Advertisement
E-Paper

১০ হাজার ডালিয়া, ৪০ কেজি দোপাটি, ৩০ কেজি রজনীগন্ধায় সাজলেন রাধাকৃষ্ণ!

বিপুল পরিমাণ এমন সংখ্যক ফুলে সাজল রাধাকৃষ্ণ বিগ্রহ। সাজল তাদের অষ্টসখী। বর্ণময় ফুলের সাজে সাজানো হল মায়াপুর ইস্কনের বিগ্রহকে। রাধাকৃষ্ণের পুষ্পাভিষেক নামে পরিচিতি এই উৎসব বৈষ্ণব জগতের আর পাঁচটা উৎসবের চেয়ে অনেকটাই আলাদা। 

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৭:০০
ফুলের সাজে বিগ্রহ। মায়াপুরে। নিজস্ব চিত্র

ফুলের সাজে বিগ্রহ। মায়াপুরে। নিজস্ব চিত্র

লাল গোলাপ ষাট হাজার একশো কুড়িটা। সাদা চন্দ্রমল্লিকা ষাট হাজার দু’শোটা। হলুদ চন্দ্রমল্লিকা তিরিশ হাজার। ডালিয়া দশ হাজার। দোপাটি চল্লিশ কেজি। রজনীগন্ধা তিরিশ কেজি। জারবেরা ষাট বান্ডিল। গাঁদা ফুলের মালা চারশো।

বিপুল পরিমাণ এমন সংখ্যক ফুলে সাজল রাধাকৃষ্ণ বিগ্রহ। সাজল তাদের অষ্টসখী। বর্ণময় ফুলের সাজে সাজানো হল মায়াপুর ইস্কনের বিগ্রহকে। রাধাকৃষ্ণের পুষ্পাভিষেক নামে পরিচিতি এই উৎসব বৈষ্ণব জগতের আর পাঁচটা উৎসবের চেয়ে অনেকটাই আলাদা।

ফুল, চন্দন, অলঙ্কার, সুগন্ধে দেবতাকে সাজানো হিন্দু ধর্মাচরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। বিশেষ বিশেষ তিথি বা উৎসবে দেবতাকে সাজিয়েই ভক্তের আনন্দ। মাঘ মাসে তেমন কোনও উৎসব ছাড়া কী উপলক্ষে এই পুষ্পাভিষেক— তার ব্যাখ্যা রয়েছে পুরাণে। জানাচ্ছিলেন মায়াপুর ইস্কনের জগদার্তিহা দাস।

তিনি জানান, স্কন্দপুরাণের দ্বিতীয় খণ্ডের দ্বিতীয় অধ্যায়ের বিয়াল্লিশতম অনুচ্ছেদে এই বিষয়ে বিস্তারিত বলা হয়েছে। আসলে ‘পুষ্পাভিষেক’ নয়, কথাটি হল ‘পুষ্যাভিষেক’। অর্থাৎ, মাঘ মাসে পুষ্যা নক্ষত্রতিথিতে দেবতাকে বিশেষ ভাবে অভিষেক করতে হয়। মনে করা হয়, ‘পুষ্যা’ কথার সঙ্গে পুষ্টি কথাটির বিশেষ যোগ আছে। সেই অর্থে ভক্তির পুষ্টিসাধনের জন্য এ দিনের এই অভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে নির্দেশ দিয়েছেন পুরাণকারেরা। পরবর্তী সময়ে সেই পুষ্যাভিষেক লোকমুখে হয়েছে পুষ্পাভিষেক। এই বিশেষ অভিষেক পর্বে ফুলই মুখ্য।

যে কোনও বৈষ্ণব উৎসবে ফুলের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু শুধু কেজি-কেজি ফুল দিয়ে প্রায় পোশাকের মতো করে বিগ্রহ সাজানো খুব একটা দেখা যায় না। এমনিতে গ্রীষ্মে ফুলদোল উপলক্ষে রাধাকৃষ্ণকে ফুল চন্দনে সাজানো হয়। এর উদ্দেশ্য ভিন্ন। গরমের হাত থেকে রক্ষা করতে দেবতাকে ফুল-চন্দনে সাজানো হয়।

জগদার্তিহা দাস বলেন, “ইস্কনের প্রতিষ্ঠাতা প্রভুপাদ ভক্তিবেদান্ত স্বামী নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন পুষ্যাভিষেক বিষয়ে। এটি তাই অবশ্য পালনীয়। ভক্তের সঙ্গে ভগবানের আত্মিক সম্পর্ক নানা জাগতিক কারণে বিপন্ন, দুর্বল হতে পারে। সেই জন্য এই ধরনের উৎসব পালন করার কথা বলা হয়েছে শাস্ত্রে। আমরা সেটাই করছি।”

এমনিতেই মায়াপুরের যে কোনও উৎসব মানেই আড়ম্বরের চমৎকারিত্বে তা দারুণ উপভোগ্য। শীতের মরসুমে হাজারো দর্শনার্থীর উপস্থিতিতে ফুলের সাজে বিগ্রহকে ঘিরে অন্য রকম উৎসবে মাতল মায়াপুর। নিত্যসেবার পাশাপাশি বৈদিক মন্ত্র, স্বস্তিবচনের সঙ্গে কীর্তনের সুরে সাজানো হল বিগ্রহ। নিবেদন করা হল ষোড়শো ব্যঞ্জনের রাজভোগ।

জানা গিয়েছে, এই পুষ্প-অভিষেকের জন্য লক্ষাধিক টাকার ফুল আনা হয়েছিল।

Radha-Krishna Mayapur ISCKON
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy