Advertisement
E-Paper

সমতলে তিন পুরসভাই শাসকের দখলে! পাহাড়েও ঝান্ডা গাড়ল তৃণমূল

পাহাড়, সমতল মিলিয়ে সাতটি পুরসভার নির্বাচন ছিল। বুধবার ফল প্রকাশের পর দেখা গেল, তার চারটিই নিজেদের দখলে রেখেছে তৃণমূল। এর মধ্যে তিনটি পুরসভাই সমতলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৭ ১৬:২৫
মিরিকে জয়ের পর তৃণমূল সমর্থকদের উল্লাস। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

মিরিকে জয়ের পর তৃণমূল সমর্থকদের উল্লাস। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

পাহাড়, সমতল মিলিয়ে সাতটি পুরসভার নির্বাচন ছিল। বুধবার ফল প্রকাশের পর দেখা গেল, তার চারটিই নিজেদের দখলে রেখেছে তৃণমূল। এর মধ্যে তিনটি পুরসভাই সমতলে। পাশাপাশি, প্রায় সাড়ে তিন দশকের একটা স্রোতকে স্রেফ উল্টো দিকে বইয়ে পাহাড়ের মিরিক পুরসভাও দখল করে নিয়েছে তারা। তৃণমূলের দাবি, এই জয় এসেছে কেবলমাত্র উন্নয়নের মন্ত্রেই। আর বিরোধীদের দাবি, নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে বলেই এমন ফল।

এই পুর নির্বাচন এক দিকে যেমন দেখিয়ে দিল তৃণমূলের জয়ের ধারা অব্যাহত, তেমনই চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিল এ রাজ্যে বিরোধীদের কতটা দুরবস্থা। বিজেপি-ও সেই অর্থে দাঁত ফোটাতে পারেনি কোথাও। পাহাড়ে যদিও তারা প্রার্থী দেয়নি। মোর্চাকে সমর্থন করেছিল। দীর্ঘ দিন ধরে পাহাড়ের দখল নেওয়া সেই মোর্চাও এ বার তৃণমূলের কাছে কিছুটা নাস্তানাবুদ। পাহাড়ের চারটি পুরসভার প্রতিটিতেই খাতা খুলেছে তারা। শুধু তাই নয়, মিরিকের মতো একদা মোর্চা-গড়কেও তারা নিজেদের দখলে নিয়ে এসেছে। অন্য দিকে, সমতলের তিন পুরসভাতেই বোর্ড গঠন করছে তৃণমূল।


মিরিকে তৃণমূলের জয়োল্লাস।— নিজস্ব চিত্র।

নির্বাচনের দিন থেকেই বিরোধী শিবির একে ‘প্রহসন’ বলে দাবি করে এসেছিল। ভোটের দিন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছিলেন, ‘‘ফল প্রকাশের কোনও অবকাশ নেই। যে ভাবে ভোট লুঠ হয়েছে, এই নির্বাচন পুরোটাই অবৈধ।’’ একই বক্তব্য ছিল কংগ্রেসেরও। এমনকী, তারা সমতলের তিনটি পুরসভায় ফল প্রকাশের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্টে মামলাও দায়ের করে। যদিও বুধবার হাইকোর্ট ভোটের ফল ঘোষণায় স্থগিতাদেশে কংগ্রেসের আর্জি খারিজ করে জানিয়ে দিয়েছে, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এ ভাবে হস্তক্ষেপ করা যায় না।

তৃণমূল নেতৃত্ব স্বভাবতই এই রকম জয়ে খুশি। বিশেষত তিরিশ বছরেরও বেশি সময় পরে সমতলের কোনও দলের পাহাড়ের পুরসভা দখলকে তারা বিশেষ কৃতিত্ব বলেই মনে করছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘মা মাটি মানুষকে ধন্যবাদ। এই জয় আমাদের কৃতজ্ঞ এবং বিনম্র করেছে। মানুষ আমাদের উপর আস্থা রেখেছেন। আমরা খুশি।’

আরও খবর
দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পঙেও গুরুঙ্গদের চিন্তায় ফেলল তৃণমূল

গত রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার পূজালি, মুর্শিদাবাদের ডোমকল, উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ এবং পাহাড়ের মিরিক, কালিম্পং, কার্শিয়ং ও দার্জিলিং পুরসভাতে নির্বাচন হয়। এর মধ্যে ১৬ ওয়ার্ডের পূজালিতে ১২টি ওয়ার্ডে জয়ী হয় তৃণমূল। দু’টি ওয়ার্ডে বিজেপি, একটিতে কংগ্রেস এবং অন্যটিতে নির্দল প্রার্থী জয়ী হন। ডোমকলে ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টিই দখল করে নেয় তৃণমূল। বাকি তিনটিতে জোট প্রার্থীরা জিতলেও পরে তাঁদের দু’জন তৃণমূলে যোগ দেন। জোটের অন্য জয়ী প্রার্থীও শাসকদলে যোগ দেবে বলেই তৃণমূল দাবি করে। মিরিকে ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ৬টি এবং মোর্চার দখলে গিয়েছে ৩টি ওয়ার্ড। রায়গঞ্জে ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ২৪টি ওয়ার্ড। একটি ওয়ার্ড বিজেপি এবং অন্য দু’টি পেয়েছে কংগ্রেস। দার্জিলিঙে ৩১টি ওয়ার্ডের সব ক’টিই পেয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। কার্শিয়ঙে ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৭টি ওয়ার্ড পেয়েছে মোর্চা এবং তৃণমূলের দখলে ৩টি ওয়ার্ড। কালিম্পঙে ২৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টি পেয়েছে মোর্চা। ২টি ওয়ার্ড পেয়েছে তৃণমূল। হরকাবাহাদুর ছেত্রীর জন আন্দোলন পার্টি (জাপ) পেয়েছে ২টি ওয়ার্ড এবং অন্যটিতে জিতেছেন নির্দল প্রার্থী।

আরও খবর
ডোমকলে জিতেই তৃণমূলে দুই জোটপ্রার্থী

এই পুর নির্বাচনে সেই অর্থে নিজেদের ঝুলিতে নতুন করে চারটি পুরসভা পুরে ফেলল তৃণমূল। গত পুর নির্বাচনে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দখলে ছিল মিরিক পুরসভা। কংগ্রেসের দখলে ছিল রায়গঞ্জ এবং পূজালি। পরে যদিও দলবদলের কারণে পূজালি তৃণমূলের দখলে চলে আসে। আর ডোমকল তো সদ্যোজাত পুরসভা। এই চারটিই দখল করেছে তৃণমূল। গত নির্বাচনের সময় ডোমকল পুরসভার জন্ম হয়নি। কাজেই সে বার মোট ৬টি পুরসভায় নির্বাচন হয়েছিল। যার কোনওটিই তৃণমূলের দখলে ছিল না। এ বার তার মধ্যে চারটিতেই তারা বোর্ড গঠন করবে।

Municipal Election TMC GJMM Mamata Banerjee BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy