বছর আটেকের এক বালকের মৃত্যুতে গাফিলতির অভিযোগে বুধবার বিকেলে ভাঙচুর চালানো হল হুগলির শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের কানাইপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। উল্টে দেওয়া হয় টেবিল-চেয়ার। তাণ্ডবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন রোগীরা। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গাফিলতির অভিযোগ মানেননি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ কানাইপুরের চক্রবর্তীনগরের বাসিন্দা শুভজিৎ বিশ্বাস নামে ওই ছেলেটি বাড়ির বাইরে খেলছিল। সেই সময় মিটার-বক্স সমেত একটি পাঁচিলের একাংশ ভেঙে পড়ায় সে জখম হয়। কানাইপুর গ্রামীণ হাসপাতালে তার চিকিৎসা হয়।
ছেলেটির বাড়ির লোকের অভিযোগ, বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর থেকেই তার অবস্থার অবনতি হয়। সে বমি করতে থাকে। ফের তাকে কানাইপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা দেখে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক শুভজিৎকে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। ওয়ালশ থেকে তাকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে পৌঁছতেই বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ ছেলেটি মারা যায়। খবর এলাকার চাউর হতেই কানাইপুর হাসপাতালের গাফিলতিতে ছেলেটি মারা গিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। গ্রামবাসীরা হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। শুরু হয় তাণ্ডব। ভেঙে দেওয়া হয় হাসপাতালের একাধিক জানলার কাচ।
শুভজিতের পরিবারের অভিযোগ, প্রথম বার চিকিৎসক তাকে ভাল ভাবে দেখেননি। তার শারীরিক অবস্থা কতটা জটিল, তা বুঝতে পারেননি। ফলে, চিকিৎসার গাফিলতিতেই এত বড় ঘটনা ঘটে গেল। পক্ষান্তরে, বিএমওএইচ অমিত সরকার জানান, প্রথম বার ছেলেটি হেঁটেই হাসপাতালে ঢোকে। সে এবং তার বাড়ির লোকজন জানিয়েছিলেন, ছেলেটির পায়ে চোট লেগেছে। কেটে-ছড়ে গিয়েছে। তাঁদের কথামতো চিকিৎসা হয়। অ্যান্টিবায়োটিকও দেওয়া হয়। বিএমওএইচ বলেন, ‘‘পরের বার ছেলেটি বমি করতে থাকায় উপসর্গ বুঝে উন্নত পরিষেবাযুক্ত হাসপাতালে পাঠানো হয়।’’
পুলিশ জানিয়েছে, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। মৃতদেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত ছেলেটির পরিবারের তরফে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।