Advertisement
E-Paper

ফেসবুকে আশঙ্কার পোস্ট শিক্ষিকার

বিদ্যালয় সূত্রের খবর, একাদশ শ্রেণিতে শ’দেড়েক ছাত্রী পরীক্ষা দিয়েছিল। গত ৯ এপ্রিল রেজাল্ট বেরনোর পর দেখা যায় ৪৬ জন ফেল করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৯ ০১:৪০
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

একাদশ শ্রেণিতে অকৃতকার্য ছাত্রীদের পাশ করানোর দাবিতে পড়ুয়া-অভিভাবকদের পাশাপাশি রাজনৈতিক চাপের অভিযোগ উঠল। বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে প্রাণনাশের আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা

স্বাতী চক্রবর্তী।

হুগলির রিষড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই ঘটনায় শোরগোল পড়েছে। প্রধান‌ শিক্ষিকা অবশ্য সাফ জানিয়েছেন, ওই মেয়েরা খুবই কম নম্বর পেয়েছে। তাদের পাশ করানো অসম্ভব।

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক সুব্রত সেন বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষিকার ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি। আগামীকাল এক আধিকারিককে স্কুলে পাঠাব। প্রাথমিক ভাবে উত্তরপত্র দেখব। সেইমতো পদক্ষেপ করা হবে।’’

বিদ্যালয় সূত্রের খবর, একাদশ শ্রেণিতে শ’দেড়েক ছাত্রী পরীক্ষা দিয়েছিল। গত ৯ এপ্রিল রেজাল্ট বেরনোর পর দেখা যায় ৪৬ জন ফেল করে। ওই মেয়েদের অভিভাবকদের একাংশ খাতা দেখতে চান। পরে পাশ করানোর দাবিতে প্রধান শিক্ষিকা স্বাতী চক্রবর্তী-সহ অন্যদের ঘেরাও

করেন অভিভাবকরা।

রিষড়া থানার পুলিশ অবশ্য পরিস্থিতি সামলায়। স্কুল কর্তৃপক্ষ নতিস্বীকার না করে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদে রেজাল্ট পাঠিয়ে দেন। ইতিমধ্যে নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকায় স্কুল ছুটি পড়ে যায়।

অভিভাবকরা অবশ্য ক্ষান্ত হননি। গত কয়েক দিন ধরে তাঁরা মেয়েদের পাশ করাতে রিষড়া পুরসভায় দরবার শুরু করেন। সোমবার চার তৃণমূল কাউন্সিলর স্কুলে যান। স্কুল বন্ধ ছিল। অভিযোগ, কাউন্সিলরদের তরফে প্রধান শিক্ষিকাকে ফোন করে অকৃতকার্য মেয়েদের পাশের আর্জি জানানো হয়। এক পুরকর্মীও

ফোন করেন।

প্রধান শিক্ষিকার দাবি, এক পার্শ্বশিক্ষক জানান, অভিভাবকরা তাঁর ফ্ল্যাটে চড়াও হতে পারেন। স্বাতীদেবী বলেন, ‘‘গোটা পরিস্থিতিতে ভয় পেয়ে যাই। শ্রীরামপুর থানায় অভিযোগ জানাই। পুলিশ নিরাপত্তার আশ্বাস দেয়। কেউ অবশ্য আসেননি।’’ রাতে তিনি ফেসবুকে প্রাণনাশের আশঙ্কার কথা জানিয়ে লেখেন, অভিভাবকরা ফ্ল্যাট আক্রমণের হুমকি দিয়েছেন। রেজাল্ট সংসদে জমা পড়ে গিয়েছে। অকৃতকার্য মেয়েদের পাশ করানোর উপায় তাঁর জানা নেই। ওই পোস্ট ভাইরাল হয়ে যায়। ঘটনার নিন্দা করেন অনেকেই।

তৃণমূল কাউন্সিলর মনোজ গোস্বামী বলেন, ‘‘ছাত্রী-অভিভাবকরা আমাদের মধ্যস্থতার দাবি জানাচ্ছেন। তাই স্কুলে যাই। স্কুল বন্ধ থাকায় প্রধান শিক্ষিকাকে ফোনে বলি, পাশ-ফে‌ল আপনাদের উপরে। অভিভাবকদের ডেকে বিষয়টি বুঝিয়ে দিন‌। চাপ দেওয়ার প্রশ্নই নেই।’’ পুরপ্রধান বিজয় মিশ্রের বক্তব্য, ‘‘পাশফেল নিয়ে পুরসভার কোনও বক্তব্য নেই। আমাদের কেউ স্কুলে গেলে বা অনুরোধ করলে, অনুচিত হয়েছে।’’ একাধিক কাউন্সিলর জানান, পাশের দাবি সমর্থনযোগ্য নয়। পাশাপাশি তাঁদের বক্তব্য, প্রধান শিক্ষিকার প্রাণনাশের আশঙ্কা অমূলক। বিদ্যা‌লয় পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা রিষড়া শহর তৃণমূল সভাপতি হর্ষপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য জানা যায়নি। তিনি ফোন ধরেননি।

মঙ্গ‌লবারেও ছাত্রী এবং অভিভাবকরা পুরসভায় যান। এক অভিভাবক বলেন, ‘‘এত মেয়ের ফেল করাটা স্কুলেরও দায়। স্কুল কর্তৃপক্ষ চেষ্টা কর‌লেই ওদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হবে ন‌া। ওঁরা আমাদের কথা না শোনাতেই পুরসভার দ্বারস্থ হচ্ছি। প্রধান শিক্ষিকা ফেসবুকে খুব খারাপ কথা লিখেছেন। ওঁকে আক্রমণ করব কেন?’’

সম্প্রতি কলকাতার বেথুন কলেজিয়েট স্কুলেও একই দবিতে বিক্ষোভ হয়। তখনই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, অকৃতকার্য পড়ুয়াদের দবি মেনে নেওয়া হবে না।

পুলিশের বক্তব্য, প্রধান শিক্ষিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখলেও পুলিশে কোনও অভিযোগ করেননি। শিক্ষিকাকে প্রাণে মেরে ফেলা হতে পারে, এমন আশঙ্কা ঠিক নয়।

Crime Threat Facebook
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy