Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

জমা জলে কিলবিল করছে সাপ, ত্রস্ত বাসিন্দারা

গ্রাম বা কোনও ছোটখাটো মফস্সল শহর নয়। এ চিত্র খাস হাওড়া শহরের। হাওড়া পুরসভার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের জগাছা থানার ষষ্ঠীতলার জলা এলাকায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সময়ে বৃষ্টির জেরে ওই এলাকায় জল জমে যায়।

বেহাল: ষষ্ঠীতলায় এখনও জমে জল (বাঁ দিকে)। মঙ্গলবার সেখানে মেরে ফেলা হয় এই সাপটিকে। নিজস্ব চিত্র

বেহাল: ষষ্ঠীতলায় এখনও জমে জল (বাঁ দিকে)। মঙ্গলবার সেখানে মেরে ফেলা হয় এই সাপটিকে। নিজস্ব চিত্র

দেবাশিস দাশ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:৪৫
Share: Save:

বুলবুল চলে গিয়েছে দিন দশেক আগে। তবে রয়ে গিয়েছে আতঙ্ক আর দুর্ভোগ। জমা জল আর বিষাক্ত সাপের উৎপাতে আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা। বন দফতরকে জানিয়েও কোনও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ডেঙ্গির আতঙ্ক। তাই ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা।

গ্রাম বা কোনও ছোটখাটো মফস্সল শহর নয়। এ চিত্র খাস হাওড়া শহরের। হাওড়া পুরসভার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের জগাছা থানার ষষ্ঠীতলার জলা এলাকায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সময়ে বৃষ্টির জেরে ওই এলাকায় জল জমে যায়। সেই জল আজ পর্যন্ত নামেনি। ওই জমা জলে ঘুরে বেড়াচ্ছে চন্দ্রবোড়া, কেউটের মতো বিষাক্ত সব সাপ। সেগুলি কারও ঘরে, কারও বা শৌচাগারে ঢুকে পড়ছে। জেলা বন দফতরকে বারবার খবর দেওয়া হলেও কেউ আসেননি বলে অভিযোগ। বাসিন্দারা জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাস্তায় ফুট পাঁচেকের একটি চন্দ্রবোড়া সাপকে দেখতে পান তাঁরা। খবর দেওয়া হয় বন দফতরে। কিন্তু সেখান থেকে ঘটনাস্থলে কেউ না আসায় সাপটিকে বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে মেরে ফেলা হয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত এক মাসে সেখানে আট জনকে সাপে কামড়েছে। তাঁদের মধ্যে দু’জন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের অভিযোগ, জমা জল সরাতে এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলর থেকে শুরু করে প্রশাসনের সর্বস্তরে অভিযোগ জানানো হয়েছে। এক দিকে সাপের কামড় এবং অন্য দিকে ডেঙ্গির আতঙ্কে অতিষ্ঠ মানুষ। অনেকেই ওই এলাকার ভাড়া বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র বাড়ি ভাড়া নিচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা কুতুবুদ্দিন শেখ বলেন, ‘‘জমা জলে সাপের উপদ্রব মারাত্মক ভাবে বেড়েছে। সেই সঙ্গে চার দিকে ডেঙ্গিও হচ্ছে। সাপের ভয়ে স্কুল-কলেজে যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে পড়ুয়াদের। জগাছা থানা-সহ বন দফতরকে বারবার জানানো হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি।’’

বাসিন্দাদের এই অভিযোগ অবশ্য মানতে রাজি নয় জেলা বন দফতর। বন দফতরের এক কর্তার দাবি, ‘‘আমাদের আইন অনুযায়ী, কোনও সাপ যদি বাড়ির বাইরে থাকে, তা হলে সেই সাপ ধরা হয় না। শুধুমাত্র ঘরে ঢুকলে তা উদ্ধার করা হয়। আর ওই এলাকায় যে সাপের উপদ্রব বেড়েছে এবং সাপের কামড়ে লোকজন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, এমন অভিযোগ আগে কেউ করেননি। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি সাপ বেরোনোর খবর ওই এলাকা থেকে ফোনে জানানো হয়েছিল।’’

জেলার অতিরিক্ত বনাধিকারিক শ্রীকান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘ওই এলাকায় সাপের উপদ্রব বেড়েছে বলে আমরা জানতাম না। কেউ জানাননি। তবে কাল সন্ধ্যায় ফোন আসার পরে কেন কেউ যাননি, তা নিয়ে অবশ্যই তদন্ত হবে।’’ এলাকার প্রাক্তন সিপিএম কাউন্সিলর আজবাহার আলি মিদ্দে বলেন, ‘‘ওই এলাকায় চাষের নিচু জমিতে লোকজন বাড়ি করায় জল জমলে বেরোয় না। গত এক বছর ধরে পুরসভায় কোনও নির্বাচিত বোর্ড নেই। তাই এলাকার পরিস্থিতি দেখার মতো লোকও নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Water Logging Snake Howrah Cyclone Bulbul
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE