Advertisement
E-Paper

তুঙ্গে বিজেপি বনাম অনুপম লড়াই, ঝাঁজ বৃদ্ধি হাজরার, খুব তাড়াতাড়ি ‘ফল’ দেখা যাবে, হুঁশিয়ারি সুকান্তের

অনুপমকে নিয়ে অস্বস্তি কাটাতে রাজ্য বিজেপি যখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে নালিশ জানানোর কথা ভাবছে, তখনই ফের আক্রমণ হাজরার। এ বার জবাবে পাল্টা আক্রমণ করলেন সুকান্ত মজুমদার।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:২৬
Inner clash between BJP leader Anupam Hazra and Sukanta Majumder

(বাঁ দিকে) অনুপম হাজরা। সুকান্ত মজুমদার (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

দলের অন্দরের লড়াইয়ে নাজেহাল বিজেপি। এ বার রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বাংলা থেকে দলের কেন্দ্রীয় নেতা অনুপম হাজরার একের পর এক মন্তব্য ঘিরে অস্বস্তি বেড়েই চলেছে। মঙ্গলবারই অনুপমকে শান্তিনিকেতনে তৃণমূলের ধর্নামঞ্চের সামনে দেখা গিয়েছে। তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তাও বলেছেন তিনি। তার পর ফলক-বিতর্কে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে বেলাগাম আক্রমণ করেছেন। অনুপমের সাম্প্রতিক বিভিন্ন মন্তব্য নিয়ে রাজ্য বিজেপি প্রথমে চুপ থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানানোর সিদ্ধান্তই নিয়েছিল। কিন্তু সে আক্রমণ ব্যক্তিগত পর্যায়ে চলে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সম্পাদককে পাল্টা আক্রমণ করলেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, খুব তাড়াতাড়ি এর ফল দেখা যাবে। তবে কী ধরনের ‘ফল’ তা স্পষ্ট করেননি সুকান্ত। তবে কি অনুপমকে সতর্ক করার মতো পদক্ষেপ করতে পারে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব? জল্পনা গেরুয়া শিবিরে।

বুধবার প্রথমে রামপুরহাট এবং পরে খয়রাশোলে দু’টি বিজয়া সম্মিলনীতে যোগ দেওয়ার কর্মসূচি ছিল অনুপমের। তার মাঝেই তিনি ফেসবুক লাইভে রাজ্য নেতৃত্বকে তীব্র আক্রমণ করেন। অভিযোগ করেন, রাজ্য সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন)-এর মদতেই জেলা বিজেপিতে অরাজকতা চলছে। জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা লোক দিয়ে তাঁর প্রাণনাশের চেষ্টা করতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন অনুপম। সেই সঙ্গে জেলারই এক নেতা তাঁর ‘জাত’ উল্লেখ করে আক্রমণ করেছে, এমন অভিযোগ তুলে এর বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার কথা বলেন অনুপম। এ প্রসঙ্গে তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আমার জাত তুলে কথা বলা হয়েছে। আমি তফসিলি জাতির অন্তর্ভুক্ত। সেই মোতাবেক প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ করব।’’

তবে অনুপমের আক্রমণের মূল লক্ষ্য যে রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্ব, তা বার বার স্পষ্ট করেন তিনি। অনুপম বলেন, ‘‘দলের কোণঠাসা কর্মীদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করে চলেছেন তিনি। তবে যে কোনও কাজ করার ক্ষেত্রেই বাধা পাচ্ছেন তিনি। তাঁকে রাজ্য বিজেপির তরফে কোনও কর্মসূচিতে ডাকা হয় না। কখনও ডাকা হলেও এমন সময়ে জানানো হয় যাতে আমি সময়ে আসতে না পারি।’’ অনুপমের দাবি, রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বের কয়েক জনের অঙ্গুলিহেলনেই এই সব হচ্ছে।

ইতিমধ্যেই রাজ্য বিজেপি অনুপম সম্পর্কে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে নালিশ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে তার আগেই অনুপম বলেন, ‘‘আমি আগেও বলেছি। আবার সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডাকে সব জানাব।’’ সরাসরি আক্রমণ করেন সুকান্তকেও। তিনি বলেন, ‘‘উনি আগে বালুরঘাট সামলান। ক’দিন আগেই দেখলাম ২০ জন লোক নিয়ে ঘুরছেন। তার মধ্যে ১৮ জনই নিরাপত্তাকর্মী।’’

এই আক্রমণের জবাব দিয়েছেন সুকান্ত। বুধবার সল্টলেক দফতরে দলীয় বৈঠক সেরে বার হওয়ার সময়ে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘‘আমি যখন শুধুই সাংসদ ছিলাম তখন বালুরঘাটে স্কুটার নিয়ে আর কলকাতায় ট্রেনে বাসে ঘুরতাম। রাজ্য সভাপতি হয়েও দু’-এক দিন নিরাপত্তা নিইনি। আর এ রকম এক জন নেতা আছেন, যিনি তিন জন সিআইএসএফ পান, কিন্তু ভয় এমন যে, ছ’জন না হলে বাড়ি থেকে বার হন না।’’ অনুপমের সাম্প্রতিক মন্তব্য থেকে তৃণমূলের মঞ্চের সামনে যাওয়া নিয়েও মন্তব্য করেন সুকান্ত। তিনি বলেন, ‘‘অসংলগ্ন কথা বলছেন যিনি, তাঁকে ইগনোর করাই ভাল। কেউ ব্লক সভাপতি হোন বা কেন্দ্রীয় সম্পাদক, তার কথায় যদি বিজেপির ক্ষতি হয়ে তৃণমূলের হাত শক্ত হয়, তা হলে বুঝতে হবে ডাল মে কুছ কালা হ্যায়।’’ অনুপমের পুরনো দল তৃণমূলে ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘‘সবটা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জানেন। কয়েক দিনের মধ্যে আপনারা এর ফল দেখতে পাবেন।’’

প্রসঙ্গত, দুই নেতার মধ্যে এমন মন্তব্য যুদ্ধের মধ্যেই বীরভূম জেলার খয়রাশোলে বিজেপির দুই গোষ্ঠীর কর্মীদের সংঘর্ষ হয় বুধবার। জানা গিয়েছে বিবদমান গোষ্ঠীর নেতারা অনুপম এবং ধ্রুবের অনুগামী হিসাবেই পরিচিত।

BJP BJP Leader Anupam Hazra anupam hazra Sukanta Majumdar BJP Leader
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy