Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
economy

Kaushik Basu: শিক্ষায় বিনিয়োগ আর্থিক বৃদ্ধির সহায়ক: কৌশিক

পুরুলিয়ার পাড়া ব্লকের বরণডাঙায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘নানৃতম’ আয়োজন করেছিল ভারতীয় অর্থব্যবস্থায় শিক্ষার গুরুত্ব বিষয়ে অধ্যাপক বসুর বক্তৃতার।

কৌশিক বসু।

কৌশিক বসু। নিজস্ব চিত্র।

অমিতাভ গুপ্ত
পাড়া শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২২ ০৫:৪৮
Share: Save:

টানা দু’বছর বন্ধ থাকার পরে স্কুল খুলল। তার পরও গরমের ছুটি বাড়ানো হল দু’বার। তবুও বেশির ভাগ অভিভাবকই যথেষ্ট ক্ষুব্ধ নন কেন?

বিশ্ব ব্যাঙ্কের ভূতপূর্ব মুখ্য অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু জানালেন, দুটো সম্ভাবনা থাকতে পারে। এক, শিক্ষার দীর্ঘমেয়াদি লাভ কতখানি, সে বিষয়ে অধিকাংশ মানুষেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। ফলে, স্কুল বন্ধ থাকায় ঠিক কতখানি ক্ষতি হচ্ছে, সেটা তাঁরা বোঝেন না। অথবা, দেশ বা রাজ্য এখন যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে, তাতে লেখাপড়া শিখে যে সন্তানের খুব লাভ হবে, বিশেষত দরিদ্রতর শ্রেণির অভিভাবকরা তা আর মনে করেন না।

পুরুলিয়ার পাড়া ব্লকের বরণডাঙায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘নানৃতম’ আয়োজন করেছিল ভারতীয় অর্থব্যবস্থায় শিক্ষার গুরুত্ব বিষয়ে অধ্যাপক বসুর বক্তৃতার। বিভিন্ন দেশের উদাহরণ দিয়ে তিনি বললেন, শিক্ষায় বিনিয়োগ দেশের আর্থিক বৃদ্ধির সহায়ক হতে পারে। শ্রোতাদের মধ্যে থেকে প্রশ্ন উঠল, তা হলে ভারতে শিক্ষাখাতে ব্যয় বাড়ে না কেন? জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষাখাতে খরচ করার প্রতিশ্রুতি অপূর্ণই থেকে যায় কেন? মুচকি হেসে অধ্যাপক বসুর উত্তর, দেশের নাগরিকরা অশিক্ষিত থাকলে রাজনীতিকদের সুবিধা বলেই হয়তো!

অধ্যাপক বসুর অন্য বক্তৃতার সঙ্গে এই সভার ফারাক ছিল। এখানে শ্রোতাদের অর্ধেকই ওই সংস্থার স্কুলের নবম-দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রী। সন্ধের বক্তৃতাসভার আগেই অবশ্য কৌশিকবাবুর সঙ্গে দেখা হয়েছে তাদের। দুপুরে তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে বসেছিলেন ভারতের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা। ভারত কী ভাবে উন্নত অর্থব্যবস্থা হয়ে উঠতে পারে থেকে বাবা-মার বিপুল প্রত্যাশা সামলাব কী করে, সব রকম প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন তিনি। লকডাউনের দু’বছর অনলাইন ক্লাসে তারা যা শিখেছে, তারই প্রদর্শনী হয়েছে স্কুলে। অঙ্কের ধাঁধা থেকে বিজ্ঞানের মডেল। নাটক থেকে খেলা। নানান ধরনে নিজেদের ক্লাসের পড়া সাজিয়েছিল ছাত্রছাত্রীরা।

সরকারি স্কুলগুলো কেন ছাত্রছাত্রীশূন্য হচ্ছে? সব স্কুলে এমন হয় না কেন? অধ্যাপক বসু মনে করিয়ে দিলেন, ভারতের সরকারি স্কুলে শিক্ষকদের অনুপস্থিতি গভীর চিন্তার বিষয়। কী ভাবে সমাধান সম্ভব? অধ্যাপক বসুর মতে, শাস্তি দিয়ে নয়, শিক্ষকেরা যদি নিজেদের কাজ সম্বন্ধে সত্যিই গর্ববোধ করতে পারেন, তা হলেই ছবিটা পাল্টাতে পারে। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়, যে শিক্ষাক্ষেত্রের প্রতিটি ধাপে দুর্নীতি এত প্রবল ও প্রকট, সেখানে কি শিক্ষকরা সত্যিই গর্বিত হতে পারেন নিজেদের কাজ নিয়ে?

অতিমারি এসে গোটা দুনিয়ায় কাজের চরিত্র এমন ভাবে পাল্টে দিয়েছে যে, শিক্ষকরা ধরন পাল্টাতে বাধ্য, বললেন অধ্যাপক বসু। জানালেন, ভবিষ্যতের অর্থব্যবস্থায় স্বাস্থ্য ও শিক্ষার গুরুত্ব বাড়বে। ভারতকে তাল মেলাতে হবে তার সঙ্গে।

আর্থিক অসাম্যের প্রভাব শিক্ষায় পড়তে দেওয়া চলবে না, জোর দিয়ে বললেন কৌশিকবাবু। পরিবারের আর্থিক অবস্থা যার যেমনই হোক, শিক্ষায় সব শিশুর সমান অধিকার স্বীকার করতেই হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

economy Education kaushik basu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE