Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta University

Buddhist educational institute : পশ্চিম মেদিনীপুরে খোঁজ মিলল দেড় হাজার বছরের পুরনো দু'টি বৌদ্ধ শিক্ষাকেন্দ্রের

ষষ্ঠ শতকেই পাশাপাশি এই দু’টি মহাবিহার ও বিহারিকায় একই সঙ্গে পাঠদান করা হত বলে মনে করা হচ্ছে।

মোগলমারি থেকে প্রাপ্ত সিলমোহর।

মোগলমারি থেকে প্রাপ্ত সিলমোহর। নিজস্ব চিত্র

অলখ মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২১ ০৬:১৬
Share: Save:

পশ্চিম মেদিনীপুরের মোগলমারিতে বৌদ্ধ শিক্ষায়তনের খোঁজ আগেই মিলেছিল। এ বার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক রজত সান্যালের গবেষণায় খোঁজ পাওয়া গেল, ওই জায়গায় একটি নয়, দু’টি বৌদ্ধ শিক্ষাকেন্দ্র ছিল। আগে অনুমান করা হয়েছিল, একটিই মহাবিহার ছিল। যার নাম শ্রীবন্দকমহাবিহার। রজত জানাচ্ছেন, নতুন যে শিলালিপি উদ্ধার হয়েছে, তা পরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে দু’টি শিক্ষালয়ের নাম মিলছে। একটি যজ্ঞপিণ্ডিক আর একটি মুগলায়িক। যজ্ঞপিণ্ডিক মহাবিহার। মুগলায়িক তার তুলনায় ছোট। বিহারিকা। রজতের মতে, পশ্চিমবঙ্গে মহাবিহার ও বিহার এর আগে পাওয়া গেলেও, তুলনায় ছোট বিহারিকার সন্ধান এই প্রথম মিলল।

যে গোলাকার প্রত্নখণ্ডগুলি থেকে এই দুই মহাবিহার ও বিহারিকার সন্ধান মিলেছে, সেগুলি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পুরাতত্ত্ব ও সংগ্রহালয়ের অধিকারে তৎকালীন উপ অধীক্ষক প্রয়াত অমল রায়ের নেতৃত্বে উৎখননের ফলে আবিষ্কৃত হয়েছিল। এগুলিতে যে অক্ষরগুলি পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলি পঞ্চম শতকের পূর্ব ভারতীয় ব্রাহ্মী লিপি ও সপ্তম শতকের পূর্ণতা প্রাপ্ত সিদ্ধমাত্রিকা লিপির মধ্যবর্তী সময়ের।

ষষ্ঠ শতকেই পাশাপাশি এই দু’টি মহাবিহার ও বিহারিকায় একই সঙ্গে পাঠদান করা হত বলে মনে করা হচ্ছে। হিউয়েন সাং বা জু়য়ান জ়াং প্রাচীন তাম্রলিপ্ত বন্দরের কাছে বেশ কিছু বৌদ্ধ শিক্ষাকেন্দ্রের অস্তিত্বের কথা বলেছিলেন। তবে তিনি তার মধ্যে কোনও একটিরও আলাদা করে নাম করেননি। যজ্ঞপিণ্ডিক ও মুগলায়িক সেই কেন্দ্রগুলিরই অন্যতম বলে বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন। আগের উৎখনন থেকে জানা গিয়েছে, শুধু ছাত্র ও শিক্ষকেরাই নন, এই শিক্ষায়তনগুলিতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল বণিক ও শিল্পী সম্প্রদায়ের। অত্যন্ত উৎকৃষ্ট শিল্পকলার পরিচয় এখানে স্টাকো ও অলঙ্কৃত ইটের তৈরি স্থাপত্যে পাওয়া গিয়েছে।

বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, যজ্ঞপিণ্ডিক নামটি থেকে অনুমান করা যাচ্ছে, এই পাঠকেন্দ্রটি মহাযান বৌদ্ধ মতাবলম্বীদের প্রাধান্য ছিল। সেখানে পাঠদান ছাড়াও নানা আচার পালন করা হত। অনুমান, সেই আচারে যোগ দিতেন শিক্ষালয়ের আবাসিকরা ছাড়াও, বাইরের মানুষও। সে কারণেই বিশাল এলাকা জুড়ে চমৎকার স্থাপত্যে ঘেরা এই মহাবিহারটি ষষ্ঠ শতকে বিশেষ মর্যাদা পেত বলে ধারণা পুরাতত্ত্ববিদদের। বিহারিকা মুগলায়িক নামটির সঙ্গে মোগলমারি নামের কিছুটা সামঞ্জস্য রয়েছে। কিন্তু মুগলায়িক থেকেই মোগলমারি নাম হয়েছে কি না, তা গবেষণা সাপেক্ষ।

রজত বলছেন, ‘‘পাশাপাশি এই দু’টি শিক্ষালয়ের উপস্থিতি থেকে বৌদ্ধ ধর্মীয় সংগঠনের অভ্যন্তরীণ স্বাতন্ত্র্য খুব ভাল বোঝা যাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta University Educational Institutes Buddhism
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE