চিত্রগুপ্তর পুজো আরামবাগের বাতানলে— ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
জন্ম-মৃত্যু আর পাপ-পুণ্যের হিসাবরক্ষক চিত্রগুপ্তর কপালে পড়ল ফোঁটা।
সোমবার, ভাইফোঁটার দিন পরম্পরা মেনে চিত্রগুপ্তর পুজো হল আরামবাগের বাতানল গ্রামের কায়স্থপাড়ায়। গত ১১২ বছর ধরে সেখানে পুজো পেয়ে আসছেন চিত্রগুপ্ত। রীতি মেনে তাঁর মূর্তির কপালে ফোঁটা দেওয়ার পরে ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দেন গ্রামের বোনেরা।
কথিত রয়েছে, চিত্রগুপ্তকে সন্তুষ্ট রাখতেই সেখানে এই পুজোর প্রচলন হয়েছিল। যদিও গ্রামবাসীর একাংশের দাবি, কায়স্থদের আদি পিতা হওয়ায় পুজো করা হয় চিত্রগুপ্তকে। ফি বছর ভাইফোঁটার দিন চিত্রগুপ্তর পুজোয় মেতে ওঠেন গ্রামের বাসিন্দারা। ভিড় হয় ভালই। আলোয় সাজানো হয় গোটা পাড়া।
চিত্রগুপ্তের মূর্তির চারটি হাত। এক হাতে গদা। আর এক হাতে তরোয়াল। বাকি দু’টি হাতে দোয়াত ও কলম। চিত্রগুপ্তর বাহন এখানে মোষ। প্রতিমাশিল্পী দাশরথি জানা বলেন, “চিত্রগুপ্তের মূর্তি ঠিক কেমন, তা সম্পর্কে স্পষ্ট কোনও ধারণা আমাদের নেই। তাই কৃষ্ণ অথবা কার্তিকের আদলে মূর্তি গড়া হয়।”
পুজোর বিশেষ নিয়ম-কানুনও নেই। নারায়ণ মন্ত্রেই পুজো হয় বলে জানালেন পুরোহিত মৃত্যুঞ্জয় মজুমদার।
গোটা রাজ্যে একমাত্র বাতানলেই চিত্রগুপ্তর পুজো হয় বলে দাবি পুজো কমিটির। কমিটির সদস্য শান্তিপ্রিয় দেব সরকার বলেন, “১৯০৮ সালে চিত্রগুপ্তর পুজো শুরু হয়েছিল। একই সময়ে কলকাতার রাধানাথ মল্লিক লেনেও চিত্রগুপ্তর পুজো শুরু হয়। কিন্তু ৬০ বছর পরে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। আমরা পুজো টিকিয়ে রেখেছি।”
শান্তিপ্রিয়বাবু বলেন, “কায়স্থদের আদি পিতা হলেন চিত্রগুপ্ত। তা ছাড়াও তিনি যমরাজের দরবারে মানুষের পাপ-পুণ্যের হিসাবও রাখেন। স্বর্গ না নরক— মৃত্যুর পরে মানুষ কোথায় যাবেন, তা নির্ভর করে চিত্রগুপ্তর উপরে। তাই তাঁকে সন্তুষ্ট রাখতে এই পুজোর প্রচলন হয়ে থাকতে পারে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy