আদালতের নির্দেশে চাকরি হারানো শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জেলাভিত্তিক তালিকা তৈরির উদ্যোগ। ছবি: সারমিন বেগম।
এসএসসি-র ২০১৬ সালের শিক্ষক, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি নিয়োগের প্যানেল কলকাতা হাই কোর্ট পুরোপুরি বাতিল করে দেওয়ায় অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে স্কুলগুলিতে। এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করছে স্কুল শিক্ষা দফতরের একাংশ। তাই ২০১৬ সালের নিয়োগের প্রক্রিয়ায় চাকরি পাওয়া শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের কাজে যোগদানের যাবতীয় তথ্য জানার কাজ শুরু হল। শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, বিভিন্ন জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শকেরা (ডিআই) স্কুলের প্রধানশিক্ষকদের কাছে একটি বার্তা পাঠিয়েছেন। সেই বার্তায় বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের নিয়োগের প্রক্রিয়ায় যে সমস্ত শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী চাকরি পেয়েছেন তাঁদের যাবতীয় তথ্য জানাতে হবে। স্কুলশিক্ষকদের কাছে একটি গুগ্ল ফর্ম পাঠানো হয়েছে। সেই ফর্ম পূরণ করেই এই সংক্রান্ত তথ্য সংশ্লিষ্ট জেলার ডিআইদের জানাতে বলা হয়েছে।
যদিও শিক্ষা দফতরের এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, যে হেতু এসএসসি ইতিমধ্যে কলকাতা হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাই এখনই তাদের ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চাকরি পাওয়া শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের যোগদান সংক্রান্ত তথ্য প্রয়োজন হচ্ছে না। কিন্তু শিক্ষা দফতরের আরও একটি সূত্র জানাচ্ছে, আদালতের নির্দেশে কর্মহীন হয়ে যাওয়া শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের যাবতীয় তথ্য জেলার ডিআইরা সংগ্রহ করে রাখছেন। প্রয়োজনে এই সমস্ত তথ্য কাজে লাগানো হবে। আনুষ্ঠানিক ভাবে শিক্ষা দফতর থেকে নির্দেশ না দেওয়া হলেও, এই তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে ডিআইদের ভূমিকার পিছনে ‘মৌন’ সম্মতি রয়েছে দফতরের। যাতে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সেই সংক্রান্ত তথ্য শিক্ষা দফতরের প্রয়োজন হলে তা দ্রুত পাওয়া সম্ভব হয়। আপাতত এসএসসি-র সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার দিকেই নজর রাখছে শিক্ষা দফতর। তবে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনও বিবৃতি দিতে নারাজ দফতরের শীর্ষকর্তারা।
শিক্ষা দফতরের একটি অংশ জানাচ্ছে, যদি স্কুলগুলি থেকে শেষ পর্যন্ত শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের কর্মচ্যুত হতে হয়, সে ক্ষেত্রে পরিস্থিতি কী হতে পারে, তা জানতেই ডিআইরা স্কুলভিত্তিক এই তালিকা তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছেন। কারণ, একটি স্কুলের পঠনপাঠন থেকে শুরু করে পরিচালন পদ্ধতি একটি সূত্রে গাঁথা থাকে। এ ক্ষেত্রে যদি কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের চাকরি চলে যায়, সে ক্ষেত্রে স্কুল কর্তৃপক্ষ তথা জেলা শিক্ষা প্রশাসন কী ভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করবেন, তা-ও আগে থেকে স্থির করা সম্ভব হতে পারে। অন্য দিকে, এসএসসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার মঙ্গলবার বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত যা ঠিক আছে, তাতে বুধবারই আমরা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করব।’’ শীর্ষ আদালতের দরজায় কড়া নাড়ার কথা জানিয়েছেন নিজেদের যোগ্য বলে দাবি করা সদ্য চাকরিহারাদের একাংশও। সিদ্ধার্থ জানান, তাঁরা প্রায় পাঁচ হাজার জনের নিয়োগের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। বাকিদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ, তা স্পষ্ট নয় বলে তাঁর দাবি। সেই কারণেই সব নিয়োগ বাতিলের এই রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে যাচ্ছেন তাঁরা। এমন পরিস্থিতিতে যাবতীয় তথ্য হাতের কাছে রাখতে চাইছে শিক্ষা দফতর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy