E-Paper

বিদেশিনি স্ত্রীকে ফেরাতে হাই কোর্টে মামলা স্বামীর

আদালতের খবর, শিলিগুড়ির বাসিন্দা শেনপেন ইয়ুনদ্রুং খেমসার পেশায় লেখক, সুরকার, পরিচালক। দেশে-বিদেশে কাজের জন্য পুরস্কৃত হয়েছেন তিনি। তিব্বতি বংশোদ্ভূত হলেও তাঁর জন্ম দার্জিলিঙে।

সব্যসাচী ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৫ ০৬:৪৪
কলকাতা হাই কোর্ট।

কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

দু’জনেই নিজেদের আদি বাসভূমি থেকে দূরে। স্বামী জন্মসূত্রে ভারতে নাগরিক অধিকার পেয়েছেন। অন্যজন মার্কিন নাগরিক। তবে এই দম্পতির সাংসারিক জীবনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে একটি সরকারি নোটিস। আদালতের খবর, মার্কিন নাগরিক ওই মহিলার বিরুদ্ধে ‘লুক আউট সার্কুলার’ থাকায় তাঁকে ভারতে ঢুকতে না-দিয়ে আমেরিকায় ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে অভিবাসন দফতর। স্ত্রীকে বাড়িতে ফেরাতে এ বার সেই সরকারি নোটিসের বিরুদ্ধেই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন স্বামী। সম্প্রতি এই মামলার শুনানিতে ওই লুক আউট সার্কুলার নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে তথ্য তলব করেছেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ। আগামী ৩১ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য হয়েছে।

আদালতের খবর, শিলিগুড়ির বাসিন্দা শেনপেন ইয়ুনদ্রুং খেমসার পেশায় লেখক, সুরকার, পরিচালক। দেশে-বিদেশে কাজের জন্য পুরস্কৃত হয়েছেন তিনি। তিব্বতি বংশোদ্ভূত হলেও তাঁর জন্ম দার্জিলিঙে। ‘ভারতে নাগরিক অধিকারপ্রাপ্ত বিদেশি’ (ওভারসিজ় সিটিজ়েন অব ইন্ডিয়া) পরিচয়পত্র আছে তাঁর। ২০২০ সালে এই দার্জিলিঙেই এসেছিলেন মার্কিন নাগরিক এবং পেশায় ফ্যাশন ডিজ়াইনার তেনজ়িন ডোলকার তানা। তিনিও তিব্বতি ব‌ংশোদ্ভূত এবং তাঁর আত্মীয়েরা দার্জিলিঙে থাকেন। সেই সূত্রেই এ দেশে আসা। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী তেনজ়িন এ দেশের বিভিন্ন বৌদ্ধ মঠেও ঘুরতেন। এ দেশে আসার পরেই অতিমারি লকডাউন শুরু হয়। আটকে পড়েন তেনজ়িন। অতিমারির পরে ২০২৩ সালে দার্জিলিঙের বিদেশি নিবন্ধকের অফিসে (এফআরআরও) ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়েদেশে ফেরেন। তবে শেনপেনের সঙ্গে সম্পর্ক রয়ে গিয়েছিল।

২০২৩ সালের জুন মাসে ফের এ দেশে আসছিলেন তেনজ়িন। কিন্তু সেখানেই বাধ সাধে অভিবাসন দফতর। অভিযোগ, আমেরিকা থেকে বিমানে প্রথমে বেঙ্গালুরু পৌঁছন তেনজ়িন। কিন্তু তাঁকে দেশে ঢোকার অনুমতি দেয়নি অভিবাসন দফতর। জানানো হয়, তাঁর নামে দার্জিলিঙের এফআরআরও ‘লুক আউট সার্কুলার’ দিয়েছে। তাই দেশে ঢুকতে না-দিয়ে আমেরিকায় ফিরিয়ে দেওয়া হয় তেনজ়িনকে। তবে বিয়ে তাতে আটকায়নি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে আমেরিকায় যান শেনপেন। লাস ভেগাসে বিয়েও হয়। কিন্তু সরকারি নোটিসের বাধায় স্ত্রীকে নিয়ে দেশে ফিরতে পারেননি। ধর্মীয় রীতি মেনে বিয়ের আচারও হয়নি।

শেনপেনের আইনজীবী নিগম আশিস চক্রবর্তীর অভিযোগ, লুকআউট সার্কুলারের বিষয়ে কোনও তথ্য দেয়নি দার্জিলিঙের এফআরআরও। অথচ, মার্চ মাসে একই সরকারি অফিস তেনজ়িনকে ভারত থেকে বেরনোর অনুমতি দিয়েছিল।

কেন্দ্রের আইনজীবী অবশ্য এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে যুক্তি দিয়েছেন, ‘লুক আউট সার্কুলার’-এর নির্দিষ্ট অভিযোগের বিরুদ্ধে কোনও আবেদন করা হয়নি। বিচারপতি সিংহের পর্যবেক্ষণ, কী অভিযোগের ভিত্তিতে এই সার্কুলার জারি হয়েছে তা জানানো হয়নি মামলাকারী বা তাঁর স্ত্রীকে। তাই কী অভিযোগে সার্কুলার তা বিবেচনা করতে প্রয়োজনীয় তথ্য পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Calcutta High Court Look Out Circular USA

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy