হাসপাতালে পল্টু। গৌতম প্রামাণিকের তোলা ছবি।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের আগুনের পিছনে ‘অন্তর্ঘাত’ আছে কি না খুঁজতে শনিবার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার বিধানসভায় তিনি বলেই দিলেন, ‘‘আমি রাজনীতি ভালবাসি। কিন্তু বিধ্বংসী রাজনীতি পছন্দ করি না। কিছু করতে পারছি না বলে আগুন লাগিয়ে দেব, এটা ঠিক নয়। কোথাও আগুন লাগানো একটা রাজনৈতিক দলের কাজ নয়।’’
বিরোধীদের অভিযোগ, প্রশাসনের গাফিলতি ঢাকতে সিআইডি-কে ‘ষড়যন্ত্র’ প্রমাণের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তারাও সেই পথে হাঁটতে শুরু করেছে। সেই কারণেই গ্রেফতার করা হয়েছে কংগ্রেস নেতা অমল গুপ্তকে। মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে পল্টুদা নামে পরিচিত ওই নেতা দলের হয়ে রোগী সহায়তা কেন্দ্রের দেখভাল করতেন। বহরমপুর পুরসভার কর্মী হলেও তিনি যে ভোর থেকে মধ্য-রাত পর্যন্ত হাসপাতালে, কংগ্রেসের সেবা কেন্দ্রেই পড়ে থাকতেন, সকলেই তা মেনে নিয়েছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এ দিন প্রশ্ন তোলেন, ‘‘অগ্নিকাণ্ডে কংগ্রেসকে জড়িয়ে দেওয়াই কি সরকারের একমাত্র লক্ষ্য?’’
রবিবার দিনভর জেরায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন পল্টু। রাতেই তাঁকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। পরে গ্রেফতার দেখানো হলেও এ দিন তাঁকে আদালতে পেশ করা যায়নি। পল্টুর আইনজীবী পীযূষ ঘোষ জানান, অনিচ্ছাকৃত খুন থেকে আগুন লাগানো— একাধিক মামলা দেওয়া হয়েছে ওই কংগ্রেস নেতাকে।
এ দিন সকালে হাসপাতালে শুয়ে পল্টু দাবি করেন, আগুন লাগার কথা তিনি জানতেন না। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। পল্টুর কথায়, ‘‘আমিই বেশ কয়েকটি শিশুকে উদ্ধার করে নীচে নামিয়েছি। আর আমার বিরুদ্ধেই খুন আর অগ্নিকাণ্ডের অভিযোগ!’’ তাঁর দাবি, যে ভিআইপি কেবিনে আগুন লেগেছিল, সেখানে হাসপাতালের কোন চিকিৎসক সিগারেট খান সে কথা জানতে চেয়েছিল সিআইডি। তিনি ‘জানি না’ বলায় এক সিআইডি অফিসার বলেন, ‘তিরিশ বছর ধরে হাসপাতালে রাজ চালাচ্ছ আর এটা জানো না!’
যদিও জেলা তৃণমূলের এক তাবড় নেতা বলছেন, ‘‘সিআইডি আটঘাট বেঁধেই নেমেছে। আয়া নিয়োগ থেকে ক্যান্টিনের খাবারের বরাত— হাসপাতালে রাজত্ব চালাত পল্টু।’’ প্রশ্ন হল, নিজের ‘রাজত্বে’ই কেন আগুন লাগানোর ষড়যন্ত্র করবেন পল্টু? ডিআইজি (সিআইডি) ভরতলাল মিনা জবাব না দিয়ে মুচকি হেসে বলছেন, ‘‘তদন্ত তো শেষ হয়নি!’’
বিরোধীরা অবশ্য বলছেন, প্রকাশ্যে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব আউড়ে তদন্তে ইতি টেনে দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy