গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পাঁচ বছর অন্তর অন্তর সরকার বদলানো রেওয়াজ দক্ষিণের কেরলে। কিন্তু পর পর দু’বার সরকার গড়ে গত বিধানসভা ভোটে ‘ঈশ্বরের আপন দেশ’-এ রেকর্ড গড়েছে সিপিএমই। কেরল সিপিএম হেরে গিয়েও ফিরে আসতে পারে। বঙ্গ সিপিএম পারে না কেন? কবে পারবে? আনন্দবাজার অনলাইনের সাক্ষাৎকারভিত্তিক অনুষ্ঠান ‘দিল্লিবাড়ির লড়াই: মুখোমুখি’-তে জবাব দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
সেলিম বলেন, ‘‘মানুষ চাইলে ২০২৬-এ ফিরবে বামেরা।’’ কিন্তু মানুষ চাইছে না কেন? সেলিমের জবাব, ‘‘কে বলল চাইছে না? গত লোকসভা এবং বিধানসভায় বাংলায় বামেরা শূন্য হয়েছে! আর তাতেই মানুষ বুঝতে পারছেন, কী হয়েছে। একটাও কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাংলায় আসেনি।’’ সেলিম এ-ও বলেন, ‘‘বামপন্থার পুনর্জাগরণ ছাড়া বাংলার পুনর্জাগরণ সম্ভব নয়। আর তা ঘটাতে সিপিএম ছাড়াও সার্বিক ভাবে বামমনস্ক মানুষের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।’’
সিপিএমের শেষ পার্টি কংগ্রেস হয়েছিল কেরলের কন্নুরে। সেই পার্টি কংগ্রেসে যে হিসেব পেশ করা হয়েছিল, তাতে দেখা গিয়েছিল, সারা দেশে দলের যে সদস্যসংখ্যা, তার ৫০ শতাংশ রয়েছেন পিনারাই বিজয়নের রাজ্য কেরলে। অর্থাৎ, সাংগঠনিক ভাবেও কেরল সিপিএম অন্য অনেক রাজ্যের সিপিএমের থেকে এগিয়ে রয়েছে। সিপিএমের অনেক নেতা ঘরোয়া আলোচনায় স্বীকার করে নেন, দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় থাকলে যে কোনও দলের মধ্যেই স্থবিরতা কাজ করে। বামেরাও তার ব্যতিক্রম নয়। দেখা গিয়েছে, দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার পরে যখন সিপিএম গদিচ্যুত হয়েছে, সেখানে সংগঠন দ্রুততার সঙ্গে ক্ষয়িষ্ণু হয়েছে। তা যেমন বাংলায় সত্য, একই ভাবে ত্রিপুরাতেও সত্য।
২০১১ সালে বামেরা বাংলার ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার পর থেকে ক্রমশই ক্ষয়িষ্ণু হয়েছে। লোকসভা, বিধানসভায় শূন্য হওয়াই শুধু নয়, ভোটে জামানত রক্ষা করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের সামনে। এই লোকসভার আগেও সিপিএম নেতারা হলফ করে বলতে পারছেন না, কোন কোন আসনে জামানত রক্ষা হবে। এ হেন পরিস্থিতিতে সেলিমের বক্তব্য, ‘‘অনেকে ভেবেছিল বাংলায় সিপিএম শেষ হচ্ছে। কিন্তু আজকে বামমনস্ক মানুষ, যিনি হয়তো সিপিএমকে সমর্থন করেন না, তিনিও বুঝতে পারছেন আসলে বাংলার বাম ইকো সিস্টেম (বাস্তুতন্ত্র) ধ্বংস হয়েছে। তাকে গড়ে তোলাই আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ। সেই কাজই আমরা করে চলেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy