মন্দারমণির সৈকতে যাওয়ার রাস্তায় ব্যারিকেড। নিজস্ব চিত্র।
মন্দারমণিতে বেআইনিভাবে হোটেল-রিসর্ট ব্যবসায় রাশ টানায় প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে আগেই। এ বার সেই একই সৈকতে দুই গাড়ির সংঘর্ষে তিন তরুণের মৃত্যুর পর ফের সামনে এসেছে পুলিশ-প্রশাসনের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা। নিয়ম ভেঙে শুধু ওই সৈকতে গাড়ি চালানো নয়, মন্দারমণির অধিকাংশ হোটেল-রিসর্টের যে সরকারি অনুমোদন নেই তা ব্লক প্রশাসনিক রিপোর্টেই উঠে এসেছে।
প্রায় এক বছর আগে রামনগর-২ ব্লক প্রশাসনের তরফে জেলা প্রশাসনকে দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী মন্দারমণির সমুদ্রতীরে ৯৩ টি হোটেল-রিসর্ট রয়েছে। এগুলির অধিকাংশেরই সরকারি অনুমোদন নেই। এর মধ্যে ৩৮ টি হোটেল স্থানীয়দের দেওয়া পাট্টার জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে। যা সম্পূর্ণভাবে আইনবিরুদ্ধ। এ বিষয়ে ভূমি-সংস্কার দফতর কেন ব্যবস্থা নেয়নি তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অবৈধ হোটেল প্রসঙ্গে পূর্বের জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘পাট্টার জমিতে হোটেল গড়া নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। এ নিয়ে ব্লক প্রশাসনকে বিস্তারিতভাবে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।’’ কিন্তু সরকারি অনুমোদন ছাড়া সৈকতে বেআইনিভাবে চলা হোটেল বন্ধে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন? জেলাশাসকের উত্তর, ‘‘হোটেলগুলি অনেক আগে তৈরি হয়েছে। বিষয়টি এখনও বিচারাধীন থাকায় মন্তব্য করব না।’’
জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিঘা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে রামনগর-২ ব্লকের কালিন্দী গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় মন্দারমণিতে ২০০২ সাল নাগাদ প্রথম হোটেল উঠতে শুরু করে। পরে সমুদ্রের ধার বরাবর একের পর এক হোটেল মাথা তুলতে শুরু করে। সরকারি অনুমতি না নিয়ে ওই এলাকায় এই হোটেল গড়ে ওঠায় পরিবেশ দূষণ নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল। সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের কোস্টাল রেগুলেশন জোন অ্যাক্ট না মানার অভিযোগও উঠেছিল। এছাড়াও অধিকাংশ হোটেলে দমকল বিভাগের ছাড়পত্র নেই বলেও অভিযোগ।
বর্তমানে সিপিএম পরিচালিত স্থানীয় কালিন্দী গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান তসলিমা বিবি প্রকারান্তরে দায় এড়িয়ে গিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা ক্ষমতায় আসার পর গত তিন বছর নতুন কোনও হোটেল গড়ার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র আগের পঞ্চায়েত যে সব হোটেলগুলিকে ব্যবসার অনুমোদন দিয়েছিল, তাদের থেকে ট্রেড লাইসেন্স ফি নেওয়া হয়। বাকি হোটেলগুলির কাছ থেকে কোনও ফি নেওয়া হয় না।’’ পাট্টার জমিতে হোটেল গড়ার অভিযোগ নিয়ে গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। অভিযোগ থাকলে প্রশাসন যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy