আইনে বলা হয়েছে, যত সংখ্যক গাছ কাটা হবে, লাগাতে হবে তার দ্বিগুণ। কিন্তু পঞ্চায়েতের তহবিল পুষ্ট করতে গত দু’বছর ধরে গাছ কাটা হয়েছে বিস্তর। তবে সেই পরিমাণে গাছ লাগানো হয়নি। নতুন করে বনসৃজনও করা হচ্ছে না। ফলে এলাকার পর এলাকা ফাঁকা থেকে যাচ্ছে। এমনই গুরুতর অভিযোগ উঠেছে আরামবাগের গোঘাট ১ ও ২ ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে।
গোঘাটের দুই ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৭ বা তার আগে লাগানো গাছগুলিই কাটা হচ্ছে। যদিও গাছ কাটার পরে ফাঁকা জায়গাগুলোতে ১০০ দিন কাজ প্রকল্পে গাছ লাগানো হলেও তা বিক্ষিপ্ত ভাবে। বর্ষার আগে বনসৃজনও করা হচ্ছে না। ফলে ঘন জঙ্গল এখন খাঁ খাঁ মাঠ। এর মধ্যে গোঘাট-১ ব্লকের গোঘাট পঞ্চায়েত, কুমুড়শা পঞ্চায়েত, রঘুবাটি পঞ্চায়েত এবং ভাদুর পঞ্চায়েতে গত দু’বছরে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার গাছ কাটা হয়েছে। কিন্তু সেই মতো গাছ লাগানো হয়নি। জানা গিয়েছে, ওই পঞ্চায়েতগুলির আয়ের ৭০ শতাংশই গাছ বিক্রি থেকে আসে। বাকি ৩০ শতাংশ গৃহকর-ব্যবসা কর ইত্যাদি থেকে। এই ব্লকের বাকি সাওড়া, নকুন্ডা এবং বালি পঞ্চায়েত এলাকাতেও গাছ কাটার পর গাছ লাগানো হচ্ছে না। একই অবস্থা গোঘাট ২ ব্লকের ৯টি পঞ্চায়েতেরও। এখানে বদনগঞ্জ-ফলুই ১ ও ২ পঞ্চায়েত, বেঙ্গাই পঞ্চায়েত, কুমারগঞ্জ পঞ্চায়েত, শ্যামবাজার পঞ্চায়েত, হাজিপুর পঞ্চায়েত এবং মান্দরন পঞ্চায়েতে যথেচ্ছ গাছ কাটা হচ্ছে।
বন আইন অনুযায়ী, যতগুলি গাছ কাটা হবে তার দ্বিগুণ গাছ লাগাতে হবে। পঞ্চায়েতগুলির এই বাধ্যবাধকতা না মানা প্রসঙ্গে হাওড়া ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার (হাওড়া ও হুগলি জেলা নিয়ে ডিভিশন) বিমানকুমার বিশ্বাস বলেন, “বন ও বনসম্পদ নিয়ে এই উদাসীনতা কাম্য নয়। পঞ্চায়েতগুলি যে সব জায়গায় গাছ কাটার পর ফাঁকা পড়ে থাকছে, সে সব জায়গা আমাদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলব। আমরাই সেখানে বনসৃজন করব।”
অভিযোগের কথা স্বীকার করে তৃণমূল পরিচালিত গোঘাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মৃণাল আলু বলেন, “এটা ঠিক নয়। পঞ্চায়েত প্রধানদের বলেছি। তবে বনসৃজন নিয়ে সরকারি ভাবেও বিশেষ উদ্যোগ নেই।” গোঘাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তপন মণ্ডলের বক্তব্য, “পঞ্চায়েতগুলিকে বনসৃজনের জন্য চাপ দিচ্ছি। গাছ কাটার ক্ষেত্রে বন আইন যাতে মানা হয় সে বিষয়েও একাধিক বার সতর্ক করা হয়েছে।”