প্রতীকী ছবি।
দু’চার বার চায়ে চুমুক দেন না, তেমন বঙ্গবাসীর দেখা মেলা ভার। লৌহ কপাটের অন্দরে ছবি কী করে তা থেকে আলাদা হবে! আর করোনা আবহ স্বাভাবিক জীবনে নানা সংযোগ-বিয়োজন ঘটালেও চায়ের সঙ্গে সম্পর্ক একই রয়েছে জনতার। তবে চা পাতা বা গুঁড়োর সঙ্গে চিনি বা দুধেই উপাদান শেষ হচ্ছে না তাঁদের। বরং সেই উপাদানের সঙ্গী হচ্ছে আদা, হলুদ, গোলমরিচ, দারচিনির মতো সামগ্রীও। তা থেকে কেনই বা বঞ্চিত হবেন কারার অন্দরে থাকা মানুষজন! তাই আদা আর হলুদ সহযোগে চায়ের আস্বাদ উপভোগ করছেন তাঁরা। ঘটনাস্থল বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার।
রাজ্যের কয়েকটি সংশোধনাগারে নোভেল করোনাভাইরাসের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। কোথাও তাতে সংক্রমিত হয়েছেন সংশোধনাগারের কর্মী-আধিকারিক, আবার কোথাও বন্দিরা। সেই পরিস্থিতিতে এখনও পর্যন্ত বহরমপুর সংশোধনাগারে ভাইরাস প্রভাব দেখাতে পারেনি। তবে সেখানের অনেক বন্দিই জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছিলেন। অথচ তাঁদের ঠিকঠাক চিকিৎসার ব্যবস্থা হচ্ছিল না বলে অভিযোগ করেছিলেন কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী। সেই দাবি খারিজ করে কারা দফতর জানিয়েছিল, চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়মিত ভাবেই করা হয়।
ঘটনাচক্রে, অধীরবাবুর চিঠির কয়েক দিন পর থেকে হলুদ-আদা সংমিশ্রিত চা পেতে শুরু করেছেন বহরমপুর সংশোধনাগারে দিন কাটানো মানুষেরা। যদিও ওই চিঠির সঙ্গে বন্দিদের এই বাড়তি পরিষেবার কোনও সম্পর্ক খোঁজ অর্থহীন।
সাধারণত, সকাল এবং বিকেলে দুধ চা কিংবা লিকার চা পেয়ে থাকেন বন্দিরা। তা এখনও পাচ্ছেন তাঁরা। তার সঙ্গেই যুক্ত হয়েছে আরও দু’বার। আদা-হলুদ সহযোগে দুপুর আর সন্ধ্যায় চা পাচ্ছেন প্রায় আড়াই হাজার বন্দি। তাতে অবশ্য কিছুটা খাটনিও বেড়েছে দায়িত্বপ্রাপ্তদের। কারণ, অতিরিক্ত দু’শো লিটার চা করতে হচ্ছে তাঁদের। তবে আদা-হলুদ মিশ্রিত চায়ের দাবিও প্রচুর বলে সূত্রের খবর। এমনকি, অনেকে বরাদ্দ চা না-খেলেও নতুন চায়ের আস্বাদ নিতে ছাড়ছেন না কেউই।
আদা বা হলুদের স্বাভাবিক গুণ রয়েছে। যা রোগ প্রতিরোধে অনেকটা সহায়তা করে। সে কারণে করোনা আবহে এই চায়ের ব্যবস্থা করেছেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। তার সঙ্গে দৈনিক বন্দিদের পাতে পড়ছে আধখানা পাতিলেবুও। রাজ্যের বিভিন্ন জেলে পাতিলেবু ১০ বছরের বেশি সময় ধরে পাচ্ছেন বন্দিরা। তবে চায়ের উপাদান হিসেবে আদা-হলুদের প্রচলন আপাতত বহরমপুরেই। এখন চায়ে গুঁড়ো হলুদ দেওয়া হলেও কাঁচা হলুদ বন্দোবস্তের চেষ্টা করছেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। যদিও বিপুল পরিমাণে হলুদ জোগাড় করা যথেষ্টই মুশকিল, তা মানছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy