দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সম্প্রচার যত বেশি সম্ভব মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, প্রতিটি ব্লক এবং পুরসভা এলাকায় সেই বন্দোবস্তের জন্য ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে নবান্নের সর্বোচ্চ মহল। এ জন্য পৃথক খরচও দেওয়া হবে জেলা প্রশাসনগুলিকে। ২০২৬ সালে বিধানসভা ভোটের আগে এই জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন ঘিরে প্রশাসনের তৎপরতাকে অর্থবহ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের একাংশ।
২৯ এপ্রিল যজ্ঞ হবে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে। ৩০ এপ্রিল ‘প্রাণ প্রতিষ্ঠা’ এবং উদ্বোধন হবে মন্দিরের। প্রশাসনিক সূত্রের তরফে জানানো হচ্ছে, তার আগে ওই দু’দিনের কর্মসূচির খবর আগে থেকে সাধারণ মানুষের কাছে কী ভাবে পৌঁছে দেওয়া যায়, সে ব্যাপারে পরিকল্পনা করতে হবে জেলাশাসকদের। শীর্ষমহলের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে— হোর্ডিংয়ের মাধ্যমে গোটা অনুষ্ঠানের প্রচার করতে হবে এলাকায় এলাকায়। ‘পাবলিক ডিজিটাল ডিসপ্লে’ বা এলসিডি স্ক্রিনের ব্যবহারও রাখতে হবে সেই প্রচারে। স্থানীয় কেবল চ্যানেলের মাধ্যমেও চলবে
সেই প্রচার।
মূল কর্মসূচির দিনগুলিতে প্রতিটি ব্লক, পুরসভার নির্দিষ্ট এলাকায় ‘পাবলিক ডিজিটাল’ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থাও করতে হবে জেলা প্রশাসনগুলিকে। দিঘার মন্দির থেকে কর্মসূচির সরাসরি সম্প্রচারের ‘ফিড’ পাঠানো হবে জেলাগুলিতে। তা ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলিতেও সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা হবে। প্রশাসনিক সূত্র জানাচ্ছে, ব্লক-পুরসভা এলাকার প্রচারে সেই সব জায়গা বাছতে হবে, যেখানে মানুষের
সমাগম বেশি।
পুরীর মন্দিরের প্রধান রাজেশ দয়িতাপতি এখন দিঘায় রয়েছেন। তাঁর নির্দেশেই হোম-যজ্ঞের প্রস্তুতি চলছে। বুধবার থেকেই মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে ‘ডিরেক্টরেট অব সিকিয়োরিটিজ়’। মহাকুম্ভের মতো দিঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন নিয়ে উন্মাদনা তৈরি করা যে হবে না, তা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উন্মাদনা তৈরির কারণেই মহাকুম্ভে দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানি হয়েছিল বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। ফলে ‘নিয়ন্ত্রিত’ ভাবেই সেই অনুষ্ঠান পালন করতে চাইছে নবান্ন।
আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, জগন্নাথ মন্দিরের কারণে পর্যটন স্থল হিসেবে দিঘার আকর্ষণ যে আরও অনেকটা বাড়বে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। সেই মন্দিরের গঠনশৈলীও চোখ ধাঁধানো। ফলে সরকারি উদ্যোগে এমন অনুষ্ঠানের সার্বিক প্রচার এবং দূর থেকে হলেও তার সঙ্গে বেশিরভাগ মানুষকে জুড়তে চাইবে নবান্ন। ঠিক যেমন ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সাক্ষী ছিলেন দেশের অগণিত মানুষ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)