Advertisement
১৯ মে ২০২৪
হিন্দুস্তান ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্ডাস্ট্রিজ

দাবি মেনে বাড়ল মজুরি, কাজে যোগ দিচ্ছেন ঠিকা শ্রমিকেরা

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে প্রায় আড়াই মাস ধরে কাজ বন্ধ রেখে অবস্থান করছিলেন ডানকুনির রেলের ওয়াগন কারখানার সাতশো ঠিকা শ্রমিক। শুক্রবার সরকারি দফতরে আলোচনার টেবিলে বসে তাঁদের দাবি মেনে নিলেন কর্তৃপক্ষ। ফলে, ঈদ আর পুজোর মুখে হাসি ফুটল শ্রমিকদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৪ ০১:৪৫
Share: Save:

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে প্রায় আড়াই মাস ধরে কাজ বন্ধ রেখে অবস্থান করছিলেন ডানকুনির রেলের ওয়াগন কারখানার সাতশো ঠিকা শ্রমিক। শুক্রবার সরকারি দফতরে আলোচনার টেবিলে বসে তাঁদের দাবি মেনে নিলেন কর্তৃপক্ষ। ফলে, ঈদ আর পুজোর মুখে হাসি ফুটল শ্রমিকদের।

প্রশাসন সূত্রের খবর, ডানকুনির বামুনারিতে দিল্লি রোডের ধারে ‘হিন্দুস্তান ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্ডাাস্ট্রিজ’ নামে ওই কারখানায় স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় এক হাজার শ্রমিক কাজ করেন। অস্থায়ী শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন ধরেই মজুরি বাড়ানোর দাবি করছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ওই দাবি না-মানায় আন্দোলনে নামেন ঠিকা শ্রমিকেরা। মে মাসের গোড়া থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন তাঁরা। কাজ বন্ধ রেখে কারখানার গেটের বাইরে তাঁরা অবস্থান শুরু করেন রাজ্যের শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র নেতৃত্বে। অত ঠিকা শ্রমিক কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় কারখানার উৎপাদন প্রায় তলানিতে নেমে আসে। শেষ পর্যন্ত বিষয়টিতে শ্রম দফতর হস্তক্ষেপ করে। তবে, প্রথম দিকে কোনও রফাসূত্র না-মিললেও শুক্রবার বরফ গলল।

শ্রম দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে শ্রীরামপুরের সহকারী শ্রম কমিশনার শান্তনু সেনের ঘরে বৈঠক হয়। সেখানে মালিকপক্ষ ছাড়াও কারখানার আইএনটিটিইউসি নেতৃত্ব এবং ঠিকাদার উপস্থিত ছিলেন। ওই কারখানায় কাজ জানার ভিত্তিতে ঠিকা শ্রমিকদের দিনপ্রতি মজুরি ছিল যথাক্রমে ১১৮ টাকা, ১২৩ টাকা এবং ১২৮ টাকা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ওই তিনটি ক্ষেত্রের শ্রমিকরা এ বার থেকে যথাক্রমে দৈনিক ১৫৫ টাকা, ১৬০ টাকা এবং ১৭০ টাকা পাবেন। কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দিতেই জটিলতা কাটে। আজ, শনিবার থেকেই আন্দোলনকারী ঠিকা শ্রমিকদের কাজে যোগ দেওয়ার কথা।

কারখানা কর্তৃপক্ষের আশা, শনিবার থেকেই উৎপাদন ফের পুরোদমে চালু হয়ে যাবে। চারদিকে বিভিন্ন কারখানায় জটিলতা রয়েছে। প্রশাসনের কাছে তা চিন্তায় বিষয়। ডানকুনির কারখানাটিতে রফাসূত্র মেলায় প্রশাসন স্বস্তির নিশ্বাঃস ফেলেছে। শ্রীরামপুরের সহকারী শ্রম কমিশনার শান্তনুবাবু বলেন, “ওই কারখানায় কিছু সমস্যা ছিল। তা পুরোপুরি মিটে গিয়েছে। সম্প্রতি কারখানা কর্তৃপক্ষ ঠিকা শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড চালুর ব্যবস্থা করেন। আজ তা চুক্তিভুক্ত করা হল।” কারখানার আইএনটিটিইউসি সভাপতি অন্বয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সমস্যা মেটাতে সব পক্ষই ইতিবাচক ভূমিকা নিয়েছে। শ্রমিকরা ফের কোমর বেঁধে কাজে নেমে পড়বেন।”

শেখ সুরাবুদ্দিন ১৬ বছর ধরে ওই কারখানায় ঠিকা শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। তিনি বলেন, “বহু দিন ধরেই আমরা বঞ্চিত ছিলাম। ঈদের মুখে অবশেষে ভাল খবর এল।” তাঁর সহকর্মী শ্রীকান্ত হাজরা, শেখ জহিরুদ্দিনরা মনে করছেন, শ্রমিকদের আন্দোলনের জয় হল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

wages increase workers dankuni wagon factory
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE