বাঁধ দেখতে এলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: নির্মল বসু।
মেছোভেড়িতে জল ঢোকাতে প্রায়ই নদীবাঁধ কাটার অভিযোগ ওটে বসিরহাট মহকুমা বিভিন্ন প্রান্তে। এ বার সে দিকে কড়া নজর রাখবে প্রশাসন। বর্ষার আগে বসিরহাটের নদীবাঁধগুলির অবস্থা সরেজমিনে এসে সে কথাই জানিয়ে গেলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার লঞ্চে করে এবং পায়ে হেঁটে বসিরহাটের নানা এলাকায় যান তিনি। সন্দেশখালির ধামাখালিতে আসেন মন্ত্রী। সেখান থেকে সেচ কর্তাদের নিয়ে লঞ্চে করে রায়মঙ্গল, বড়কলাগাছি, বেতনী, রামপুর নদী হয়ে আতাপুর, দ্বারিকজঙ্গল, সন্দেশখালি, ঘোষপাড়া, কালীনগর ঘুরে ন্যাজাটে এসে নামেন। গ্রামবাসীদের প্রশ্ন করেন, ‘‘বাঁধ কেন ভাঙছে?’’ উত্তরে আতাপুর গ্রামের রতন বৈদ্য, ভবেন মণ্ডলেরা বলেন, ‘‘নদীবাঁধের পাশে থাকা মেছোভেড়ির কারণেই বাঁধ রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার মেছোভেড়ি তুলে দিলেও এখানকার মানুষ না খেয়ে মরবে!’’
সব শুনে মন্ত্রী আশ্বাস দেন, মেছোভেড়ি তুলে দেওয়া হবে না। তবে কী ভাবে মেছোভেড়ি এবং বাঁধ দু’দিকই রক্ষা করা যায়, সে জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মহকুমাশাসকের দফতরে বৈঠক শেষে মন্ত্রী ইছামতী পরিদর্শনে যান। নদীর ধারে দাঁড়িয়ে রাজীববাবু বলেন, ‘‘মৎস্যজীবীদের ক্ষতি হোক, সেটা আমরা কখনওই চাই না। কিন্তু তাই বলে যেখানে সেখানে নদী বাঁধ কেটে মেছোভেড়িতে জল ঢোকানো যাবে না। বাঁধ কেটে মেছোভেড়ি করার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। এমনটা হলে বৃহত্তর স্বার্থে বিষয়টি কড়া হাতে মোকাবিলা করার জন্য প্রশাসনকে বলা হয়েছে।’’ তিনি জানান, ইছামতী-সহ যে সব নদী শ্যাওলায় ভর্তি সেগুলি সাফাই করা হবে। সন্দেশখালি এলাকায় ২৫টি জায়গায় বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। আরও ১০টি বাঁধে কাজ শুরু হবে। সব জায়গাতেই ৩০ জুনের মধ্যে বাঁধ মেরামতির কাজ শেষ করতে হবে। একই সঙ্গে তাঁর সতর্কতা, ‘‘শুধু খাল সাফাই করে কিছু হবে না। দরকার মানুষের সচেতনতা।’’
গত বর্ষায় অতি বৃষ্টির কারণে বন্যা হয়েছিল। বসিরবাটের নদী বাঁধেও ফাটল দেখা গিয়েছিল। দিন কয়েক আগেও সন্দেশখালির একটি নদী বাঁধেও ফাটল দেখা যায়। প্লাবিত হয় গ্রাম। এই সব উদাহরণগুলি যাতে আর ফিরে না আসে, সে জন্যই এই সফর বলে জানান সেচমন্ত্রী।
এ দিন মহকুমাশাসকের দফতরে মন্ত্রীর বৈঠকে সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা, জেলাশাসক অন্তরা আচার্য, মহকুমাশাসক নীতেশ ঢালি, বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস, নুরুল ইসলাম-সহ বেশ কয়েকজন বিধায়ক এবং সেচ দফতরের কর্তারা হাজির ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy