Advertisement
E-Paper

শ্বশুরবাড়িতে অত্যাচার, রাস্তায় ‘অনশন’ যুবতীর

অত্যাচারের কথা আগেই শ্রীরামপুর মহিলা থানায় জানানো হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, কিছুদিন আগেই ওই যুবতীর স্বামী তন্ময়কে মহিলা থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৯ ০১:৩৩
শ্বশুরবাড়ির এলাকায় বাবার সঙ্গে আমরণ অনশনে গৃহবধূ মণিদীপা ঘোষ সাধুখাঁ। —নিজস্ব চিত্র।

শ্বশুরবাড়ির এলাকায় বাবার সঙ্গে আমরণ অনশনে গৃহবধূ মণিদীপা ঘোষ সাধুখাঁ। —নিজস্ব চিত্র।

তাঁর বিয়ে হয়েছে মাস পাঁচেক আগে। কিন্তু পণ দিতে না-পারায় স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ তুলে কয়েক সপ্তাহ আগে যুবতী ফিরে গিয়েছিলেন বাপের বাড়িতে। সসম্মানে সংসার করতে চেয়ে শনিবার সেই যুবতী বাবাকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ির সামনেই রাস্তায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা ‘অনশন’ করলেন। শেষে পুলিশ গিয়ে তাঁকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে আসে।

এ দিন রাত পর্যন্ত বৈদ্যবাটীর এনসিএম রোডের বাসিন্দা, মণিদীপা সাধুখাঁ অবশ্য শ্বশুরবাড়ির কারও বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেননি। তাঁর দাবি, অত্যাচারের কথা আগেই শ্রীরামপুর মহিলা থানায় জানানো হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, কিছুদিন আগেই ওই যুবতীর স্বামী তন্ময়কে মহিলা থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তিনি আসেননি। ওই যুবতীকে এফআইআর করতে বলা হয়েছে। চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে। ফের কোনও অশান্তি হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

মণিদীপার উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে শনিবার রাত আটটা নাগাদ জিটি অবরোধ করেন সিপিএমের মহিলা সমিতির সদস্যরা।

মণিদীপা বলেন, ‘‘সংসার করার তাগিদে শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার মুখ বুঝে সহ্য করেছি। আর পারছিলাম না। তাই অনশনের পথ বেছে নিই। শুধু শান্তিতে সংসার করতে চাই।’’ পণের দাবি এবং অত্যাচারের কথা অস্বীকার করে মণিদীপার শ্বশুর বাবলু সাধুখাঁর দাবি, ‘‘গোলমাল ছেলে-বৌমার। দু’জনের কথা কাটাকাটি হতো। দাম্পত্য কলহে নাক গলানো উচিত নয় বলেই কিছু বলতাম না।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মণিদীপার বাপের বাড়ি মগরায়। তাঁর স্বামী তন্ময় পেশায় স্কুল শিক্ষক। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ি থেকে মণিদীপার বাপের বাড়ির কাছে ৫ লক্ষ টাকা পণ দাবি করা হয়। কিন্তু যুবতীর বাবা সেই টাকা দিতে পারেননি। এ জন্য শ্বশুরবাড়িতে মণিদীপার উপরে অত্যাচার চলছিল বলে অভিযোগ। কিছুদিন আগে তন্ময় জোর করে একটি তরল খাইয়ে দেওয়ার পর থেকেই মণিদীপা অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকেন বলে অভিযোগ। এরপরেই মণিদীপাকে বাপেরবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।

শনিবার সকালে শ্বশুরবাড়ির সামনের গলির ধারে চাদর পেতে মণিদীপা এবং তাঁর বাবা তরুণকান্তিবাবুকে বসে থাকতে দেখে অনেকেই অবাক হন। মণিদীপার হাতে ছিল অনশনের পোস্টার। খবর যায় পুলিশে। পুলিশ প্রথমে অবরোধ তুলতে পারেনি। মণিদীপা নিজের দাবির কথা জানান। পুলিশ তাঁর শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে স্বামী বা শ্বশুরকে পায়নি। ঘরে বৃদ্ধা শাশুড়ি ছিলেন। পরে পুলিশ পাড়ার একটি বাড়িতে মণিদীপার শ্বশুরের খোঁজ পায়। তাঁকে সঙ্গে করে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় পুলিশ মণিদীপাকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে আসে।

যুবতীর বাবার ক্ষোভ, ‘‘এক শিক্ষকের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। পণপ্রথা নিয়ে যখন এত প্রচার চলছে, সেখানে একজন শিক্ষক হয়ে কী করে পণের দাবি করে?’’

Crime Domestic Violenc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy