Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Jail

জেলে ফোন বুথ বন্ধ, সক্রিয় মোবাইল চক্র

প্রেসিডেন্সি, দমদম, আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে টেলিফোন বুথ রয়েছে। আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারেও সেই সুযোগ পান আবাসিকরা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২০ ০৫:৪১
Share: Save:

কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সংশোধনাগারে নিয়ন্ত্রিত হয়েছে বহিরাগতের চলাচল। ফলে বন্ধ হয়ে রয়েছে সংশোধনাগারের টেলিফোন বুথ। পরিজনের সঙ্গে বন্দিদের যোগাযোগে ছেদ পড়েছে। সেই সুযোগে বাড়ছে অবৈধ মোবাইল চক্রের দাদাগিরি। তবে ফোন বুথের সমস্যা দ্রুত মেটানোর আশ্বাস দিচ্ছেন কারা কর্তারা।

প্রেসিডেন্সি, দমদম, আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে টেলিফোন বুথ রয়েছে। আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারেও সেই সুযোগ পান আবাসিকরা। তবে আলিপুর সংশোধনাগার বারুইপুরে স্থানান্তরিত হওয়ায় সেখানে ওই বুথের কার্যকারিতা নেই। বর্তমানে প্রেসিডেন্সি, দমদম এবং আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে ফোন বুথ ব্যবহার করতে পারছেন না আবাসিকরা। কারণ, বঙ্গে কোভিড-১৯ মাথাচাড়া দেওয়ার শুরু থেকে সংশোধনাগারে আসা যাওয়া নেই বুথ পরিচালক কর্মীদের। কারণ, বহিরাগতদের সংশোধনাগারে নিয়মিত যাওয়া আসা ঝুঁকিপূর্ণ। এই বুথগুলি পরিচালনা করে বহুজাতিক টেলিকম সংস্থা। ওগুলি ছাড়া মেদিনীপুর, জলপাইগুড়ি, বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ফোন বুথ চালুর দাবি থাকলেও তা চালু হয়নি।

ফোন বুথ কাজ না করায় পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগ নেই আবাসিকদের। যা নিয়ে ক্ষোভও বাড়ছে তাঁদের। উদ্বিগ্ন পরিজনেরা। উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা এক বন্দি-পরিজনের বক্তব্য, "বর্তমান পরিস্থিতিতে কয়েক জেলা পেরিয়ে কলকাতা যাওয়া খুব কষ্টসাধ্য। ফোনেও কথা বলা যাচ্ছে না। ভাল-খারাপ কিছুই জানি না। এখন যা পরিস্থিতি, খোঁজখবর না পেলে খুব চিন্তা হয়।"

ফোন বুথ বন্ধ। তবুও পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে চেষ্টা করছেন বন্দিরা। তাঁদের যোগাযোগের আকুতিই কাজে লাগিয়ে ফায়দা তুলতে সক্রিয় হয়েছে সংশোধনাগারের অবৈধ মোবাইল চক্র। সেই চক্রের হাতে থাকা মোবাইল ব্যবহার করতে পারেন কোনও বন্দি। তার বিনিময়ে ব্যবহারের সময়সীমা অনুসারে অর্থ দিতে হয় সংশ্লিষ্ট বন্দিকে।

বিভিন্ন সময়ে তল্লাশি অভিযান বা খবরের ভিত্তিতে অবৈধ মোবাইল উদ্ধার করেছেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। মামলা হয়েছে অবৈধ মোবাইল ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধেও। নিয়মিত নজরদারিও রয়েছে। এত কিছুর পরেও সংশোধনাগার অন্দরে অবৈধ মোবাইলের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি, তা মানেন কারা কর্তারা। এক কর্তার কথায়, "অভিযান, তল্লাশি, নজরদারি চলে। তাতে কাজ হয়। তবে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়েছে, তা বললে সত্যের অপলাপ হবে।" তবে ফোন বুথ যাতে দ্রুত ব্যবহার উপযোগী করতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে দাবি কারা কর্তাদের অনেকের। প্রয়োজনে অন্য সংস্থার কর্মীদের পরিবর্তে বুথের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে সংশোধনাগারের কর্মীদের উপর।

এদিকে, রাজ্যের সংশোধনাগারে কর্মী-আধিকারিকদের পাশাপাশি আক্রান্ত হচ্ছেন বন্দিরাও। সেই তালিকায় সংযোজিত হয়েছেন, জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে কয়েকজন আবাসিক। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের সব সংশোধনাগারেই বন্দি এবং কারা কর্মীদের করোনা পরীক্ষার দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর। এ বিষয়ে ইতিপূর্বে কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসকে চিঠিও দিয়েছেন সংগঠনের নেতা রঞ্জিত শূর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE