Advertisement
১১ মে ২০২৪

নবাবের এস্টেটে হোটেল কি আইপিএস অফিসার সৈয়দ মির্জার!

মুর্শিদাবাদ এস্টেট ম্যানেজার শুভদীপ গোস্বামী বলেন, ‘‘এস্টেটের জায়গায় ওই হোটেল তৈরি সম্পূর্ণ বেআইনি। অনুমতি নেওয়া হয়নি।

লালবাগে সেই নির্মীয়মাণ হোটেল। নিজস্ব চিত্র

লালবাগে সেই নির্মীয়মাণ হোটেল। নিজস্ব চিত্র

মৃন্ময় সরকার
লালবাগ শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:১০
Share: Save:

নবাবের এস্টেটের জমিতে হোটেল গড়ছিলেন তিনি। বছর খানেক ধরে ধীরে ধীরে তিনতলা সেই ‘প্রাসাদ’ গড়ে উঠলেও তা নজরে আসেনি মুর্শিদাবাদ এস্টেট কর্তৃপক্ষের। মাথা ঘামায়নি স্থানীয় পুরসভাও। শুক্রবার সেই ‘অবৈধ’ নির্মাণ নিয়ে আচমকা নড়েচড়ে বসলেন এস্টেট কর্তৃপক্ষ। তড়িঘড়ি নোটিস ধরানো হল, শিখা সেনকে। ঘটনাচক্রে যিনি নারদ কাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে ধৃত আইপিএস অফিসার সৈয়দ মির্জার শাশুড়ি।

এ দিন মুর্শিদাবাদ এস্টেট ম্যানেজার শুভদীপ গোস্বামী বলেন, ‘‘এস্টেটের জায়গায় ওই হোটেল তৈরি সম্পূর্ণ বেআইনি। অনুমতি নেওয়া হয়নি। বস্তুত, এস্টেটের জায়গায় অনুমতি ছাড়া কোনও নির্মাণই বৈধ নয়। ওই হোটেল কর্তৃপক্ষকে নথিপত্র নিয়ে দেখা করতে বলা হয়েছে।’’

প্রায় একই সুরে মুর্শিদাবাদের পুরপ্রধান বিপ্লব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবেই ওই নির্মাণ হচ্ছিল। এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা ধীরেন্দ্রনাথ দে পুরসভায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুরসভা তদন্ত করে ওই নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেবে।’’

দেড় বছর ধরে ওই নির্মাণ হচ্ছিল বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। এলাকার পুরনো বাসিন্দা ধীরেন্দ্রনাথ দে বলেন, ‘‘আমরা আপত্তি তোলায় শুনতে হয়েছে পাল্টা হুমকি। সব কাগজপত্র নিয়ে পুরসভার কাছে নালিশ জানিয়েছিলাম।’’ দেড় বছরে পুরসভা কিংবা মুর্শিদাবাদ এস্টেট কর্তৃপক্ষের তা নজরে কেন পড়ল না, তা নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এক জনের কথায়, ‘‘পুরসভার কাছে বারবার নালিশ জানিয়ে শুনতে হয়েছে ‘খোঁজ নিয়ে দেখা হবে!’ খোঁজ নিতে কেউ আসেনি। অথচ, ওই হোটেল বকলমে যাঁর, সেই পুলিশ কর্তা গ্রেফতার হতে ঘুম ভাঙল সকলের!’’

নারদ কাণ্ডে অভিযুক্ত হওয়া এবং আড়াই বছর আগে সাসপেন্ড হওয়ার পরেও তাঁর যে প্রচ্ছন্ন দাপট ছিল, বেআইনি ওই হোটেল নির্মাণ থেকেই তা স্পষ্ট। বৃহস্পতিবার সৈয়দ মির্জা গ্রেফতারের পরেই পথে নামেন কর্তৃপক্ষ। এ দিন শুভদীপবাবু জানান, ‘কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’ এত দিন কেন হয়নি? স্পষ্ট কোনও উত্তর মেলেনি এস্টেট ম্যানেজারের কাছে।

তিনি জানান, ১৯৯৯ সালে এস্টেটের কিছু জমির পাট্টা দেওয়া হয়েছিল স্থানীয় কয়েক জনকে। তবে সেই তালিকায় শিখা সেনের নাম নেই। শিখা অবশ্য বলছেন, ‘‘হোটেল নয়, আমরা রেস্তরাঁ করছি। আমাদের সমস্ত বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। পুরসভায় গিয়ে তার প্রমাণ দেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CBI SMH Mirza
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE