Advertisement
E-Paper

শুধু থিম নয়, বাঁশবেড়িয়ার কার্তিক নজর টানে বৈচিত্র্যেও

দুগার্পুজো, কালীপুজো এমনকী জগদ্ধাত্রীতেও থিমের প্রতিযোগিতা চোখ ধাঁধায়। থিমের সেই লড়াই এ বার দেখা যাবে হুগলির বাঁশবেড়িয়াতেও। মাসখানেক থেকেই মাঠে নেমে পড়েছেন বিভিন্ন পুজোর উদ্যোক্তারা। আলোকসজ্জা আর মণ্ডপের থিমে কে কাকে টপকে যাবেন শুরু হয়ে গিয়েছে তার লড়াই। যেমন নজর কাড়বে মহাকালীতলার আগন্তুক।

তাপস ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৪ ০১:০০
জামাই কার্তিক।

জামাই কার্তিক।

দুগার্পুজো, কালীপুজো এমনকী জগদ্ধাত্রীতেও থিমের প্রতিযোগিতা চোখ ধাঁধায়। থিমের সেই লড়াই এ বার দেখা যাবে হুগলির বাঁশবেড়িয়াতেও।

মাসখানেক থেকেই মাঠে নেমে পড়েছেন বিভিন্ন পুজোর উদ্যোক্তারা। আলোকসজ্জা আর মণ্ডপের থিমে কে কাকে টপকে যাবেন শুরু হয়ে গিয়েছে তার লড়াই। যেমন নজর কাড়বে মহাকালীতলার আগন্তুক। গোটা মহাভারত কাব্যই তাঁরা তুলে এনেছেন মণ্ডপে বিভিন্ন মেডেলের সাহায্যে। এখানে পুজো হবে নটরাজের। ছোটদের জন্য এ বার থিম সাজিয়েছে খামারপাড়া নিউ স্টার সংঘ। তাদের উপহার ‘আলিবাবা চল্লিশ চোর’। চিচিং ফাঁক থেকে চিচিং বন্‌ধ, সমস্ত দৃশ্য মডেলের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। এখানে প্রতিমা যুগমাতার। মাঝের সড়ক জুনিয়ার সবুজ সঙ্ঘের মণ্ডপ বালির উপর মন্দির এবং পাহাড়। এখানে শিবের পুজোর আয়োজন হয়েছে। দিল্লির অক্ষরধামের আদলে মণ্ডপ নির্মাণ করেছে মিলনপল্লি ইয়ং স্টার। তাজমহলের অনুকরণে মণ্ডপ রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের। মণ্ডপ জুড়ে রাজ্যের কুটিরশিল্পকে তুলে ধরা হয়েছে এখানে। কিশোর বাহিনীর ৫০ বছরের পুজোয়। রেনেসাঁ ক্লাবের এ বারের থিম ‘নীল আকাশে ভেসে বেড়ানো’। এখানে পুজো হবে জামাই কার্তিকের। গন্ধেশ্বরী ঘাটের কাছে আবার পেল্লাই টাইটানিক দাঁড়িয়ে রয়েছে অপনাকে স্বাগত জানাতে। ২১ ফুট উচু বিরাট আকারের মহাদেব দেখা যাবে মাঝের সড়কের পুজোয়। বাঁশবেড়িয়া ব্যবসায়ী সমিতির পুজো ২০০ বছরের পুরনো। বাঁশবেড়িয়া মি‌লনী সঙ্ঘের মণ্ডপ প্লাইউডের তৈরি মন্দির। কাঁচা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির পুজোর থিম ‘সতীর দেহত্যাগ’। পুরাণের এই কাহিনী মণ্ডপে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

আলোয় সেজেছে মণ্ডপ।

গঙ্গার পাড়ে কয়েকশো বছরের পুরনো এই শহরের প্রাচীন নাম অবশ্য বংশবাটী। খামারপাড়া, শিবপুর, বাঁশবেড়িয়া এবং ত্রিবেণি এই চার অঞ্চল নিয়ে গড়ে ওঠে এই শহর। অন্য সব পুজোর আয়োজন হলেও জগদ্ধাত্রী পুজো যেমন খ্যাতি দিয়েছে চন্দননগরকে, তেমনই কার্তিক বিখ্যাত করেছে বাঁশবেড়িয়াকে। দেবতাদের সেনপতির যে এত রকম রূপ আছে তা এখানকার পুজো না দেখলে বোঝা দুষ্কর। দেবসেনাপতি থেকে জিলিপি কার্তিক, রাজা কার্তিক, অর্জুন কার্তিক, জামাই কার্তিক, জ্যাংড়া কার্তিক কত কী! কার্তিক ছাড়াও এখানকার পুজোয় দেখা যায় নটরাজ, যুগমাতা, শিব, নারায়ণ, সন্তোষী মা, গরুড় পাখি, ভারতমাতা। পুজোর জন্য রয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। আর এই কমিটির অধীনে এ বার পুজোর সংখ্যা ৯১। দর্শনার্থীদের সুবিধার শনিবার পুজোর গাইড ম্যাপও উদ্বোধন করেছেন জেলার পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী।

পুজোর গাইড ম্যাপ প্রকাশ করছেন জেলার পুলিশ সুপার।

তবে এত সবের আয়োজন অবশ্যই একদিনের জন্য নয়। দুর্গাপুজো এবং চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর মতো বাঁশবেড়িয়ার কার্তিক পুজোও চলে চারদিন ধরে। থাকে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমী। আজ, সোমবার মহাসপ্তমী থেকেই মণ্ডপে মণ্ডপে শুরু হয়ে যাবে দর্শনার্থীদের ভিড়। কারণ কার্তিক পুজোতেই শারদোত্‌সবের আনন্দে মেতে ওঠেন বাঁশবেড়িয়ার মানুষ। যাঁরা কর্মসূত্রে অন্য জায়গায় থাকেন, এই চারদিনের জন্য এলাকায় ফিরে দেদার আড্ডা-আনন্দে উত্‌সবে গা ভাসান তাঁরা। পুজোকে ঘিরে চারদিন ধরে চলে মেলা। চুঁচুড়া, চন্দননগর, বলাগড়, গুপ্তিপাড়া, পাণ্ডুয়া, পোলবা ছাড়াও বর্ধমান এবং গঙ্গার উল্টোদিকে নদিয়া, কল্যাণী, কাঁচরাপাড়া এবং হালিশহর থেকেও দর্শনার্থীরা আসেন। আর তাই দর্শনার্থীরা যাতে কোনওরকম সমস্যায় না পড়েন সে জন্য যথাযথ পুলিশি ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজোর চারদিন সর্বত্র নজরদারি চালাতে ২৫টি মোটর সাইকেলে সাদা পোশাকে টহল দেবে পুলিশ। এ জন্য ৩০০ পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে। শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ৪০০ সিভিক ভলান্টিয়ার থাকবে। দর্শনার্থীদের সাহায্যের জন্য শহরের বিভিন্ন মোড়ে থাকবে ১৫টি পুলিশ বুথ। ঠাকুর দেখার মাঝে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত চিকিত্‌সার জন্য পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অ্যাম্বুল্যান্স রাখা হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় লাগানো হবে সিসি টিভি। ফেরিঘাটগুলিতে বিশেষ নজরদারি চালাবে পুলিশ। তা ছাড়া এ বছর প্রথমবার বাঁশবেড়িয়া পুরসভার উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ শৌচাগারের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।

—নিজস্ব চিত্র।

bansberia kartik puja theme tapas ghosh southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy