইলেকট্রিক্যাল’ বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, এতদিন অমিয়বাবু ছাত্রীদের নানা কুপ্রস্তাব দিয়েছেন। গত ১৭ জুলাই দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানিও করেছেন। এ নিয়ে কলেজে এবং থানায় অভিযোগ জানানোয় বেশ কিছু দিন ধরে তিনি হুমকি দিচ্ছিলেন এবং নানা ভাবে হেনস্থা করছিলেন। কিন্তু এ দিন যে ভাবে ফোনে দুষ্কৃতীদের ডেকে এনে হামলা করালেন, তা ভাবা যাচ্ছে না।

কিন্তু বছর বাহান্নর অমিয়বাবু একটা ফোনেই কী করে দুষ্কৃতীদের সাহায্য পেলেন?

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে, কলেজের ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকদের একাংশ জানিয়েছেন, অমিয়বাবু হুগলি স্টেশন সংলগ্ন কানাগড় এলাকার বাসিন্দা। ওই এলাকাটিতে অনেক সমাজবিরোধী থাকে। ফলে, তাদের সঙ্গে যোগযোগ তৈারি করতে অমিয়বাবুকে বিশেষ কষ্ট করতে হয়নি বলেই মত অনেকের। পুলিশও মানছে, কানাগড়ে অনেক সমাজবিরোধীর আস্তানা। মাঝেমধ্যেই ওই এলাকায় অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছে তারা।

জেলা সদরের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ঘটনায় বিরোধীরা সরব হয়েছে। তাদের বক্তব্য, কোনও প্রত্যন্ত গ্রাম নয়। যেখানে হাত বাড়ালেই পুলিশ, প্রশাসনকে ছোঁওয়া যায় সেখানে এক শিক্ষক কী ভাবে শিক্ষাঙ্গনে ওই ঘটনা ঘটাতে সাহস পেলেন?

রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘অভিযোগ যদি সত্যি হয়, তা হলে বলব ভয়ঙ্কর ঘটনা। রাজ্যে কী পরিস্থিতি এল? শিক্ষকের নামও জড়িয়ে যাচ্ছে এই সব অভিযোগে। আইনশৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতি হয়েছে। কোথায় চলেছি আমরা? এ সব তো অন্য রাজ্যে হয় শুনেছি।’’ ঘটনার পিছনে ‘তৃণমূল-যোগ’ রয়েছে বলে মনে করেন বিজেপি নেতা স্বপন পাল। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ কি হামলাকারীদের ধরবে? দিনেদুপুরে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে শাসকদলের মদত ছাড়া কেউ কলেজে আসতে সাহস পাবে?’’

স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তপন মজুমদার বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে আইটিআইয়ের পড়ুয়ারা যোগাযোগ করেছিলেন। পুলিশকে বলব, যারা কলেজে ঢুকে মস্তানি করেছে, তাদের গ্রেফতার করতে। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে। দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তি হবেই। ’’কিন্তু কোনও আশ্বাসেই ছাত্রছাত্রীদের আতঙ্ক কাটছে না।

ITI Hooghly Unrest Beaten Up Student Teacher হুগলি আইটিআই
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy