প্রতিবাদ তো বটেই, আইনি পদক্ষেপের কথাও ভাবছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং প্রাক্তনীরা।
ঘটনার সূত্রপাত একটি চিঠি ঘিরে। অভিযোগ, পুণে পুলিশের তরফ থেকে দু’টি চিঠি প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। পুলিশের দাবি, দু’টি চিঠিই সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া কিছু মাওবাদী নেতা-কর্মীর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে। যার একটিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খুনের পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে। অন্যটিতে বিজেপিকে রুখতে বিভিন্ন আন্দোলনের কর্মসূচি। দ্বিতীয় চিঠিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই গবেষক, একজন ছাত্র এবং এক প্রাক্তনীর নাম উল্লেখ রয়েছে। দেওয়া রয়েছে তাঁদের ফোন নম্বরও। বলা হয়েছে, তাঁরা ‘ইউএসডিএফ’ নামক একটি নকশালপন্থী সংগঠনের সদস্য।
অভিযোগ, বিষয়টি সামনে আসা ইস্তক উটকো ফোন আসতে শুরু করে ওই চার ছাত্রছাত্রীর কাছে। ‘‘ফোন ধরতে ধরতে বিরক্ত হয়ে গিয়েছি। ক্রমাগত ফোন করে যা না তাই বলা হচ্ছে,’’ জানিয়েছেন, গবেষক সুশীল মান্ডি। তাঁর আরও দাবি, চিঠিটি দেখেই বোঝা যাচ্ছে গোলমাল আছে। সুশীলের বক্তব্য, রোহিত ভেমুলার ঘটনার পর থেকে দলিতদের নিয়ে বহু আন্দোলন সংগঠিত করেছেন তিনি। সে কারণেই তাঁকে নিশানা করা হচ্ছে।
চিঠিতে উল্লিখিত আর এক ছাত্রী দেবযানী এখন ভিনরাজ্যে থাকেন। তাঁর দাবি, ‘‘৬-৭ বছর আগে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে এসেছি। কোথা থেকে আমার নাম এল, বুঝতে পারছি না।’’ দেবযানী জানিয়েছেন, অচেনা ব্যক্তিরা ফোন করে তাঁর নাম মিলিয়ে নিচ্ছেন, জেনে নিচ্ছেন ঠিকানা।
এক সময়ের ইউএসডিএফের সদস্য এবং এখন ‘র্যাডিকাল’ নামক একটি রাজনৈতিক মঞ্চের আহ্বায়ক অভিষেক মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘চিঠিগুলি যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ছড়ানো হয়েছে, তা স্পষ্ট। মাওবাদীরা কখনওই কোনও চিঠিতে কমরেডদের নাম উল্লেখ করেন না। কোড ব্যবহার করা হয়।’’ বস্তুত, মাওবাদী সন্দেহে দীর্ঘদিন জেলে ছিলেন অভিষেক।
ঘটনার প্রতিবাদ করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা নীলাঞ্জনা গুপ্ত। তাঁর বক্তব্য, ইদানীং প্রতিবাদ করলেই ‘মাওবাদী’ তকমা লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাদবপুর, জেএনইউ’কে বারবার নিশানা করা হচ্ছে। অভিষেক জানিয়েছেন, আজ, সোমবার ঘটনার প্রতিবাদে একটি মিছিলের আয়োজন হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী এবং উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা ফোন ধরেননি, মেসেজেরও জবাব দেননি।