পণ আদায় করতে না পেয়ে স্ত্রীকে পুড়িয়ে মেরেছেন, এই অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এক বছর দু’মাস জেলেও আটকে রেখেছিল তাঁকে। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের শুনানিতে অবশ্য পুরো বিষয়টাই উল্টে গেল। আদালতে পেশ করা মামলার নথি থেকে জানা গিয়েছে, শর্মিলা মিত্র নামে ওই গৃহবধূ হাসপাতালে শুয়ে চিকিৎসকের কাছে জানিয়েছিলেন, মশা মারার ধূপ থেকে মশারিতে আগুন লেগেছিল। সেই আগুনে তিনি পুড়ে গিয়েছিলেন। এই তথ্য সামনে আসার পরেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ শর্মিলার স্বামী সৌরভ মিত্রকে জামিন দিয়েছে।
সৌরভের আইনজীবী কল্লোল মণ্ডল এ দিন জানান, গত বছরের ৩০ জানুয়ারি বীরভূমের সিউড়ি থানার মল্লিকপুর গ্রামের বাসিন্দা শর্মিলার সঙ্গে স্থানীয় কল্পতরু পল্লির বাসিন্দা সৌরভের বিয়ে হয়েছিল। গত বছর ২৭ জুলাই রাতে শর্মিলা অগ্নিদগ্ধ হন। প্রথমে তাঁকে সিউড়ি মহকুমা হাসপাতালে, পরের দিন দুর্গাপুরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে ২ অগস্ট তাঁর মৃত্যু হয়। শর্মিলার বাপের বাড়ির লোকজন সিউ়ড়ি থানায় অভিযোগ জানান, পণ না পেয়ে শর্মিলাকে পুড়িয়ে মেরেছেন তাঁর স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও দেওর। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ২ অগস্ট গ্রেফতার করা হয় সৌরভকে।
তখন থেকে জেলে বন্দি ছিলেন সৌরভ। দিন কয়েক আগে তিনি জামিনের জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর আইনজীবী সিউড়ি ও দুর্গাপুরের হাসপাতালের নথি আদালতে পেশ করেন। সওয়ালে তিনি জানান, সিউড়ি হাসপাতালের চিকিৎসকের কাছে শর্মিলা জানিয়েছিলেন মশা মারার ধূপ থেকে মশারিতে আগুন লেগেছিল। তাতেই পুড়ে যান তিনি। শর্মিলার মা-ও দুর্গাপুর হাসপাতালের চিকিৎসককে একই কথা জানিয়েছিলেন। পুলিশ মামলার চার্জশিট পেশ করার পরে সেই নথি প্রকাশ্যে আসে। আইনজীবী আরও জানান, ঘটনার সময় সৌরভ কর্মসূত্রে মালদহে ছিলেন। ফলে তিনি পুড়িয়ে মেরেছেন, তা-ও বলা যায় না। সৌরভের বাবা-মা এর আগেই হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। সরকারি আইনজীবী সৌরভের জামিনের বিরোধিতা করলেও তাতে লাভ হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy