উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান শাখায় ভর্তির আগে অভিভাবক ও পড়ুয়াদের কাউন্সেলিং করানোর পরামর্শ দিল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। যে সমস্ত স্কুলে বিজ্ঞান শাখার ফল খারাপ হয়েছে, সেখানে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা-ও জানতে চাইল তারা। উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞানে ধারাবাহিক ভাবে খারাপ ফলের প্রেক্ষিতে প্রতিটি স্কুলের প্রধানদের সম্প্রতি এই বার্তা দেওয়া হয়েছে।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সংসদ জানিয়েছে, সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন স্কুলে পড়ুয়াদের বড় অংশ বিজ্ঞানের বিষয়গুলিতে ধারাবাহিক ভাবে খারাপ ফল করছে। সংসদের এক আধিকারিক জানান, মাধ্যমিকে ভাল ফল করলেই অনেকে বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি হয়। কিন্তু ওই সব বিষয়ে পড়ুয়াদের জ্ঞান কতটা, ভাল ফল করতে হলে কী ভাবে পড়াশোনা করতে হয়, সে বিষয়ে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের আগে থেকে কাউন্সেলিং হওয়া উচিত। বিজ্ঞপ্তিতে এ-ও বলা হয়েছে, একাদশ শ্রেণিতে অনেকে ভাল ফল করলেও উচ্চ মাধ্যমিকে ফল খারাপ হচ্ছে। এই প্রবণতা রুখতে স্কুলগুলিকে নির্দিষ্ট নীতি তৈরির কথা বলা হয়েছে। শিক্ষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, আরও উদ্যোগী হয়ে বাড়তি ক্লাস করানোর। প্রসঙ্গত, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে সংসদের বিজ্ঞান শাখার পড়ুয়াদের আশানূরূপ ফল না হওয়ায় বিতর্ক হয়েছিল।
আইসিএসই বোর্ডের মর্ডান হাইস্কুল ফর গার্লসের অধিকর্তা দেবী কর অবশ্য জানান, তাঁদের স্কুলে নবম শ্রেণিতে অভিভাবকদের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, তাঁদের সন্তানরা বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চাইলে সেই সময় থেকেই এগোতে হবে। পরীক্ষায় নির্দিষ্ট ‘কাট অব মার্কস’ ঠিক করা থাকে। ধরা যাক, বিজ্ঞান বিষয়ের ৩০ নম্বরের পরীক্ষায় ২০-র নীচে পেলে কোনও ভাবেই সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াকে একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিষয়ে পড়ার অনুমতি দেওয়া হবে না। অন্য স্কুলে পড়ুয়াদের ক্ষেত্রেও একই নীতি। তাছাড়া, প্রবেশিকা ও কাউন্সেলিং
তো রয়েইছে।
আইসিএসই বোর্ডের সচিব জেরি অ্যারাথুন বলেন, ‘‘এই পদক্ষেপকে সমর্থন করি। আমাদের স্কুলের প্রিন্সিপালদের বলা রয়েছে, আপনাদের মতো করে বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি নিন। কারণ, পঠনপাঠনের সঙ্গে আপস নয়।’’ সিবিএসই বোর্ডের শ্রী শিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘স্কুল পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে নবম শ্রেণি থেকে কাউন্সেলিং হয়। বাইরের পড়ুয়াদের ভর্তির সময়ে প্রবেশিকা-কাউন্সেলিং দু’টোই হয়।’’
বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহের মতে, ‘‘সংসদের পদক্ষেপ ভালই। তবে কোনও পড়ুয়াকে বিজ্ঞান পড়ার জন্য তৈরি করতে হলে পঞ্চম শ্রেণি থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি ভালবাসা জাগাতে হবে। জোর করে চাপিয়ে দিয়ে নয়, ভালবেসে বিজ্ঞানকে গ্রহণ করতে পারলেই তবেই পরিবর্তন সম্ভব।’’ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাস বলেন, ‘‘যে সমস্ত স্কুল ধারাবাহিক ভাবে খারাপ ফল করছে, তাদের সঙ্গে কথা বলা হবে। যে সমস্ত পড়ুয়ারা অভিভাবকদের চাপে পড়ে বিজ্ঞান নিতে বাধ্য হচ্ছে বা কোনও ধারণা ছাড়াই বিজ্ঞান শাখায় পড়া কৃতিত্বের বলে মনে করছে, সেদিকেও নজর দিতে হবে। এর জন্য স্কুলকে সহযোগিতা করতে সংসদ প্রস্তুত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy