Advertisement
E-Paper

মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস সত্ত্বেও কাজ থমকে সবুজ দ্বীপে

বলাগড়ের সবুজ দ্বীপে পর্যটকেরা যেতে পারছেন কই? কবে থেকে হুগলি জেলার এই পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়া হবে, তারও কোনও নিশ্চিত দিশা মিলছে না। আগাছার ভরে গিয়ে নষ্ট হতে বসেছে কটেজগুলি।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৯ ০২:০৩
ছবি: সুশান্ত সরকার

ছবি: সুশান্ত সরকার

রাস্তা হয়েছে। নৌকা চলাচলের জেটি হয়েছে। বিদ্যুৎ, পানীয় জল পৌঁছেছে। তৈরি হয়েছে ২১টি সুন্দর কটেজও।

তবু বলাগড়ের সবুজ দ্বীপে পর্যটকেরা যেতে পারছেন কই? কবে থেকে হুগলি জেলার এই পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়া হবে, তারও কোনও নিশ্চিত দিশা মিলছে না। আগাছার ভরে গিয়ে নষ্ট হতে বসেছে কটেজগুলি।

অথচ, সম্প্রতি তারকেশ্বরে পরিষেবা বিতরণ অনুষ্ঠানে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, জেলার পর্যটন মানচিত্রে বলাগড়ের সবুজ দ্বীপ নতুন ঠিকানা হতে যাচ্ছে। ঢেলে সাজা হচ্ছে জায়গাটি। গত কয়েক বছরেও মুখ্যমন্ত্রী যতবারই হুগলিতে প্রশাসনিক বৈঠক বা কোনও সরকারি অনুষ্ঠানে এসেছেন, সবুজ দ্বীপের নাম তাঁর কথায় ঘুরে-ফিরে এসেছে। কিন্তু বাস্তবে থমকে গিয়েছে ওই পর্যটন কেন্দ্রের কাজ। যা নিয়ে স্থানীয় লোকজন রীতিমতো হতাশ। তাঁরা ভেবেছিলেন, সবুজ দ্বীপে পর্যটন চালু হলে এলাকার অর্থনীতি চাঙ্গা হবে।

কেন থমকে কাজ?

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, যে নির্মাণকারী সংস্থা ওই দ্বীপে কাজ করছিল, তাঁদের কাজের গতি খুব মন্থর ছিল। তাঁদের বার বার সরকারি ভাবে সতর্ক করা হয়। কাজের সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু তা রক্ষিত না-হওয়ায়, ওই সংস্থাকে ভাবে বাতিল করা হয়। কিন্তু সংস্থাটি আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায় সবুজ দ্বীপের কাজ থমকে গিয়েছে। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘সবুজ দ্বীপের বর্তমান পরিস্থিতির কথা সম্ভবত মুখ্যমন্ত্রীকে সঠিক ভাবে পৌঁছে দেওয়া হয়নি। সে কারণেই তিনি পরিষেবা বিতরণের মঞ্চে ওই মন্তব্য করেন।’’ বলাগড়ের বিধায়ক অসীম মাঝি অবশ্য বলেন, ‘‘ওখানে যাতে দ্রুত কাজ হয়, সে জন্য পর্যটন দফতরকে চিঠি দিয়েছি।’’ পর্যটন দফতরের প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন বলেন, ‘‘ওখানে কাজ চলছে। কিছুদিনের মধ্যে তা শেষ হবে। আগামী শীতের মরসুমে পর্যটকেরা সবুজ দ্বীপে যেতে পারবেন বলে আশা করছি।’’

১৯৭৮ সালের প্রবল বন্যার পর বলাগড়ের গঙ্গায় অন্তত ৩০০ একর বিস্তৃত চর জাগতে শুরু করে। সেখানে প্রচুর গাছপালা জন্মানোয় ক্রমেই সেটির নাম হয় সবুজ দ্বীপ। বাম আমলে, নয়ের দশকের গোড়ায় শীতের সময় হুগলি জেলা পরিষদ দ্বীপটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করায় মানুষের সাময়িক বেড়ানো ও বনভোজনের নতুন ঠিকানা হয়ে ওঠে সবুজ দ্বীপ। পারাপারের জন্য খেয়াও চালু হয়। তবে তখন পুরোটাই ছিল শীতের সময়টুকুকে কেন্দ্র করে। বর্ষায় জায়গাটি দুর্গম হয়ে পড়ে। রাজ্যে পালাবদলের পর সবুজ দ্বীপকে পর্যটনের মানচিত্রে নিয়ে আসার ভাবনাচিন্তা শুরু হয়। সরকারি এবং বে-সরকারি যৌথ উদ্যোগে (পিপিপি মডেল) সেখানে কাজ শুরু হয়। পর্যটন দফতর পরিকাঠামো তৈরির কাজে হাত দেয়। সোমরা পঞ্চায়েতে কোড়লার মোড় থেকে গঙ্গার ধার পর্যন্ত রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হয়। তৈরি হয় নৌকা চলাচলের জেটি। সবুজ দ্বীপে বিদ্যুৎ, পানীয় জলও পৌঁছয়। ২০১৭ সালে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংস্থা পর্যটকদের রাত্রিবাসের জন্য ২১টি সুন্দর, আধুনিক কটেজ তৈরি করে হয়।

স্থানীয়েরা যখন আশা করছিলেন, এ বার সাধারণ মানুষের জন্য সবুজ দ্বীপ এবার সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হবে, তখনই সব কিছু থমকে যায়। দ্রুত প্রকল্পটি রূপায়ণের দাবি তুলেছেন তাঁরা। একই সঙ্গে তাঁদের অভিযোগ, সবুজ দ্বীপে সরকারি নজরদারি না-থাকায় গাছ কাটা হচ্ছে। অসামাজিক কাজ বাড়ছে। মাটি কেটে স্থানীয় ইটভাটাগুলিকে বেচে দিচ্ছে মাটি-মাফিয়ারা। এ সব বন্ধ না-হলে দ্বীপটা ধ্বংস হয়ে যাবে বলে তাঁদের আশঙ্কা।

Travel Travel and Tourism Balagarh Sabuj Dweep Tourist Point
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy