Advertisement
E-Paper

অটো-দৌরাত্ম্যের প্রতিবাদ, আক্রান্ত সিভিক ভলান্টিয়ার

থানা তাঁকে দিয়েছিল যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে পড়ে একটি অটোর যাত্রী তোলার প্রতিবাদ করেছিলেন। সেই ‘অপরাধে’ নিজের বাড়িতেই আক্রান্ত হলেন উলুবেড়িয়ার এক সিভিক ভলান্টিয়ার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৩৮
মারধরের ঘটনায় ধৃত দু’জনকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

মারধরের ঘটনায় ধৃত দু’জনকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

থানা তাঁকে দিয়েছিল যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে পড়ে একটি অটোর যাত্রী তোলার প্রতিবাদ করেছিলেন। সেই ‘অপরাধে’ নিজের বাড়িতেই আক্রান্ত হলেন উলুবেড়িয়ার এক সিভিক ভলান্টিয়ার।

শনিবার রাতে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে শুধু মারধরই নয়, দলবল নিয়ে ফতেপুরে তাঁর বাড়িতে ভাঙচুর, তাঁর মায়ের শ্লীলতাহানি এবং তাঁদের কাছ থেকে হুমকি দিয়ে অটোর ভাঙা ‘ব্যাকলাইট’ সারানোর জন্য ১২০০ টাকা আদায়েরও অভিযোগও উঠল উলুবেড়িয়া স্টেশন রোডের ওই অটোর চালক শেখ রফিক এবং অটোর মালিক শেখ ফিরোজের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে শেখ রফিক এবং শেখ ফিরোজকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রফিক মহকুমা শাসকেরও (উলুবেড়িয়া) গাড়ি চালাত।

পুলিশ জানায়, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রফিক ফতেপুরের এবং ফিরোজ পারিজাত এলাকার বাসিন্দা। দু’জনের বিরুদ্ধে মারধর, শ্লীলতাহানি, ভাঙচুর ও ছিনতাইয়ের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। সোমবার ধৃতদের উলুবেড়িয়া আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের সাত দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

বছর খানেক ধরে উলুবেড়িয়া স্টেশন রোড এবং ওটি রোডের সংযোগস্থলে দাঁড়িয়ে তিনি যান নিয়ন্ত্রণের কাজ করছেন। কিন্তু শনিবার দুপুরে যান নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে রাতে তাঁকে যে আক্রান্ত হতে হবে, তা স্বপ্নেও ভাবেননি ওই সিভিক ভলান্টিয়ার। ভয়ে তিনি দু’দিন কাজেও যোগ দেননি। তিনি বলেন, “ভয় করছে। আমার অপরাধ, আমি অটোটিকে সরে যেতে বলি। চালক কথা না শোনায় লাঠি দিয়ে অটোর পিছনে মারায় একটি আলো ভেঙে যায়। তাই অমন হামলা হল। পরিস্থিতি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদের জানিয়েছি। কয়েক দিন পরে ডিউটিতে যোগ দেব।”

কী হয়েছিল শনিবার দুপুরে?

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যস্ত এলাকা হওয়ায় উলুবেড়িয়া স্টেশন রোড এবং ওটি রোডে সব সময়েই যানজট থাকে। সেই যানজট কাটানোর জন্য দুই রাস্তার সংযোগস্থলে প্রতিদিনের মতোই শনিবার দুপুরে কাজ করছিলেন ওই সিভিক ভলান্টিয়ার। অভিযোগ, রফিক তার অটোয় যাত্রী তোলার জন্য রাস্তার মাঝেই দাঁড়িয়ে পড়ে। ফলে, যানজট বেড়ে যায়। সিভিক ভলান্টিয়ার রফিককে দ্রুত সরে যেতে বলেন। কিন্তু রফিক তা শোনেনি। তাঁর লাঠির আঘাতে রফিকের অটোর পিছনে আলো ভাঙে। রফিক সিভিক ভলান্টিয়ারকে হুমকি দিয়ে তখনকার মতো সরে গেলেও রাত ১০টা নাগাদ ওই হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সিভিক ভলান্টিয়ার ও তাঁর মায়ের চিত্‌কারে প্রতিবেশীরা চলে এলে রফিকেরা পালায়।

উলুবেড়িয়া স্টেশন রোড এবং ওটি রোডে অটোর দৌরাত্ম্য নতুন নয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দু’টি রাস্তা প্রায় অটো-চালকদের দখলেই চলে যায়। যত্রতত্র অটো দাঁড় করিয়ে যাত্রী তোলার জন্য রেষারেষির জন্য যানজটও প্রতিদিনের ঘটনা। ঘটে দুর্ঘটনাও। বেআইনি ভাবে পারমিটহীন অটোও দু’টি রাস্তায় চলে বলে অভিযোগ রয়েছে নিত্যযাত্রীদের।

সিভিক ভলান্টিয়ারের বাড়িতে হামলার নিন্দা করা হলেও ওই দুই রুটের অটো-চালকেরা যত্রতত্র গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী তোলার অভিযোগ মানেননি। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, পুলিশই নানা ভাবে হেনস্থা ও জরিমানা করছে। তাঁরা প্রশাসনের কাছে নিয়ম-শৃঙ্খলা বলবত্‌ করার দাবি তুলেছেন। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, অটো সংগঠনের সঙ্গে এবং প্রশাসনিক স্তরেও এ নিয়ে আলোচনা হবে।

southbengal auto civic volunteer attacked uluberia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy